০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বতী সরকারের প্রধান সুশীলা কার্কিকে বেছে নিল নেপালের জেন জি, মেনে নেবে সেনা?

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার
  • / 255

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সব কিছু ঠিক থাকলে নেপালের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বসতে চলেছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া জেন জি তরুণেরা মঙ্গলবার রাতে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তাঁকেই পরবর্তী সরকার প্রধান করার প্রস্তাবে একমত হন। যদিও সেনা নেতৃত্ব তাঁর প্রার্থিতাকে স্বীকৃতি দেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরেই কার্কি জানিয়েছেন, তিনি এই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

মঙ্গলবার রাত থেকে নেপালের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। শৃঙ্খলা ফেরানো এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীরা অনলাইনে বৈঠক ডাকে। এতে চার হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী অংশ নেন, এমনকি বিদেশে থাকা নেপালিরাও জুম কলে যোগ দেন।

বৈঠকে ঘোষণা করা হয়, জেন জি আন্দোলন থাকবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তিকে নেতৃত্বে বসানো হবে না। সেই জায়গায় নিরপেক্ষ নাগরিক কর্মী ও প্রাক্তন বিচারপতি হিসেবে সুশীলা কার্কিকেই উপযুক্ত মনে করেছেন তাঁরা।

১৯৫২ সালের ৭ জুন বিরাটনগরে জন্ম সুশীলা কার্কির। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তিনি পড়াশোনা করেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েও। কর্মজীবন শুরু শিক্ষকতা দিয়ে, পরে আইনজীবী হয়ে ধাপে ধাপে উঠে আসেন সুপ্রিম কোর্টে। নেপালের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি।

দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। পুলিশ নিয়োগে অনিয়ম, দ্রুত বিচার আদালত এবং একাধিক উচ্চপ্রোফাইল দুর্নীতির মামলায় তাঁর রায় আলোড়ন তুলেছিল। ২০১৭ সালে মাওবাদী সেন্টার ও নেপালি কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনে। তবে তীব্র জনসমর্থন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় শাসক দলগুলো। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়;চাপের মুখেও দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে জানেন সুশীলা কার্কি।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অন্তর্বতী সরকারের প্রধান সুশীলা কার্কিকে বেছে নিল নেপালের জেন জি, মেনে নেবে সেনা?

আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সব কিছু ঠিক থাকলে নেপালের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বসতে চলেছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া জেন জি তরুণেরা মঙ্গলবার রাতে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তাঁকেই পরবর্তী সরকার প্রধান করার প্রস্তাবে একমত হন। যদিও সেনা নেতৃত্ব তাঁর প্রার্থিতাকে স্বীকৃতি দেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরেই কার্কি জানিয়েছেন, তিনি এই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

মঙ্গলবার রাত থেকে নেপালের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। শৃঙ্খলা ফেরানো এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীরা অনলাইনে বৈঠক ডাকে। এতে চার হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী অংশ নেন, এমনকি বিদেশে থাকা নেপালিরাও জুম কলে যোগ দেন।

বৈঠকে ঘোষণা করা হয়, জেন জি আন্দোলন থাকবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তিকে নেতৃত্বে বসানো হবে না। সেই জায়গায় নিরপেক্ষ নাগরিক কর্মী ও প্রাক্তন বিচারপতি হিসেবে সুশীলা কার্কিকেই উপযুক্ত মনে করেছেন তাঁরা।

১৯৫২ সালের ৭ জুন বিরাটনগরে জন্ম সুশীলা কার্কির। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তিনি পড়াশোনা করেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েও। কর্মজীবন শুরু শিক্ষকতা দিয়ে, পরে আইনজীবী হয়ে ধাপে ধাপে উঠে আসেন সুপ্রিম কোর্টে। নেপালের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি।

দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। পুলিশ নিয়োগে অনিয়ম, দ্রুত বিচার আদালত এবং একাধিক উচ্চপ্রোফাইল দুর্নীতির মামলায় তাঁর রায় আলোড়ন তুলেছিল। ২০১৭ সালে মাওবাদী সেন্টার ও নেপালি কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনে। তবে তীব্র জনসমর্থন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় শাসক দলগুলো। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়;চাপের মুখেও দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে জানেন সুশীলা কার্কি।