ভারতের ‘মাথায় বন্দুক রেখে’ বাণিজ্য চুক্তি করানো যাবে না, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মন্তব্য পীযূষ গোয়েলের
- আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার
- / 105
পুবের কলম, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সাফ জানিয়ে দিলেন যে ভারত তাড়াহুড়ো করে কোনো বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করবে না বা এমন কোনো শর্ত মানবে না যা তার নিজস্ব স্বার্থের বিরুদ্ধে। পশ্চিমা দেশগুলির পক্ষ থেকে বিশেষ করে আমেরিকার কাছ থেকে তেল আমদানি ও শুল্ক নিয়ে চাপের মুখে জার্মানির বার্লিনে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় তিনি ভারতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেন।
জার্মানিতে ‘বার্লিন গ্লোবাল ডায়ালগ’-এ বক্তব্যের সময় গোয়েল বলেন, বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি কোনো স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য বা বাহ্যিক চাপের দ্বারা পরিচালিত হয় না। বরং তা দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে চালিত হয়। এখানে বাহ্যিক চাপ বলতে যে ট্রাম্পের কথা বলছেন তা বলা বাহুল্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার ভারতকে চাপ দিচ্ছেন, রাশিয়ার কাছে তেল না কেনার জন্য। এর ‘শাস্তি’স্বরূপ ইতিমধ্যে ভারতের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে এদিন গোয়েল দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ভারত তাড়াহুড়ো করে কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না। আমরা মাথায় বন্দুক রেখে কোনো চুক্তি করি না। তিনি জোর দেন যে বাণিজ্য চুক্তি কেবল শুল্ক বা বাজার প্রবেশাধিকারের বিষয় নয়, এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক সহযোগিতার জন্য টেকসই সম্পর্ক এবং বিশ্বাস-ভিত্তিক কাঠামো তৈরির বিষয়। ভারত কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোনো বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না বলে তিনি জানান। তিনি স্পষ্ট করে দেন যে কেউ যদি ভারতকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে বারণ করে বা কেনিয়ার সঙ্গে কাজ না করতে বলে, তবে তা ভারতের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
ইইউ, ইউকে এবং ইউএস-সহ পশ্চিমা দেশগুলি রাশিয়া থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল আমদানি কমাতে ভারতের উপর চাপ দিচ্ছে। এই দেশগুলির যুক্তি হল, এর মাধ্যমে মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন হচ্ছে। জবাবে গোয়েল ভারতের অবস্থান রক্ষা করে বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যের জ্বালানি এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই ক্রয় ভারতের জন্য অত্যাবশ্যক। তিনি আরও জানান যে উচ্চ শুল্কের মোকাবিলা করার জন্য ভারত নতুন বাজারের দিকে নজর দিচ্ছে।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য চুক্তির দিকে স্থির অগ্রগতি হচ্ছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রফতানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, তবুও উভয় পক্ষ ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি চূড়ান্ত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। তিনি বিশ্ব মঞ্চে পরিষ্কার বার্তা দেন যে ভারত তার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই সিদ্ধান্ত নেবে এবং কোনো বাহ্যিক চাপ বা স্বল্পমেয়াদী রাজনৈতিক দাবির কাছে নতি স্বীকার করবে না।





























