পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আল-জাহির বায়বার্স মসজিদ। আকার ও আয়তনের কারণে মিশরের তৃতীয় বৃহত্তম উপাসনালয় তকমা পেয়েছিল। তবে একটা সময় পর সংস্করণের অভাবে মসজিদটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কেটে গেছে দীর্ঘ ২২৫ বছর।
দীর্ঘ ২২৫ বছর পর ফের মিশরের ঐতিহাসিক ‘আল-জাহির বায়বার্স’ মসজিদে পবিত্র জুম্মার নামায অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৯ জুন) রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত এ মসজিদে জুম্মার নামায পড়তে আসেন হাজার হাজার মুসল্লি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জুম্মার পুরো কার্যক্রম লাইভও দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ আহমদ আত-তাইয়িবের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটির দ্বার পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
মসজিদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে শায়খ আহমদ আত-তাইয়িব বলেন, সুলতান আল-জাহির বায়বার্স ইসলামের ইতিহাসের সাহসী পুরুষদের অন্যতম। আরব বিশ্ব বিশেষত মিশরীয় অঞ্চলে রাজনীতি, অর্থনীতি ও স্থাপত্য ক্ষেত্রে তার অবদান অপ্রত্যাখ্যেয়।
জানা গেছে, ১২৬৮ সালে মামলুক শাসনামলে মসজিদটি নির্মিত হয়। মামলুক সুলতান আল-জাহির বায়বার্স আল-বানদুকদারির নামে নামকরণ করা হয় মসজিদটির। ১৭৯৮ সালে মিশরে ফরাসি আগ্রাসনের পর মসজিদটি বেদখল হয়। বন্ধে করে দেওয়া হয় নাময পাঠ।
এছাড়াও, মসজিদের উঁচু উঁচু প্রাচীরে ওপর স্থাপন করা হয় উন্নতমানের কামান। সময়ের ফেরে মসজিদ প্রাঙ্গণ পরিণত হয় সামরিক কেন্দ্রে।
১৮০৫-১৮৪৯ সালে মিশরের অটোমান গভর্নর মোহাম্মদ আলী পাশার শাসনামলে তা সাবান কারখানা অতঃপর সেনাবাহিনীর বেকারি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরপর ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত তা কসাইখানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন ধরে তা পরিত্যক্ত স্থান হিসেবে পড়ে ছিল। ২০০৭ সাল থেকে মিশর ও কাজাখস্তান সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি পুনরুদ্ধার শুরু হয়। এরপর ২০১১ সাল থেকে আট বছর এই কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অতঃপর ২০১৮ সালে পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়ে গত সপ্তাহে মজসিদটি উদ্বোধন হলো। মসজিদটি পুনরুদ্ধার কাজে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। অবশেষে ২২৫ পর পুনরায় নামায আদায় হয় মিশরের তৃতীয় বৃহত্তম এই মসজিদে।