২২ জুন ২০২৫, রবিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিলামে উঠল চিনের সর্বশেষ সম্রাটের ঘড়ি, দাম শুনলে চমকে যাবেন

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, বুধবার
  • / 44

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দ্য লাস্ট এম্পেরর চলচ্চিত্রটি হয়তো অনেকেই দেখেছেন। ১৯৮৭ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রটি বেশ সুনাম কুড়িয়েছিল। জিতেছিল অস্কার। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল মূলত চিনের শেষ সম্রাট  আইসিন-গিয়োরো পুয়িকে নিয়ে। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী এই সম্রাটের একটি হাতঘড়ি নিলামে উঠতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেটির দাম ৩০ লাখ ডলার (৩২ কোটি টাকার বেশি) ছাড়িয়ে যাবে।

দামটা শুনে অনেকে হতবাক হতে পারেন। তবে এত দাম হবেই বা না কেন! একে তো সেটি সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা প্যাটেক ফিলিপের তৈরি। এই মডেলের ঘড়ি বিশ্বে মাত্র আটটি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তা ছাড়া সেটির সঙ্গে মিশে আছে ৮৬ বছরের ইতিহাস। সম্রাট পুয়ি যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে কারাগারে বন্দী ছিলেন, তখন ঘড়িটি ছিল তাঁর সঙ্গে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

চামড়ার বেল্টের এই ঘড়ির ডায়ালটি প্লাটিনামের তৈরি, ব্যাস ১ দশমিক ২ ইঞ্চি। কাঁটাগুলো তৈরি গোলাপি-সোনালি রঙের মিশেলে। ঘড়িটি চলতি মাসেই হংকংয়ে নিলামে তোলা হচ্ছে। নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ফিলিপস।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

পুয়ি চিনের সম্রাট হিসেবে ক্ষমতায় বসেন ছেলেবেলায়, ১৯০৮ সালে। এর মাত্র চার বছর পর এক বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তাঁকে। ১৯২৪ সালে বেইজিং থেকে পালিয়ে তিনি জাপানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। পরে জাপানের পুতুলরাষ্ট্র মাঞ্চুকুয়ওর সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় পুয়িকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে সোভিয়েত বাহিনী। কারাগারে রাখা হয় যুদ্ধবন্দী হিসেবে।

আরও পড়ুন: চিনা দাওয়াই! খরচ কমাতে সরকারি বৈঠকে নিষিদ্ধ মদ-সিগারেট-দামি খাবার!

কারাগারে পুয়ির সঙ্গে ছিলেন জর্জি পেরমিয়াকভ নামের এক ব্যক্তি। মান্দারিন ভাষায় দক্ষ পেরমিয়াকভ তাঁর গৃহশিক্ষক ও দোভাষী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৫০ সালে ঘড়িটি পেরমিয়াকভকে দিয়ে দেন তিনি। এর পরপরই যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য পুয়িকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে চীনে নেওয়া হয়। তাঁর বাকি জীবনটা চিনেই কেটেছিল।

এদিকে ২০০৫ সালে মারা যান পেরমিয়াকভ। এর আগপর্যন্ত ঘড়িটি তাঁর কাছেই ছিল। এরপর সেটি পেরমিয়াকভের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের কাছে যায়। শেষে ২০১৯ সালে ঘড়িটি নিলামকারী ফিলিপসের হাতে পড়ে। ঘড়িটি এরই মধ্যে নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও তাইপেতে প্রদর্শন করা হয়েছে। ২৩ মে হংকংয়ে নিলামে তোলার আগে সেটি জেনেভায়ও প্রদর্শন করা হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিলামে উঠল চিনের সর্বশেষ সম্রাটের ঘড়ি, দাম শুনলে চমকে যাবেন

আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, বুধবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দ্য লাস্ট এম্পেরর চলচ্চিত্রটি হয়তো অনেকেই দেখেছেন। ১৯৮৭ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রটি বেশ সুনাম কুড়িয়েছিল। জিতেছিল অস্কার। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল মূলত চিনের শেষ সম্রাট  আইসিন-গিয়োরো পুয়িকে নিয়ে। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী এই সম্রাটের একটি হাতঘড়ি নিলামে উঠতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেটির দাম ৩০ লাখ ডলার (৩২ কোটি টাকার বেশি) ছাড়িয়ে যাবে।

দামটা শুনে অনেকে হতবাক হতে পারেন। তবে এত দাম হবেই বা না কেন! একে তো সেটি সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা প্যাটেক ফিলিপের তৈরি। এই মডেলের ঘড়ি বিশ্বে মাত্র আটটি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তা ছাড়া সেটির সঙ্গে মিশে আছে ৮৬ বছরের ইতিহাস। সম্রাট পুয়ি যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে কারাগারে বন্দী ছিলেন, তখন ঘড়িটি ছিল তাঁর সঙ্গে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

চামড়ার বেল্টের এই ঘড়ির ডায়ালটি প্লাটিনামের তৈরি, ব্যাস ১ দশমিক ২ ইঞ্চি। কাঁটাগুলো তৈরি গোলাপি-সোনালি রঙের মিশেলে। ঘড়িটি চলতি মাসেই হংকংয়ে নিলামে তোলা হচ্ছে। নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ফিলিপস।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

পুয়ি চিনের সম্রাট হিসেবে ক্ষমতায় বসেন ছেলেবেলায়, ১৯০৮ সালে। এর মাত্র চার বছর পর এক বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তাঁকে। ১৯২৪ সালে বেইজিং থেকে পালিয়ে তিনি জাপানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। পরে জাপানের পুতুলরাষ্ট্র মাঞ্চুকুয়ওর সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় পুয়িকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে সোভিয়েত বাহিনী। কারাগারে রাখা হয় যুদ্ধবন্দী হিসেবে।

আরও পড়ুন: চিনা দাওয়াই! খরচ কমাতে সরকারি বৈঠকে নিষিদ্ধ মদ-সিগারেট-দামি খাবার!

কারাগারে পুয়ির সঙ্গে ছিলেন জর্জি পেরমিয়াকভ নামের এক ব্যক্তি। মান্দারিন ভাষায় দক্ষ পেরমিয়াকভ তাঁর গৃহশিক্ষক ও দোভাষী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৫০ সালে ঘড়িটি পেরমিয়াকভকে দিয়ে দেন তিনি। এর পরপরই যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য পুয়িকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে চীনে নেওয়া হয়। তাঁর বাকি জীবনটা চিনেই কেটেছিল।

এদিকে ২০০৫ সালে মারা যান পেরমিয়াকভ। এর আগপর্যন্ত ঘড়িটি তাঁর কাছেই ছিল। এরপর সেটি পেরমিয়াকভের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের কাছে যায়। শেষে ২০১৯ সালে ঘড়িটি নিলামকারী ফিলিপসের হাতে পড়ে। ঘড়িটি এরই মধ্যে নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও তাইপেতে প্রদর্শন করা হয়েছে। ২৩ মে হংকংয়ে নিলামে তোলার আগে সেটি জেনেভায়ও প্রদর্শন করা হবে।