জল থইথই মুম্বই, দেশের বিভিন্ন রাজ্যেও প্রবল বর্ষণ, বিপর্যস্ত জনজীবন

- আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
- / 22
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে মুম্বইসহ দেশের বিভিন্ন অংশে প্রবল বর্ষণ জনজীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। গত কয়েক দিন ধরে চলা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মুম্বই, থানে এবং সংলগ্ন এলাকার কিছু অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আবহাওয়া দফতর বিভিন্ন রাজ্যের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। মুম্বইয়ে টানা চার দিনের ভারী বৃষ্টিতে শহরের কিছু অংশে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এই পরিমাণ বৃষ্টি আগস্ট মাসের গড় বৃষ্টিকেও ছাপিয়ে গেছে। এর ফলে শহরের প্রধান সড়কগুলো কার্যত নদীতে পরিণত হয়েছে। এবং বিভিন্ন স্থানে জল জমে যাওয়ায় যান চলাচল এবং লোকাল ট্রেন পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এই লোকাল ট্রেনই মুম্বইয়ের লাইফলাইন। ফলে ব্যাপক ভোগান্তিতে মায়ানগরীর বাসিন্দারা। মঙ্গলবার একটি মনোরেল বিকল হয়ে অন্তত ৭৮২ জন যাত্রী আটকা পড়েন, যাদের পরে উদ্ধার করা হয়।
শুধুমাত্র মুম্বই নয়, মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন, মারাঠাওয়াড়া এবং পশ্চিম মহারাষ্ট্রের কিছু অংশও ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং নান্দেড় জেলায় পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছেন। নান্দেড় জেলার মুখেদ তালুক থেকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ২৯৩ জনকে উদ্ধার করেছে।
মহারাষ্ট্র ছাড়াও ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও মৌসুমী বৃষ্টিপাত সক্রিয় হয়েছে। গুজরাত, গোয়া এবং কর্নাটকের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতেও বর্ষার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার (ফ্ল্যাশ ফ্লাড) আশঙ্কা রয়েছে। উত্তরাখণ্ডে প্রায় ১৫০টি রাস্তা ভূমিধসের কারণে বন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে কিছু জাতীয় সড়কও অন্তর্ভুক্ত।
দুর্যোগ মোকাবিলায় মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল মোতায়েন করা হয়েছে। জনগণকে নদী, ঝরনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর আগামী দিনগুলোতেও অনেক অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।