০৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬৮ জনের মৃত্যু, ৭৭ জন নিখোঁজ

ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই নৌকাডুবি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
  • / 7

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : নতুন জীবনের আশায় রওনা হওয়া যাত্রা রূপ নিল ভয়াবহ মরণযাত্রায়। রবিবার, ইয়েমেনের দক্ষিণ উপকূলের আবিয়ান প্রদেশের খানফার জেলার কাছে অ্যাডেন উপসাগরে শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকাডুবিতে অন্তত ৬৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল এবং এটি খুবই দুর্বল ও পুরানো ছিল, যার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে নিহত ও নিখোঁজদের সবাই ইথিওপিয়ার নাগরিক।

আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ জটিল হচ্ছে নিমিশা মামলা, সংযমের আর্জি মায়ের

দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এদের সকলকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান শেষে ইয়েমেনের খানফার উপকূলে ইতিমধ্যে ৫৪টি মৃতদেহ ভেসে এসেছে, যা দুর্ঘটনাস্থলের ভয়াবহতা প্রমাণ করে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও অনেক মৃতদেহ সমুoের গভীরে তলিয়ে গেছে অথবা উপকূলে ভেসে আসতে সময় লাগছে।

আরও পড়ুন: ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা

আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল, বিশেষ করে ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার বহু মানুষ দীর্ঘকাল ধরে দারিo্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং কর্মসংস্থানের অভাবে ভুগছে। উন্নত জীবনের আশায় এবং অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে তারা জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ পথে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়। এদের প্রধান লক্ষ্য থাকে ইয়েমেন হয়ে সউদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে পৌঁছনো।
ইয়েমেন হয়ে সউদি আরব যাওয়ার জলপথটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক অভিবাসন রুট হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুন: ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দরে হামলা দখলদার ইসরাইলের

এই পথে পাড়ি দিতে গিয়ে বহু অভিবাসন প্রত্যাশীকে চরম প্রতিকূলতা এবং মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই প্রায় ৯৭,২০০ জন অভিবাসী এই পথে প্রবেশ করেছিলেন। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা কিছুটা কমে প্রায় ৬০,০০০-এ দাঁড়ালেও মৃত্যুর হার কমেনি। গত বছর এই রুটে ৫৫৮ জন মারা গেছেন এবং অন্তত ২,০৮২ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এই পরিসংখ্যানগুলো এই রুটের ভয়াবহতা স্পষ্ট করে তোলে।

এই বিপজ্জনক যাত্রায় বহু মানুষ অসাধু দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। এই পাচারকারীরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সস্তা, অরক্ষিত এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌকায় গাদাগাদি করে যাত্রা করায়। তাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয় যে, ‘নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হবে’, অথচ বাস্তবে তাদের ঠেলে দেওয়া হয় মৃত্যুসমুখে। চলতি বছরের মার্চ মাসেই ইয়েমেন উপকূলে একই ধরনের চারটি নৌকা ডুবে গিয়েছিল, যাতে ২ জন মারা যান এবং অন্তত ১৮৬ জন নিখোঁজ হন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৬৮ জনের মৃত্যু, ৭৭ জন নিখোঁজ

ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই নৌকাডুবি

আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : নতুন জীবনের আশায় রওনা হওয়া যাত্রা রূপ নিল ভয়াবহ মরণযাত্রায়। রবিবার, ইয়েমেনের দক্ষিণ উপকূলের আবিয়ান প্রদেশের খানফার জেলার কাছে অ্যাডেন উপসাগরে শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকাডুবিতে অন্তত ৬৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল এবং এটি খুবই দুর্বল ও পুরানো ছিল, যার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে নিহত ও নিখোঁজদের সবাই ইথিওপিয়ার নাগরিক।

আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ জটিল হচ্ছে নিমিশা মামলা, সংযমের আর্জি মায়ের

দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এদের সকলকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান শেষে ইয়েমেনের খানফার উপকূলে ইতিমধ্যে ৫৪টি মৃতদেহ ভেসে এসেছে, যা দুর্ঘটনাস্থলের ভয়াবহতা প্রমাণ করে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও অনেক মৃতদেহ সমুoের গভীরে তলিয়ে গেছে অথবা উপকূলে ভেসে আসতে সময় লাগছে।

আরও পড়ুন: ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা

আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল, বিশেষ করে ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার বহু মানুষ দীর্ঘকাল ধরে দারিo্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং কর্মসংস্থানের অভাবে ভুগছে। উন্নত জীবনের আশায় এবং অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে তারা জীবন-ঝুঁকিপূর্ণ পথে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়। এদের প্রধান লক্ষ্য থাকে ইয়েমেন হয়ে সউদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে পৌঁছনো।
ইয়েমেন হয়ে সউদি আরব যাওয়ার জলপথটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক অভিবাসন রুট হিসেবে পরিচিত।

আরও পড়ুন: ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দরে হামলা দখলদার ইসরাইলের

এই পথে পাড়ি দিতে গিয়ে বহু অভিবাসন প্রত্যাশীকে চরম প্রতিকূলতা এবং মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই প্রায় ৯৭,২০০ জন অভিবাসী এই পথে প্রবেশ করেছিলেন। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা কিছুটা কমে প্রায় ৬০,০০০-এ দাঁড়ালেও মৃত্যুর হার কমেনি। গত বছর এই রুটে ৫৫৮ জন মারা গেছেন এবং অন্তত ২,০৮২ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এই পরিসংখ্যানগুলো এই রুটের ভয়াবহতা স্পষ্ট করে তোলে।

এই বিপজ্জনক যাত্রায় বহু মানুষ অসাধু দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। এই পাচারকারীরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সস্তা, অরক্ষিত এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌকায় গাদাগাদি করে যাত্রা করায়। তাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয় যে, ‘নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হবে’, অথচ বাস্তবে তাদের ঠেলে দেওয়া হয় মৃত্যুসমুখে। চলতি বছরের মার্চ মাসেই ইয়েমেন উপকূলে একই ধরনের চারটি নৌকা ডুবে গিয়েছিল, যাতে ২ জন মারা যান এবং অন্তত ১৮৬ জন নিখোঁজ হন।