পুবের কলম, শ্রীনগর: বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ক্রমশ কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। একাধিক জায়গায় কাশ্মীরি দেখলেই তাদের মারধর ও হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হয়রানি ও হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে। সম্প্রতি হরিয়ানার ফতেহাবাদ এলাকায় শাল বিক্রেতাদের এলাকা ছাড়তে হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশে দীর্ঘ ২৫–৩০ বছর ধরে কাজ করে আসা কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের দ্রুত এলাকা খালি করতে বলা হচ্ছে। অভিযোগ, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে হিমাচল প্রদেশে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের হয়রানি উদ্বেগজনক ভাবে বেড়েছে। এই ঘটনাটি ১৭তম।
অভিযোগ, কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান দিতে জোর করা হচ্ছে। অস্বীকার করলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, গলায় চেপে ধরা হচ্ছে এবং চরম অপমানের শিকার করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের জিনিসপত্র ভাঙচুর ও লুট করা হয়েছে, শাল বিক্রি করতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং ঘটনাগুলি রেকর্ড করার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ডেও কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের উপর হয়রানি ও হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। মাত্র দশ দিনের মধ্যে ডজনখানেকেরও বেশি হুমকি, হয়রানি ও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এটি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত ও বিপজ্জনকভাবে লক্ষ্যভিত্তিক হয়রানির বলে দাবি করেছে কাশ্মীরিরা। একাধিকবার এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বাইরে কর্মরত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কনভেনর নাসির খুয়েহামি বলেন, “হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ডসহ উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের ভয়ের রাজত্ব তৈরি হচ্ছে।”
ঘটনার একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, কাশ্মীরি বিক্রেতাকে এভাবেই হয়রানির করা হয়েছে। জেকেএসএ বলেছে, “হরিয়ানার ফতেহাবাদে গরম পোশাক বিক্রি করছিলেন এক কাশ্মীরি যুবক। সেখানে এক ডানপন্থী ব্যক্তি তাঁকে কলার ধরে ‘ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। যুবকটি অস্বীকার করলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, গলায় চেপে ধরা হয়, শ্বাসরোধ করা হয় এবং অপমানজনক ও অবমাননাকর আচরণের শিকার করা হয়।”


















