২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় ভেঙে পড়া বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭, আহত ১৭০ জন, ৭৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 49

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের রাজধানীয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বায়ুসেনার একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৭ জনের। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে (বাংলাদেশের স্থানীয় সময়) জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই মর্মান্তিক তথ্য জানান চিকিৎসক ড. মহম্মদ সায়েদুর রহমান। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই স্কুলপড়ুয়া শিশু, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। বাকি দু’জন হলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট এবং এক শিক্ষিকা।

 

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ২০ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৮ জন। সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা প্রায় ১৭০, যাঁদের অনেকেই দগ্ধ এবং সংকটজনক অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসক সায়েদুর জানান, দগ্ধ শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা চলছে এবং রক্তদাতাদের উপস্থিতি যথেষ্ট হলেও কিছু রেয়ার নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৩১, আহত ১৬৫

 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের তালিকা দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

সোমবার দুপুরে (স্থানীয় সময়) ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে উড়েছিল বাংলাদেশ বায়ুসেনার একটি FT-7 BGI যুদ্ধবিমান। মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যেই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর ভেঙে পড়ে। মার্কিন সামরিক বিশ্লেষণ ওয়েবসাইট ‘GlobalSecurity.org’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই FT-7 BGI বিমানটি তৈরি করেছে চীনের Chengdu Aircraft Corporation। এটি একটি দুই আসনবিশিষ্ট, এক ইঞ্জিনযুক্ত ফাইটার জেট, যা মূলত প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় চালককে আঙুল, আইনি পথে পাইলটরা

 

ঘটনার সময় মাইলস্টোন স্কুল ভবনের ১৬টি ক্লাসরুমে প্রাথমিক শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস চলছিল। ছুটির ঘণ্টা বাজার কিছু আগেই বিমানটি ছাদ ভেদ করে ধসে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত গোটা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। বহু শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে এবং দগ্ধ হয়। রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চালানো হয়। এখনও কেউ আটকে রয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।

 

আইএসপিআরের তরফে জানানো হয়েছে, বিমানটি ওড়ার পরপরই পাইলট যান্ত্রিক ত্রুটি অনুভব করেন। তিনি বিমানটিকে জনবসতি এড়িয়ে নিরাপদ স্থানে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে সেটি একটি স্কুল ভবনের উপর ধসে পড়ে।

 

দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র স্কুল চত্বরে ভিড় জমায় অভিভাবকরা। অনেকেই দিশাহারা হয়ে নিজের সন্তানকে খুঁজতে থাকেন ধ্বংসস্তূপের নিচে, কেউ কেউ ছোটেন হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পর স্কুলের সামনে দীর্ঘক্ষণ কান্না, আতঙ্ক আর অপেক্ষার চিত্র ছিল হৃদয়বিদারক। অনেক দেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে শনাক্ত করা যাচ্ছে না, ফলে DNA টেস্ট-এর সাহায্য নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ঢাকায় ভেঙে পড়া বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭, আহত ১৭০ জন, ৭৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের রাজধানীয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বায়ুসেনার একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৭ জনের। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে (বাংলাদেশের স্থানীয় সময়) জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই মর্মান্তিক তথ্য জানান চিকিৎসক ড. মহম্মদ সায়েদুর রহমান। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই স্কুলপড়ুয়া শিশু, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। বাকি দু’জন হলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট এবং এক শিক্ষিকা।

 

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ২০ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৮ জন। সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা প্রায় ১৭০, যাঁদের অনেকেই দগ্ধ এবং সংকটজনক অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসক সায়েদুর জানান, দগ্ধ শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা চলছে এবং রক্তদাতাদের উপস্থিতি যথেষ্ট হলেও কিছু রেয়ার নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৩১, আহত ১৬৫

 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের তালিকা দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

সোমবার দুপুরে (স্থানীয় সময়) ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে উড়েছিল বাংলাদেশ বায়ুসেনার একটি FT-7 BGI যুদ্ধবিমান। মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যেই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর ভেঙে পড়ে। মার্কিন সামরিক বিশ্লেষণ ওয়েবসাইট ‘GlobalSecurity.org’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই FT-7 BGI বিমানটি তৈরি করেছে চীনের Chengdu Aircraft Corporation। এটি একটি দুই আসনবিশিষ্ট, এক ইঞ্জিনযুক্ত ফাইটার জেট, যা মূলত প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় চালককে আঙুল, আইনি পথে পাইলটরা

 

ঘটনার সময় মাইলস্টোন স্কুল ভবনের ১৬টি ক্লাসরুমে প্রাথমিক শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস চলছিল। ছুটির ঘণ্টা বাজার কিছু আগেই বিমানটি ছাদ ভেদ করে ধসে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত গোটা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। বহু শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে এবং দগ্ধ হয়। রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চালানো হয়। এখনও কেউ আটকে রয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।

 

আইএসপিআরের তরফে জানানো হয়েছে, বিমানটি ওড়ার পরপরই পাইলট যান্ত্রিক ত্রুটি অনুভব করেন। তিনি বিমানটিকে জনবসতি এড়িয়ে নিরাপদ স্থানে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে সেটি একটি স্কুল ভবনের উপর ধসে পড়ে।

 

দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র স্কুল চত্বরে ভিড় জমায় অভিভাবকরা। অনেকেই দিশাহারা হয়ে নিজের সন্তানকে খুঁজতে থাকেন ধ্বংসস্তূপের নিচে, কেউ কেউ ছোটেন হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পর স্কুলের সামনে দীর্ঘক্ষণ কান্না, আতঙ্ক আর অপেক্ষার চিত্র ছিল হৃদয়বিদারক। অনেক দেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে শনাক্ত করা যাচ্ছে না, ফলে DNA টেস্ট-এর সাহায্য নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন।