নিক্কো পার্কে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু, তদন্তের দাবি জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের পরিবারের

- আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 38
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ নিক্কো পার্কের ভিতরে ‘নায়গ্রা ফল’ নামে ওয়াটার পার্কের সামনে আচমকাই জ্ঞান হারান যুবক। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাহুল দাস নামের ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কলেজের ছয় বন্ধুর সঙ্গে উল্টোডাঙা এলাকার বাসিন্দা রাহুল বুধবার সকালে নিক্কো পার্কে যান। এবার এই ঘটনায় ছেলের মৃত্যুর তদন্তের দাবি জানিয়ে বিধানগর (দক্ষিণ) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রাহুলের বাবা সত্যজিৎ দাস। বাবার অভিযোগ, ‘ছেলে একেবারে সুস্থ ছিল। হাসিমুখে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আচমকাই দুপুরে ফোন আসে, ছেলে অচৈতন্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। গিয়ে দেখি, ছেলেকে হারিয়ে ফেলেছি।’ এটা শুধু দুর্ঘটনা নয়, এর পিছনে নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আছে বলেই অনুমান করছেন মৃত যুবকের পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও পর্যাপ্ত নজরদারি বা সুরক্ষা ছিল না। ওয়াটার পার্কের মতো জায়গায় যে ধরনের নিরাপত্তা থাকার কথা তা না থাকার কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে দাবি তাঁদের।
পরিবারের তরফে দায়ের হয়েছে লিখিত অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, এই গোটা ঘটনা গাফিলতির কারণে হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইছেন মৃত যুবকের পরিবার। এই তদন্তের আওতায় সকলকে রাখা হোক, চাইছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে গিয়েছিলেন যুবক। মৃতের বাবা জানিয়েছেন, ‘ছেলেরা বন্ধুরা বলেছে সাহায্য চেয়েও কিছুই পাওয়া যায়নি। অক্সিজেনের ব্যবস্থা ছিল না। ছিলেন না চিকিৎসকও। বন্ধুরা সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করে, ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুই করতে দেয়নি ওখানকার লোকজন। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার স্ট্রেচারটুকুও ছিল না। ওদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও ব্যবস্থা নেই, পরিষেবা নেই। সকাল থেকে বলছে অতিথি এসেছিল। তাঁদের জন্য এত ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নেই? কোটি কোটি টাকা নেয় এরা। অথচ কিচ্ছু পরিষেবা দেয় না।’ তবে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিক্কো পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ রায় সিঙ্ঘানিয়া । তিনি বলেন, ‘একজনই চিকিৎসক থাকেন নিক্কো পার্কে। গতকাল তাঁর ডে-অফ ছিল। চিকিৎসক না থাকলেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স ছিলেন, তিনি দেখেছেন।’
ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে এই ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। সেখানে দেখা গিয়েছে, দুপুর ১টা ৯-এ অসুস্থ তরুণকে চ্যাংদোলা করে নামাচ্ছেন তাঁর বন্ধুরা। নামাতে অসুবিধা হওয়ায় মাঝে একবার জলের মধ্যেই রাহুলকে শুইয়ে দেওয়া হয়। বন্ধুদের মধ্যে একজনকে সিপিআর দিতে দেখা যায়। এরপর ১টা ১৩-য় নিয়ে আসা হয় হুইল চেয়ার। হুইল চেয়ারে বসানো হয় রাহুলকে। ১টা ২৩ মিনিটে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় তরুণকে। দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে নিক্কো পার্ক থেকে বেরিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের পায়ে একটি ক্ষত ছিল। কীভাবে এই ক্ষত হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে মৃতের বন্ধুদের। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে না বলেই জানিয়েছে পুলিশ। শারীরিক কোনও সমস্যা নাকি এই মৃত্যুর পিছনে আছে অন্য কোনও রহস্য! ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই অনেকটা স্পষ্ট হবে সে বিষয়টি।