১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকার বুকে নির্মম হত্যাকাণ্ড, ইউনূস আমলে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
  • / 287

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ক্রমেই বাড়ছে খুন ও হিংসার ঘটনা। সর্বশেষ উদাহরণ— রাজধানী ঢাকার পুরান এলাকায় নির্মমভাবে খুন হলেন এক ছোট ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ, যাঁকে প্রথমে পিটিয়ে, তারপর মাথায় ইট-পাথর দিয়ে থেঁতলে মেরে ফেলা হয়। শুধু খুন নয়, মৃত্যুর পরে মরদেহের উপর চলে লাগাতার নির্যাতন, যা ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, এই ঘটনাই তার বড় প্রমাণ।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে ঘটে এই বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সোহাগকে টেনে এনে পেটানো, লাথি মারা, মাথা থেঁতলে খুন করার পরেও হামলাকারীরা দেহের উপর অত্যাচার চালায়। আশপাশে বহু মানুষ থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরাও নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ।

ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল। তাতে দেখা গিয়েছে, ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির ভিড়, পথচারীদের উপস্থিতি— তবু কেউ সোহাগকে বাঁচাতে আসেননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, “এই ধরনের বর্বরতা সমাজের মূল্যবোধকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। তরুণদের একটা অংশ ভয়ংকর ভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে।”

আরও পড়ুন: ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলা

মূল অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান মহিন— যিনি বিএনপির যুব সংগঠনের নেতা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, স্ক্র্যাপ মেটালের ব্যবসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্বেই খুন হন সোহাগ। তিনি এক সময় ওই সংগঠনের সদস্যও ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ৫ অগস্ট সরকারের পতনের পরে মহিন সোহাগকে একচ্ছত্র ব্যবসার দায়িত্ব দেন, পরে লাভ বেশি দেখে সোহাগকে সরাতে চায় মহিন।

আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচন: ঐতিহাসিক জয় শিবিরের

বুধবার সন্ধ্যায় মহিন ও তাঁর সহযোগীরা সোহাগকে দোকান থেকে টেনে বের করে মারধর করতে করতে হাসপাতাল চত্বরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক, ইট-পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। একসময় বিবস্ত্র করে তাঁকে পেটানো হয়, এবং পরে দেহ রাস্তায় এনে চড়, লাথি মেরে মৃতদেহকেও অপমান করা হয়।

আরও পড়ুন: Jucsu polls: জাকসুর ফল প্রকাশ সন্ধ্যা ৭-টায়

এই একটি ঘটনা নয়— ইউনূসের বাংলাদেশে খুন এখন যেন নিয়মিত ঘটনা।

  • চট্টগ্রামে এক গৃহবধূকে খুন করে দেহ ১১ টুকরো করে স্বামী।

  • গাজীপুরে এক কারখানায় চুরির অপবাদে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা।

  • ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে খুন।

বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী:
📌 ২০২৫ সালের জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় খুন ১৩৬টি।
📌 গোটা বাংলাদেশে এই সময়ে খুন ১,২৪৪টি।
তুলনায়:

  • ২০২৪: ঢাকা – ৪৭

  • ২০২৩: ঢাকা – ৫১

  • ২০২২: ঢাকা – ৫৪

  • ২০২১: ঢাকা – ৫৫

এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে— ইউনূস সরকারের আমলে খুনের সংখ্যা ভয়ানক হারে বেড়েছে।

এই ঘটনায় গোটা বাংলাদেশে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে— ইউনূস সরকারের অধীনে দেশের মানুষ কতটা নিরাপদ? বাংলাদেশের বর্তমান চিত্রে মানবিকতা যেন বিলুপ্তপ্রায়, আর নৃশংসতা হয়ে উঠেছে নতুন স্বাভাবিকতা (New Normal)।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ঢাকার বুকে নির্মম হত্যাকাণ্ড, ইউনূস আমলে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ক্রমেই বাড়ছে খুন ও হিংসার ঘটনা। সর্বশেষ উদাহরণ— রাজধানী ঢাকার পুরান এলাকায় নির্মমভাবে খুন হলেন এক ছোট ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ, যাঁকে প্রথমে পিটিয়ে, তারপর মাথায় ইট-পাথর দিয়ে থেঁতলে মেরে ফেলা হয়। শুধু খুন নয়, মৃত্যুর পরে মরদেহের উপর চলে লাগাতার নির্যাতন, যা ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, এই ঘটনাই তার বড় প্রমাণ।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে ঘটে এই বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সোহাগকে টেনে এনে পেটানো, লাথি মারা, মাথা থেঁতলে খুন করার পরেও হামলাকারীরা দেহের উপর অত্যাচার চালায়। আশপাশে বহু মানুষ থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরাও নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ।

ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল। তাতে দেখা গিয়েছে, ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির ভিড়, পথচারীদের উপস্থিতি— তবু কেউ সোহাগকে বাঁচাতে আসেননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, “এই ধরনের বর্বরতা সমাজের মূল্যবোধকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। তরুণদের একটা অংশ ভয়ংকর ভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে।”

আরও পড়ুন: ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু বাংলাদেশের অমর একুশে বইমেলা

মূল অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান মহিন— যিনি বিএনপির যুব সংগঠনের নেতা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, স্ক্র্যাপ মেটালের ব্যবসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্বেই খুন হন সোহাগ। তিনি এক সময় ওই সংগঠনের সদস্যও ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ৫ অগস্ট সরকারের পতনের পরে মহিন সোহাগকে একচ্ছত্র ব্যবসার দায়িত্ব দেন, পরে লাভ বেশি দেখে সোহাগকে সরাতে চায় মহিন।

আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচন: ঐতিহাসিক জয় শিবিরের

বুধবার সন্ধ্যায় মহিন ও তাঁর সহযোগীরা সোহাগকে দোকান থেকে টেনে বের করে মারধর করতে করতে হাসপাতাল চত্বরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক, ইট-পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। একসময় বিবস্ত্র করে তাঁকে পেটানো হয়, এবং পরে দেহ রাস্তায় এনে চড়, লাথি মেরে মৃতদেহকেও অপমান করা হয়।

আরও পড়ুন: Jucsu polls: জাকসুর ফল প্রকাশ সন্ধ্যা ৭-টায়

এই একটি ঘটনা নয়— ইউনূসের বাংলাদেশে খুন এখন যেন নিয়মিত ঘটনা।

  • চট্টগ্রামে এক গৃহবধূকে খুন করে দেহ ১১ টুকরো করে স্বামী।

  • গাজীপুরে এক কারখানায় চুরির অপবাদে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা।

  • ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে খুন।

বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী:
📌 ২০২৫ সালের জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় খুন ১৩৬টি।
📌 গোটা বাংলাদেশে এই সময়ে খুন ১,২৪৪টি।
তুলনায়:

  • ২০২৪: ঢাকা – ৪৭

  • ২০২৩: ঢাকা – ৫১

  • ২০২২: ঢাকা – ৫৪

  • ২০২১: ঢাকা – ৫৫

এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে— ইউনূস সরকারের আমলে খুনের সংখ্যা ভয়ানক হারে বেড়েছে।

এই ঘটনায় গোটা বাংলাদেশে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে— ইউনূস সরকারের অধীনে দেশের মানুষ কতটা নিরাপদ? বাংলাদেশের বর্তমান চিত্রে মানবিকতা যেন বিলুপ্তপ্রায়, আর নৃশংসতা হয়ে উঠেছে নতুন স্বাভাবিকতা (New Normal)।