০৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রায়ের কপি হাতে না আসায় বাড়তি সাজা খাটতে হয়, ত্রুটির কথা স্বীকার করলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ৩ নভেম্বর ২০২১, বুধবার
  • / 47

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : এদেশে জামিন হওয়ার পরও জেলবন্দি থাকতে হয় বহু বিচারাধীন বন্দিকে।বলা হয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জামিনের কাগজ পৌঁছয়নি। এ অপরাধ বন্দির নয়। তবুও জামিন হওয়ার পরেও তাদের অতিরিক্ত দিন সাজা খাটতে হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি  ডিওয়াই চন্দ্রচূড়  কোর্ট ও জেলের মধ্যেকার এই সংযোগের এই ত্রুটি নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেন। তিনি বলেন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, জামিন পাওয়ার পরও বন্দিদের আটকে থাকতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে  তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের ‘ই সেবা কেন্দ্রের’ কথা উল্লেখ করেন।বন্দিদের অনলাইন আইনি সুবিধা দিতে এই তৎপরতা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: ‘বিচার প্রক্রিয়ার আস্থা ভাঙার ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ অভিযোগ দেশের ৬০০ আইনজীবীর, CJI কে চিঠি

বিচারপতি আরও বলেন, ‘ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার সবথেকে বড় ত্রুটি হল, জামিনের নির্দেশে পাওয়ার পরও কেবল হাতে কাগজ এসে পৌঁছয়নি বলে জেল থেকে ছাড়া পাননা অনেকে।আমাদের দ্রুত এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। কারণ প্রতিটি বিচারাধীন বন্দির এই মানবিক অধিকার রয়েছে। এমন কি সাজা রদ হয়েছে এমন আসামিরও  এই মানবাধিকার   রয়েছে। 

আরও পড়ুন: সাংবাদিক সৌম্য বিশ্বনাথনের খুনিদের জামিন

জামিন পাওয়ার পরও কেবল রায়ের কপি হাতে পৌঁছয়নি বলে বহু বন্দিকে আটকে রাখা হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এদিনের বক্তব্যের বহু আগেই রায়ের কপি দ্রুত সংস্লিষ্ট জায়গায় না পৌঁছানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানবিচারপতি এন ভি রামানাও।তিনি বলেছিলেন যাতে করে রায়ের কপি দ্রুত সংশ্লিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে পারে তার জন্য একটি নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য চ্যানেল তৈরী করতে হবে। তিনি এও বলেছিলেন আজকের এই ডিজিট্যাল যুগেও আমাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পায়রা কখন চিঠি নিয়ে আসবে সে দিকে।

আরও পড়ুন: Breaking: প্রভাবশালী তত্ত্বে ফের খারিজ পার্থর জামিন

আগেই সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছে দ্রুত এবং নিরাপদ ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড সংশিল্ট জায়গায় পাঠাতে হবে।একই সঙ্গে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জেলগুলিকে ইন্টারনেট লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।  শুধু তাই নয় সেই ইন্টারনেটে যেন যথেষ্ট গতি থাকে, তাও জেলগুলিকে  সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। 

বুধবারের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড় ওড়িশার হাইকোর্টের ‘ই কাস্টডি’ তৈরির প্রশংসা করেন। সেখানে রায়ের কপি হাতে পায়নি একথা বলার সুযোগ নেই।কারণ রায়ের ‘ই কপি’ তড়িৎ গতিতে পৌঁছে যাচ্ছে ই-কাস্টডিতে। ফলে সুবিধা হবে  বিচারাধীন বন্দিদের। জামিনের অর্ডার হওয়ার পর তাদের আর অযথা আটকে থাকতে হবে না।

ভার্চুয়াল কোর্টের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন ১২ টি রাজ্যে এমন কোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দেশজুড়ে তৈরি হওয়া এই ই কোর্টে ৯৯.৪৩ লক্ষ মামলার রায় হয়েছে। ১৮.৩৫ লক্ষ মামলা থেকে জরিমানা সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট আদায় হওয়া জরিমানার পরিমান ১১৯ কোটি টাকা। ৯৮ হাজার আইনভঙ্গকারী মামলা করেছেন ।

ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য বহু জনকে আটকে রাখা হয়। যাদের চালান কাটা হয়। এমন অনেকে আছেন যারা খুবই গরিব।পুলিশ কাস্টডিতে তারা আটকে থাকে। জামিন হয়ে যায়। কিন্তু রায়ের কপি আসে না।এরা অনেকেই দিন মজুর। ফলে আর্থিক দিক দিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি একেবারেই ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।    

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রায়ের কপি হাতে না আসায় বাড়তি সাজা খাটতে হয়, ত্রুটির কথা স্বীকার করলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়

আপডেট : ৩ নভেম্বর ২০২১, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : এদেশে জামিন হওয়ার পরও জেলবন্দি থাকতে হয় বহু বিচারাধীন বন্দিকে।বলা হয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জামিনের কাগজ পৌঁছয়নি। এ অপরাধ বন্দির নয়। তবুও জামিন হওয়ার পরেও তাদের অতিরিক্ত দিন সাজা খাটতে হয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি  ডিওয়াই চন্দ্রচূড়  কোর্ট ও জেলের মধ্যেকার এই সংযোগের এই ত্রুটি নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেন। তিনি বলেন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, জামিন পাওয়ার পরও বন্দিদের আটকে থাকতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে  তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের ‘ই সেবা কেন্দ্রের’ কথা উল্লেখ করেন।বন্দিদের অনলাইন আইনি সুবিধা দিতে এই তৎপরতা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: ‘বিচার প্রক্রিয়ার আস্থা ভাঙার ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ অভিযোগ দেশের ৬০০ আইনজীবীর, CJI কে চিঠি

বিচারপতি আরও বলেন, ‘ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার সবথেকে বড় ত্রুটি হল, জামিনের নির্দেশে পাওয়ার পরও কেবল হাতে কাগজ এসে পৌঁছয়নি বলে জেল থেকে ছাড়া পাননা অনেকে।আমাদের দ্রুত এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। কারণ প্রতিটি বিচারাধীন বন্দির এই মানবিক অধিকার রয়েছে। এমন কি সাজা রদ হয়েছে এমন আসামিরও  এই মানবাধিকার   রয়েছে। 

আরও পড়ুন: সাংবাদিক সৌম্য বিশ্বনাথনের খুনিদের জামিন

জামিন পাওয়ার পরও কেবল রায়ের কপি হাতে পৌঁছয়নি বলে বহু বন্দিকে আটকে রাখা হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এদিনের বক্তব্যের বহু আগেই রায়ের কপি দ্রুত সংস্লিষ্ট জায়গায় না পৌঁছানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানবিচারপতি এন ভি রামানাও।তিনি বলেছিলেন যাতে করে রায়ের কপি দ্রুত সংশ্লিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে পারে তার জন্য একটি নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য চ্যানেল তৈরী করতে হবে। তিনি এও বলেছিলেন আজকের এই ডিজিট্যাল যুগেও আমাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পায়রা কখন চিঠি নিয়ে আসবে সে দিকে।

আরও পড়ুন: Breaking: প্রভাবশালী তত্ত্বে ফের খারিজ পার্থর জামিন

আগেই সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছে দ্রুত এবং নিরাপদ ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড সংশিল্ট জায়গায় পাঠাতে হবে।একই সঙ্গে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জেলগুলিকে ইন্টারনেট লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।  শুধু তাই নয় সেই ইন্টারনেটে যেন যথেষ্ট গতি থাকে, তাও জেলগুলিকে  সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। 

বুধবারের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড় ওড়িশার হাইকোর্টের ‘ই কাস্টডি’ তৈরির প্রশংসা করেন। সেখানে রায়ের কপি হাতে পায়নি একথা বলার সুযোগ নেই।কারণ রায়ের ‘ই কপি’ তড়িৎ গতিতে পৌঁছে যাচ্ছে ই-কাস্টডিতে। ফলে সুবিধা হবে  বিচারাধীন বন্দিদের। জামিনের অর্ডার হওয়ার পর তাদের আর অযথা আটকে থাকতে হবে না।

ভার্চুয়াল কোর্টের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন ১২ টি রাজ্যে এমন কোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দেশজুড়ে তৈরি হওয়া এই ই কোর্টে ৯৯.৪৩ লক্ষ মামলার রায় হয়েছে। ১৮.৩৫ লক্ষ মামলা থেকে জরিমানা সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট আদায় হওয়া জরিমানার পরিমান ১১৯ কোটি টাকা। ৯৮ হাজার আইনভঙ্গকারী মামলা করেছেন ।

ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্য বহু জনকে আটকে রাখা হয়। যাদের চালান কাটা হয়। এমন অনেকে আছেন যারা খুবই গরিব।পুলিশ কাস্টডিতে তারা আটকে থাকে। জামিন হয়ে যায়। কিন্তু রায়ের কপি আসে না।এরা অনেকেই দিন মজুর। ফলে আর্থিক দিক দিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি একেবারেই ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।