পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারতের পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) সংগ্রহে ২০২৫ সালের জুনে এক উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসে দেশের মোট জিএসটি সংগ্রহ হয়েছে ১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা, যা গত বছরের জুন মাসের তুলনায় ৬.২ শতাংশ বেশি। এই বৃদ্ধি ভারতের আর্থিক উন্নয়ন ও রাজস্ব আদায়ের ধারাবাহিক ইতিবাচক প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
জিএসটি চালুর (২০১৭) পর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে, মোট ২২.০৮ লক্ষ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষ ২০২৩-২৪-এ সংগ্রহ হয়েছিল ২০.১৮ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে এক বছরের ব্যবধানে।
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৫ বছরের মধ্যে জিএসটি আদায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে যেখানে জিএসটি সংগ্রহ ছিল মাত্র ১১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা, সেখানে ২০২৪-২৫ এ তা পৌঁছে গেছে দ্বিগুণের কাছাকাছি।
যদিও ২০২৫ সালের জুনে ৬.২ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে, তা গত এপ্রিল ও মে মাসের চেয়ে কিছুটা কম। এপ্রিল মাসে দেশে জিএসটি আদায় হয়েছিল ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা এবং মে মাসে ২.০১ লক্ষ কোটি টাকা। তবে অর্থমন্ত্রকের মতে, এই তারতম্য স্বাভাবিক এবং বিভিন্ন উৎসব, আর্থিক বর্ষ ও বাণিজ্যিক চক্রের উপর নির্ভরশীল।
একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জিএসটি সংগ্রহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির নজির পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
নাগাল্যান্ড
-
সিকিম
-
ত্রিপুরা
-
লাক্ষাদ্বীপ
-
লাদাখ
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাজ্যগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যানে। এই ধরনের আঞ্চলিক উন্নয়ন ভারতের সামগ্রিক অর্থনীতির ভারসাম্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।
গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রাজ্য গুজরাটে ২০২৫ সালের জুন মাসে জিএসটি সংগ্রহ হয়েছে ৬১৫০ কোটি টাকা, যা গত বছরের জুন মাসের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জুনে এই পরিমাণ ছিল ৫৫৬২ কোটি টাকা। এই বৃদ্ধির পিছনে শিল্প ও উৎপাদন খাতের প্রসারকে কারণ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
ভারতের রাজস্ব সংগ্রহে জিএসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালের জুনে জিএসটি আদায়ের এই বৃদ্ধি কেবলমাত্র রাজস্ব নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রশাসনিক দক্ষতারও প্রতিফলন। আগামী দিনে জিএসটি সংগ্রহে আরও বৃদ্ধি প্রত্যাশিত, বিশেষ করে যেভাবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি পরিকাঠামো, বাণিজ্যিক পরিবেশ এবং প্রযুক্তিগত স্বচ্ছতাতে জোর দিচ্ছে।
এই প্রবণতা ধরে রাখতে পারলে ভারতের আর্থিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে এবং আগামী অর্থবর্ষে নতুন রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনাও থাকছে।