বেন গুরিয়ন থেকে রেড সি: ইসরাইলের উপর আক্রমণ বাড়াচ্ছে আনসারুল্লাহ বাহিনী

- আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 197
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইয়েমেনভিত্তিক হুতি বিদ্রোহীরা, যারা আনসারুল্লাহ বাহিনী নামে পরিচিত, ইসরাইলের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়িয়ে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তারা একের পর এক সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে, যার সর্বশেষ হল ইসরাইলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, হুতিদের সামরিক কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র ইয়েমেনে সীমাবদ্ধ নয়। এর আগেই লোহিত সাগরে, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ‘এটারনিটি সি’ নামের একটি গ্রিস মালিকানাধীন পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালায় হুতিরা। হামলার ফলে জাহাজটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ইয়েমেনের হোদেইদাহ উপকূলে ডুবে যায়। হুতির দাবি, জাহাজটি ইসরাইলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এবং তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই হামলা চালিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌ নিরাপত্তা অপারেশন ‘অ্যাসপাইডস’ জানিয়েছে, জাহাজটিতে ২৫ জন ছিলেন, যার মধ্যে ২২ জন ক্র ও ৩ জন নিরাপত্তা কর্মী। হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজন ফিলিপাইন ও একজন ভারতীয় নাগরিক। বাকি ১৫ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস জানিয়েছে, হামলায় জাহাজটি তউল্লেখযোগ্য ক্ষতিদ হয়েছে। নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অ্যামব্রে জানিয়েছে, জাহাজটি হুতিদের নিয়ন্ত্রণাধীন হোদেইদাহ উপকূলে ডুবে গেছে।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে হুতিরা ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা ঘোষণা করেছে, যতক্ষণ গাজায় আগ্রাসন চলবে, ততক্ষণ ইসরাইলি সংশ্লিষ্ট জাহাজ ও স্থাপনা তাদের বৈধ লক্ষ্য। এই পরিস্থিতির মধ্যে ইয়েমেনে হুতিদের একাধিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আনসারুল্লাহ বাহিনী নিজস্বভাবে তৈরি এক আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে, যা ইসরাইলি বিমান ও তাদের মিত্রদের জন্য বড় ধাক্কা।
সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানরা ইয়েমেনের আকাশসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করলে তারা এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তীব্র বাধার মুখোমুখি হয় এবং অনেক যুদ্ধবিমান ভীত হয়ে তাদের আকাশসীমা ছেড়ে চলে যায়।
পশ্চিমা গোয়েন্দা রিপোর্ট বলেছে, ইয়েমেনিরা ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলোতে উন্নত অস্ত্র তৈরি করছে এবং সম্পূর্ণ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।
তাই ইয়েমেনের এই নতুন সক্ষমতা ইসরাইলি দখলদারদের জন্য একটি বড় সংকেত, যা ইঙ্গিত দেয়;এই অঞ্চলে ইসরাইলের ক্ষমতা ক্রমেই সীমিত হচ্ছে এবং তারা প্রতিরোধ অক্ষের চাপের মুখে পড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ইয়েমেনের সাম্প্রতিক সামরিক সক্ষমতা ও দৃঢ়তা স্পষ্ট করে যে, প্রতিরোধ অক্ষের হাতে এখনো শক্তিশালী ‘কার্ড’ রয়েছে যা এখনো পুরোপুরি খেলা হয়নি।