২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাহুলের সাংসদপদ খারিজের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার
  • / 28

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সমাজকর্মী আভা মুরলীধরনের তরফে শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজের সেই ধারা এ বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল সুপ্রিম কোর্টে।

আভা মুরালীধরনের মতে, ৮(৩) ধারাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন। যা গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর সরাসরি আক্রমণ। যার আঁচ পড়তে পারে সরাসরি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাতেও।

আরও পড়ুন: ভারতের সংবিধানই এই অস্পৃশ্যকে সর্বোচ্চ পদে বসিয়েছে : গাভাই

সমাজকর্মী আভা মুরলীধরনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত প্রতিনিধিকে শাস্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সদস্যপদ হারানো অসাংবিধানিক।

আরও পড়ুন: ৩ আগস্ট নিট পিজি পরীক্ষা নিতে নির্দেশ শীর্ষ কোর্টের

প্রকৃতপক্ষে, এই ধারার অধীনে,  ২ বছর বা তার বেশি শাস্তি হলে যে কোনও জনপ্রতিনিধির সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। পিটিশনে বলা হয়েছে যে ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধির ‘অযোগ্য’ বলে ঘোষণার কারণে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তারিখ থেকে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অযোগ্য বলে ঘোষণার বিরুদ্ধে শনিবার সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি ভার্মাকে সরানোর প্রস্তুতি, সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনছে কেন্দ্র

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে ২০১৯ সালের মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা এবং লোকসভা সাংসদ হিসাবে সদস্যপদ বাতিলের করার একদিন পরে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮ (৩) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে কোনও সাংসদ বা বিধায়ক যদি দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন, তবে তার সদস্যপদ অবিলম্বে খারিজ করা হবে। পাশাপাশি এও উল্লেখ করা হয়েছে আগামী ৬ বছরের জন্য তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। আভা মুরালিধরনের পক্ষে দায়ের করা পিটিশনে বলা হয়েছে যে লিলি থমাস মামলার রায় রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যে অপব্যবহার করছে।

২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় যে, সাংসদ বা বিধায়ককে, কোনও আদালত যদি দু’বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড দেয়, সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জন প্রতিনিধির পদ খারিজ হয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, সুরাটের এক আদালত বৃহস্পতিবার তাঁকে ফৌজদারি মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করার পরে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর, এটার নেপথ্যে ১০ জুলাই, ২০১৩ সালে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের এক যুগান্তকারী রায়ের জেরে। তার আগে আইন ছিল,  দোষী সাব্যস্ত সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্যদের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আসন ধরে রাখার অনুমতি পাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত পাবেন, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন মনমোহন সিংয়ের সরকার একটি অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কিন্তু,  সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষোভ দেখান রাহুল। কংগ্রেসে তাঁর সমর্থকরাও এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল। যার জেরে সরকার অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্সটি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাহুলের সাংসদপদ খারিজের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সমাজকর্মী আভা মুরলীধরনের তরফে শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজের সেই ধারা এ বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল সুপ্রিম কোর্টে।

আভা মুরালীধরনের মতে, ৮(৩) ধারাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন। যা গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর সরাসরি আক্রমণ। যার আঁচ পড়তে পারে সরাসরি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাতেও।

আরও পড়ুন: ভারতের সংবিধানই এই অস্পৃশ্যকে সর্বোচ্চ পদে বসিয়েছে : গাভাই

সমাজকর্মী আভা মুরলীধরনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত প্রতিনিধিকে শাস্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সদস্যপদ হারানো অসাংবিধানিক।

আরও পড়ুন: ৩ আগস্ট নিট পিজি পরীক্ষা নিতে নির্দেশ শীর্ষ কোর্টের

প্রকৃতপক্ষে, এই ধারার অধীনে,  ২ বছর বা তার বেশি শাস্তি হলে যে কোনও জনপ্রতিনিধির সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। পিটিশনে বলা হয়েছে যে ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধির ‘অযোগ্য’ বলে ঘোষণার কারণে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তারিখ থেকে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অযোগ্য বলে ঘোষণার বিরুদ্ধে শনিবার সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি ভার্মাকে সরানোর প্রস্তুতি, সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনছে কেন্দ্র

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে ২০১৯ সালের মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা এবং লোকসভা সাংসদ হিসাবে সদস্যপদ বাতিলের করার একদিন পরে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮ (৩) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে কোনও সাংসদ বা বিধায়ক যদি দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন, তবে তার সদস্যপদ অবিলম্বে খারিজ করা হবে। পাশাপাশি এও উল্লেখ করা হয়েছে আগামী ৬ বছরের জন্য তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। আভা মুরালিধরনের পক্ষে দায়ের করা পিটিশনে বলা হয়েছে যে লিলি থমাস মামলার রায় রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যে অপব্যবহার করছে।

২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় যে, সাংসদ বা বিধায়ককে, কোনও আদালত যদি দু’বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড দেয়, সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জন প্রতিনিধির পদ খারিজ হয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, সুরাটের এক আদালত বৃহস্পতিবার তাঁকে ফৌজদারি মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করার পরে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর, এটার নেপথ্যে ১০ জুলাই, ২০১৩ সালে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের এক যুগান্তকারী রায়ের জেরে। তার আগে আইন ছিল,  দোষী সাব্যস্ত সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্যদের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আসন ধরে রাখার অনুমতি পাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত পাবেন, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন মনমোহন সিংয়ের সরকার একটি অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কিন্তু,  সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষোভ দেখান রাহুল। কংগ্রেসে তাঁর সমর্থকরাও এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল। যার জেরে সরকার অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্সটি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।