লোকসভায় পাস অনলাইন গেমিং নিয়ন্ত্রণ বিল ২০২৫, টাকা-ভিত্তিক গেম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ

- আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
- / 1
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: বুধবার লোকসভা দ্রুততার সঙ্গে অনলাইন গেমিং প্রচার ও নিয়ন্ত্রণ বিল, ২০২৫ পাস করেছে। এই বিলের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ভারতে অনলাইন গেমিং শিল্পের জন্য একটি স্পষ্ট আইনি কাঠামো তৈরি হলো।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বিলটি উপস্থাপনকালে বলেন, “বাস্তব অর্থভিত্তিক গেমিং মাদকের চেয়েও ভয়ংকর। ইতিমধ্যেই এই আসক্তির কারণে বহু তরুণ প্রাণ হারিয়েছে, অসংখ্য পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে।” তাঁর দাবি, এই আইন সমাজকে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও মানসিক বিপর্যয়ের হাত থেকে সুরক্ষা দেবে।
নতুন আইনে অনলাইন গেমকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—ই-স্পোর্টস, সামাজিক গেমিং এবং অর্থভিত্তিক গেমিং। প্রথম দুটি ক্ষেত্রে সরকার নতুন কর্তৃপক্ষ গঠন, কর্মসংস্থান ও সৃষ্টিশীল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। তবে টাকা জিতে নেওয়ার আশায় খেলা অর্থভিত্তিক গেমের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।
বিল অনুসারে, ‘অর্থভিত্তিক অনলাইন গেম’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেই সব খেলা যেখানে অংশগ্রহণকারীরা টাকা জমা দিয়ে আর্থিক পুরস্কারের প্রত্যাশা করেন। সরকার মনে করছে, এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে অর্থপাচার, কর ফাঁকি ও জুয়ার প্রবণতা বাড়ছে, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মঘাতী আসক্তির জন্ম দিচ্ছে।
আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাকা-ভিত্তিক অনলাইন গেম পরিচালনা বা প্রচারে ধরা পড়লে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। তবে কোনো ধরনের আর্থিক পুরস্কার ছাড়া সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক সামাজিক গেম চালু রাখা যাবে।
প্রায় ২০২৯ সালের মধ্যে ভারতের গেমিং বাজার ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস থাকলেও, এই নতুন আইনের ফলে শিল্প জগতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে চলেছে।
এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট মিজানুল কবির পুবের কলমকে জানান , “এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ও স্বাগতযোগ্য পদক্ষেপ। বহু পরিবারকে সর্বনাশের মুখে ঠেলে দেওয়া এই ভ্রান্ত গেমিং প্রবণতার লাগাম টানতে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে এই আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।”