২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৭১ ভুয়ো এনকাউন্টারে তদন্ত, সুপ্রিম-নির্দেশে বিপাকে হিমন্ত

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 268

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  বিজেপির অন্যতম পোস্টার বয় হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তার রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে স্বৈরাচারী আচরণ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। পুলিশকে অপরাধীদের লক্ষ্য করে ঢালাও গুলি চালানোর লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছেন তিনি। ফলে মাত্র ১৫ মাসে ১৭১টি এনকাউন্টার!

অসম পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’ মামলায় এবার অসম মানবাধিকার কমিশনকে সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটিকে গুরুতর বিবেচনা করে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ অসম মানবাধিকার কমিশনকে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দিয়েছে।

আরও পড়ুন: বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে: মনরেগা নিয়ে বড় নির্দেশ শীর্ষ আদালতের, স্বস্তি রাজ্যের

পুলিশকে সাধারণত অপরাধীর পা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে বলা হয়। কিন্তু হিমন্ত বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য সরাসরি বুকে গুলি চালানোর অলিখিত নির্দেশ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যটিতে চলছে নৈরাজ্য। তাই শীর্ষকোর্টের এমন নির্দেশ আশার আলো বইকি।

আরও পড়ুন: উত্তরসূরির নাম প্রস্তাব সিজেআইয়ের, দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত

আদালত জানিয়েছে, কিছু ঘটনা ভুয়ো এনকাউন্টার হতে পারে, এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। এবং এটা প্রমাণিত হলে সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে সুস্থ জীবনযাপন অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। তবে এটিও সমানভাবে সম্ভব যে একটি স্বাধীন তদন্তের পর কিছু ঘটনা আইনত ন্যায্য এবং প্রয়োজনীয় বলে প্রমাণিত হতে পারে।

আরও পড়ুন: উমর খালিদ, শরজিল ইমাম ও অন্যান্যদের জামিনের শুনানি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, প্রতিটি মামলা স্বাধীনভাবে দেখা উচিত এবং এটা নিশ্চিত করা উচিত যে, কোনও নিরাপরাধ ব্যক্তি নিহত হলে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। শীর্ষ আদালত কমিশনের জন্য একাধিক নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, অভিযুক্ত ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে অবশ্যই বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য ন্যায্য সুযোগ দিতে হবে।

পাশাপাশি, সুরক্ষার স্বার্থে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখতে হবে। আদালতে অসম সরকারের তরফ থেকে উপস্থিত থাকা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেন, তদন্তের ফলে নিরাপত্তা কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। কিন্তু আদালত এই যুক্তিকে গুরুত্ব দেয়নি। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কমিশন যদি আরও তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করে, তাহলে তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করতে পারে।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে গুয়াহাটি হাইকোর্ট ওই জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন আরিফ মুহাম্মদ ইয়াসিন জোয়াদ্দার নামের এক আইনজীবী। তার অভিযোগ ছিল, ২০২১ সালের মে মাসে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরের ১৫ মাসে যে ১৭১টি এনকাউন্টার হয়, তার মধ্যে ৮০টির বেশি ভুয়ো এনকাউন্টার। এর ফলে ২৮ জন নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয়েছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১৭১ ভুয়ো এনকাউন্টারে তদন্ত, সুপ্রিম-নির্দেশে বিপাকে হিমন্ত

আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  বিজেপির অন্যতম পোস্টার বয় হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তার রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে স্বৈরাচারী আচরণ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। পুলিশকে অপরাধীদের লক্ষ্য করে ঢালাও গুলি চালানোর লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছেন তিনি। ফলে মাত্র ১৫ মাসে ১৭১টি এনকাউন্টার!

অসম পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’ মামলায় এবার অসম মানবাধিকার কমিশনকে সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটিকে গুরুতর বিবেচনা করে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ অসম মানবাধিকার কমিশনকে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দিয়েছে।

আরও পড়ুন: বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে: মনরেগা নিয়ে বড় নির্দেশ শীর্ষ আদালতের, স্বস্তি রাজ্যের

পুলিশকে সাধারণত অপরাধীর পা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে বলা হয়। কিন্তু হিমন্ত বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য সরাসরি বুকে গুলি চালানোর অলিখিত নির্দেশ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যটিতে চলছে নৈরাজ্য। তাই শীর্ষকোর্টের এমন নির্দেশ আশার আলো বইকি।

আরও পড়ুন: উত্তরসূরির নাম প্রস্তাব সিজেআইয়ের, দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত

আদালত জানিয়েছে, কিছু ঘটনা ভুয়ো এনকাউন্টার হতে পারে, এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। এবং এটা প্রমাণিত হলে সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে সুস্থ জীবনযাপন অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। তবে এটিও সমানভাবে সম্ভব যে একটি স্বাধীন তদন্তের পর কিছু ঘটনা আইনত ন্যায্য এবং প্রয়োজনীয় বলে প্রমাণিত হতে পারে।

আরও পড়ুন: উমর খালিদ, শরজিল ইমাম ও অন্যান্যদের জামিনের শুনানি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, প্রতিটি মামলা স্বাধীনভাবে দেখা উচিত এবং এটা নিশ্চিত করা উচিত যে, কোনও নিরাপরাধ ব্যক্তি নিহত হলে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। শীর্ষ আদালত কমিশনের জন্য একাধিক নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, অভিযুক্ত ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে অবশ্যই বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য ন্যায্য সুযোগ দিতে হবে।

পাশাপাশি, সুরক্ষার স্বার্থে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখতে হবে। আদালতে অসম সরকারের তরফ থেকে উপস্থিত থাকা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেন, তদন্তের ফলে নিরাপত্তা কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। কিন্তু আদালত এই যুক্তিকে গুরুত্ব দেয়নি। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কমিশন যদি আরও তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করে, তাহলে তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করতে পারে।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে গুয়াহাটি হাইকোর্ট ওই জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন আরিফ মুহাম্মদ ইয়াসিন জোয়াদ্দার নামের এক আইনজীবী। তার অভিযোগ ছিল, ২০২১ সালের মে মাসে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরের ১৫ মাসে যে ১৭১টি এনকাউন্টার হয়, তার মধ্যে ৮০টির বেশি ভুয়ো এনকাউন্টার। এর ফলে ২৮ জন নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয়েছেন।