২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানে ৩টি হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিল ইসরাইল, নীরব বিশ্ব বিবেক

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 12

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: যখন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টারে পড়ে, তখন বিশ্ব মিডিয়ায় এক প্রকার আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সেটি ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে চিহ্নিত হয়, নৈতিকতায় আঘাত হানে বলেও দাবি ওঠে। অথচ একই সময়ে, মাত্র এক সপ্তাহে ইসরাইল ইরানের রাজধানী তেহরানে তিনটি হাসপাতাল টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; তবু কোথাও নেই সেই একই মাত্রার প্রতিবাদ, নেই কোনও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, নেই রাষ্ট্রসংঘের জরুরি অধিবেশন।

শুক্রবার ভোর ৪:৪৫-এ ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তেহরানের আর একটি হাসপাতালে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসেইন কেরমানপুর বলেন, ‘এই নিয়ে গত সাত দিনের মধ্যে তেহরানের তিনটি হাসপাতাল ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হল। সেই সঙ্গে ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস সেন্টারও ইসরাইলি বাহিনী ধ্বংস করেছে। এটি শুধু হাসপাতাল নয়, মানবিক চেতনার ওপরও আঘাত। গত সাত দিনে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে দখলদার জায়নবাদী বাহিনী।’

তেহরান এবং গাজার সাধারণ মানুষ এই প্রশ্ন তুলছেন; কেন হাসপাতাল ধ্বংস হলে সেটি ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হয় শুধুমাত্র তখনই, যখন তা ইসরাইলে ঘটে? গাজায় হাসপাতাল ধ্বংস এখন আর খবরই হয় না। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, কূটনীতিক মহল, এমনকি বড় বড় মানবাধিকার সংস্থারও এক প্রকার নির্বিকার ভূমিকা লক্ষ করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ইসরাইল টানা দ্বিতীয়বার জাতিসংঘের “কালো তালিকায়”, গাজায় শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা সর্বোচ্চ

গোটা বিশ্বের সামনে এখন এক অস্বস্তিকর সত্য উঠে আসছে: যদি ইসরাইলের একটি হাসপাতাল আক্রান্ত হয়, সেটি হয় ‘সন্ত্রাস’; আর যদি ইসরাইল গাজা বা তেহরানে হাসপাতাল ধ্বংস করে, সেটি হয় ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ বা ‘কোল্যাটেরাল ড্যামেজ’।

আরও পড়ুন: শুক্রবার ইউরোপের তিন দেশের সঙ্গে ইরানের বৈঠক!

ইসরাইল দাবি করেছে, তারা শুধুই সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। তবে তেহরানে সরাসরি একটি হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়া কি সেই দাবির সঙ্গে খাপ খায়? ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, গত এক সপ্তাহের ইসরাইলি হামলায় ৬৩৯ জন ইরানি নিহত হয়েছেন এবং আরও ১,৩০০ জনের বেশি আহত। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বেসামরিক অবকাঠামো, যার মধ্যে হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স স্টেশন, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রও রয়েছে। এ দিকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পালটা হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং বহুজন আহত।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় আমেরিকা যোগ দিলে সমগ্র অঞ্চলে নরক নেমে আসবে : ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইরানে ৩টি হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিল ইসরাইল, নীরব বিশ্ব বিবেক

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: যখন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টারে পড়ে, তখন বিশ্ব মিডিয়ায় এক প্রকার আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সেটি ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে চিহ্নিত হয়, নৈতিকতায় আঘাত হানে বলেও দাবি ওঠে। অথচ একই সময়ে, মাত্র এক সপ্তাহে ইসরাইল ইরানের রাজধানী তেহরানে তিনটি হাসপাতাল টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; তবু কোথাও নেই সেই একই মাত্রার প্রতিবাদ, নেই কোনও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, নেই রাষ্ট্রসংঘের জরুরি অধিবেশন।

শুক্রবার ভোর ৪:৪৫-এ ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তেহরানের আর একটি হাসপাতালে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসেইন কেরমানপুর বলেন, ‘এই নিয়ে গত সাত দিনের মধ্যে তেহরানের তিনটি হাসপাতাল ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হল। সেই সঙ্গে ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস সেন্টারও ইসরাইলি বাহিনী ধ্বংস করেছে। এটি শুধু হাসপাতাল নয়, মানবিক চেতনার ওপরও আঘাত। গত সাত দিনে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে দখলদার জায়নবাদী বাহিনী।’

তেহরান এবং গাজার সাধারণ মানুষ এই প্রশ্ন তুলছেন; কেন হাসপাতাল ধ্বংস হলে সেটি ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হয় শুধুমাত্র তখনই, যখন তা ইসরাইলে ঘটে? গাজায় হাসপাতাল ধ্বংস এখন আর খবরই হয় না। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, কূটনীতিক মহল, এমনকি বড় বড় মানবাধিকার সংস্থারও এক প্রকার নির্বিকার ভূমিকা লক্ষ করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ইসরাইল টানা দ্বিতীয়বার জাতিসংঘের “কালো তালিকায়”, গাজায় শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা সর্বোচ্চ

গোটা বিশ্বের সামনে এখন এক অস্বস্তিকর সত্য উঠে আসছে: যদি ইসরাইলের একটি হাসপাতাল আক্রান্ত হয়, সেটি হয় ‘সন্ত্রাস’; আর যদি ইসরাইল গাজা বা তেহরানে হাসপাতাল ধ্বংস করে, সেটি হয় ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ বা ‘কোল্যাটেরাল ড্যামেজ’।

আরও পড়ুন: শুক্রবার ইউরোপের তিন দেশের সঙ্গে ইরানের বৈঠক!

ইসরাইল দাবি করেছে, তারা শুধুই সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। তবে তেহরানে সরাসরি একটি হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়া কি সেই দাবির সঙ্গে খাপ খায়? ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, গত এক সপ্তাহের ইসরাইলি হামলায় ৬৩৯ জন ইরানি নিহত হয়েছেন এবং আরও ১,৩০০ জনের বেশি আহত। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বেসামরিক অবকাঠামো, যার মধ্যে হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স স্টেশন, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রও রয়েছে। এ দিকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পালটা হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং বহুজন আহত।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় আমেরিকা যোগ দিলে সমগ্র অঞ্চলে নরক নেমে আসবে : ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী