০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক স্বার্থে বদলে দেওয়া হচ্ছে ইতিহাসকে, নাম না করে তোপ মমতার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 59

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই দেশের ‌ইতিহাসকে বদলে দেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদরা। স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা ব্রিটিশ শাসকদের পদলেহন করেছিলেন তাদেরকে দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন তাঁরা। বুধবার আলিপুর জেলের নতুন সংগ্রহশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে নাম না করে ইতিহাস বিকৃতির জন্য মোদি সরকারকে খোঁচা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের ইতিহাস-ভূগোলকে বদলে দেওয়া হচ্ছে। আগামী প্রজন্ম যাতে আসল ইতিহাস জানতে না পারে, তার জন্য এই উদ্যোগ।’

একই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে ও নবজাগরণের ক্ষেত্রে বাংলার অবদানের কথা তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, ‘বাংলা না থাকলে নবজাগরণ হত না, স্বাধীনতা আন্দোলন বিপ্লব হত না।’

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

আলিপুর জেলের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক ইতিহাস জড়িয়ে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস থেকে শুরু করে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, ঋষি অরবিন্দ ঘোষদের মতো জননায়করা ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবনের একটা বড় সময় আলিপুর জেলেই কাটিয়েছিলেন। সেই ইতিহাসকে নবীন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বিশেষ সংগ্রহশালা। যেসব ঘরে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছিলেন সেইসব ঘরকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার মেরামত করে নতুন করে সাজানো হয়েছে। মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিভিন্ন নথিপত্র, তাঁত যন্ত্রও রয়েছে সংগ্রহশালায়। দর্শকদের সুবিধার জন্য কফি হাউস, রেস্তরাঁও খোলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এদিন সংগ্রহশালার উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আলিপুর জেলের সংগ্রহশালাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ দেশে যেভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ আর ঘৃণা ছড়াচ্ছে আর তাতে চোখ বন্ধ করে থাকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা।

আরও পড়ুন: আদিবাসী ভাই-বোনেদের করম পুজোর শুভেচ্ছা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর

এ প্রসঙ্গে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত নেতাই হলেন দেশের নেতা। দেশকে যিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন তিনি সর্বো‍ৎকৃষ্ট নেতা। সব ধর্ম-বর্ণ-জাতি নিয়েই দেশ। ফলে দেশের যিনি নেতা হবেন তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার নেতা হবেন। কোনও এক পক্ষের নন।’ বঙ্গ রাজনীতিতে ইদানিং গেরুয়া শিবিরের নেতারা যেভাবে শাসকদলের নেতাদের লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করছেন, ব্যক্তি আক্রমণে মেতে উঠেছেন তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নীতিতে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু সম্মান প্রদর্শনে কোনও বিরোধ থাকে না।’

আলিপুর জেলকে সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তুলতে পেরে রাজ্য সরকার যে গর্বিত তা জানাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশের ইতিহাস ভূগোল পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমরা দেশের ইতিহাসের নিদর্শন রক্ষা করেছি। আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। কেন ভাবনা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে? কেন মিশন পরিবর্তন করা হচ্ছে? আমরা তাই ইতিহাস সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি। একটি গানের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ দেশকে একসূত্রে বেঁধেছেন। দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের পায়ে মাথা ঠেকাই।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাজনৈতিক স্বার্থে বদলে দেওয়া হচ্ছে ইতিহাসকে, নাম না করে তোপ মমতার

আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই দেশের ‌ইতিহাসকে বদলে দেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদরা। স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা ব্রিটিশ শাসকদের পদলেহন করেছিলেন তাদেরকে দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন তাঁরা। বুধবার আলিপুর জেলের নতুন সংগ্রহশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে নাম না করে ইতিহাস বিকৃতির জন্য মোদি সরকারকে খোঁচা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের ইতিহাস-ভূগোলকে বদলে দেওয়া হচ্ছে। আগামী প্রজন্ম যাতে আসল ইতিহাস জানতে না পারে, তার জন্য এই উদ্যোগ।’

একই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে ও নবজাগরণের ক্ষেত্রে বাংলার অবদানের কথা তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, ‘বাংলা না থাকলে নবজাগরণ হত না, স্বাধীনতা আন্দোলন বিপ্লব হত না।’

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

আলিপুর জেলের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক ইতিহাস জড়িয়ে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস থেকে শুরু করে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, ঋষি অরবিন্দ ঘোষদের মতো জননায়করা ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবনের একটা বড় সময় আলিপুর জেলেই কাটিয়েছিলেন। সেই ইতিহাসকে নবীন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বিশেষ সংগ্রহশালা। যেসব ঘরে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছিলেন সেইসব ঘরকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার মেরামত করে নতুন করে সাজানো হয়েছে। মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিভিন্ন নথিপত্র, তাঁত যন্ত্রও রয়েছে সংগ্রহশালায়। দর্শকদের সুবিধার জন্য কফি হাউস, রেস্তরাঁও খোলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এদিন সংগ্রহশালার উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আলিপুর জেলের সংগ্রহশালাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ দেশে যেভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ আর ঘৃণা ছড়াচ্ছে আর তাতে চোখ বন্ধ করে থাকছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা।

আরও পড়ুন: আদিবাসী ভাই-বোনেদের করম পুজোর শুভেচ্ছা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর

এ প্রসঙ্গে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত নেতাই হলেন দেশের নেতা। দেশকে যিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন তিনি সর্বো‍ৎকৃষ্ট নেতা। সব ধর্ম-বর্ণ-জাতি নিয়েই দেশ। ফলে দেশের যিনি নেতা হবেন তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার নেতা হবেন। কোনও এক পক্ষের নন।’ বঙ্গ রাজনীতিতে ইদানিং গেরুয়া শিবিরের নেতারা যেভাবে শাসকদলের নেতাদের লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করছেন, ব্যক্তি আক্রমণে মেতে উঠেছেন তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নীতিতে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু সম্মান প্রদর্শনে কোনও বিরোধ থাকে না।’

আলিপুর জেলকে সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তুলতে পেরে রাজ্য সরকার যে গর্বিত তা জানাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশের ইতিহাস ভূগোল পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমরা দেশের ইতিহাসের নিদর্শন রক্ষা করেছি। আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। কেন ভাবনা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে? কেন মিশন পরিবর্তন করা হচ্ছে? আমরা তাই ইতিহাস সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি। একটি গানের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ দেশকে একসূত্রে বেঁধেছেন। দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের পায়ে মাথা ঠেকাই।’