০৩ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আপ এল বাংলায়

অর্পিতা লাহিড়ী
  • আপডেট : ২৯ জুন ২০২১, মঙ্গলবার
  • / 182

এ হাসান : আপ এল বাংলায়। আপ নেতৃত্ব সম্প্রতি পশ্চিমবাংলার প্রতিটি জেলায় কমিটি গঠন করে সাংগঠনিকভাবে রীতিমতো কাজ শুরু করে দিয়েছে।

তবে আপ অর্থাৎ আম আদমি পার্টির কেন্দ্র থেকে নিয়োগকৃত পশ্চিমবঙ্গ প্রভারী সঞ্জয় বসু বললেন– আপ কিন্তু বাংলায় আগেই এসেছে। আমরা এক বা দুই মাস কাজ শুরু করেছি একথা বললে ভুল হবে। তাঁর দাবি– ২০১২ সালের নভেম্বরে আপ প্রতিষ্ঠার দুই-তিন বছরের মধ্যেই কলকাতা ও পশ্চিমবাংলায় পার্টির উপস্থিতি দেখতে পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গ ‘বাংলাদেশ’ হয়ে গেলে আমরা কোথায় যাব? এসআইআর আবহে বিস্ফোরক মন্তব্য মিঠুনের

ইতিমধ্যে চলতি জুন মাসেরই তৃতীয় সপ্তাহে আপ পশ্চিমবাংলার ১৮টি জেলায় কমিটি গঠন করতে সমর্থ হয়েছে। পশ্চিমবাংলায় আপ-এর অন্য দুই কর্মকর্তা নাজির হোসেন সরকার এবং সুশীল কুমার জয়সওয়াল পুবের কলম-কে জানালেন– খুব শীঘ্রই বাকি জেলাগুলিতেও কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হবে। তাঁরা কলকাতায় আপ-এর রাজ্য কমিটির দফতর প্রতিষ্ঠার জন্য ঘর খুঁজছেন।

আরও পড়ুন: নির্যাতিতার পরিবারকে ন্যায়বিচার দিতে সবকিছু করব: গণধর্ষণ-কাণ্ডে মুখ খুললেন বোস

আপ-এর পশ্চিমবাংলা প্রভারী সঞ্জয় বসু আরও জানালেন– বলতে পারেন আমরা কাজ শুরু করেছি ২০২০ সালের জুন মাস থেকে। এই সময়ই আমরা দিল্লির নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয়লাভ করি। আমাদের পার্টির নেতা শ্রী কেজরিওয়ালের নির্দেশে তখন থেকেই শুরু হয় ‘রাষ্টÉীয় নির্মাণ অভিযান’। বিভিন্ন রাজ্যে আপ-এর সঙ্গে সংযুক্ত হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের বলা হয়– নির্দিষ্ট নম্বরে মিসড কল দেওয়ার জন্য। পশ্চিমবাংলায় আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার মিসড কল আসে এই রাজ্য থেকে। এখন আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ঝাড়াই-বাছাই সেরে একের পর এক জেলা কমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছি।

আরও পড়ুন: রাজ্য থেকে বিদায় নিচ্ছে বর্ষা

আপ যে বেশ গুছিয়ে পশ্চিমবাংলায় কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বোঝা যায় প্রতিটি জেলা কমিটির গঠন থেকে। যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটিতে রয়েছেন– জেলা অধ্যক্ষ– সম্পাদক– কোষাধ্যক্ষ– প্রশাসনিক নির্দেশক– পার্টি কর্মসূচি তত্ত্বাবধায়ক– আইনি বিশেষজ্ঞ– যুব শাখা সংগঠক– সোশ্যাল মিডিয়া তত্ত্বাবধায়ক– মহিলা শাখা সংগঠক– সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তত্ত্বাবধায়ক– ব্যবসায়িক সমিতি সমন্বয়কারী। রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আপ বিভিন্ন জেলা কমিটিগুলি গঠনের কথা ঘোষণা করেছে। আর জেলা পর্যায়ে যেসব বিভাগে তারা কাজ করবে– তার তত্ত্বাবধায়ক বা প্রধানদের নামও ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে তাদের শ্রমিক ইউনিয়ন ও যুব শাখার রাজ্য কার্যকর্তার নামও ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়ন দেখছেন সুশীল কুমার জয়সওয়াল। আর ছাত্র ও যুব শাখা দেখছেন সাদ্দাম হুসেন সরকার। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

পশ্চিমবঙ্গে কাজ শুরু করা সম্পর্কে নাজির হোসেন সরকার বলেন–দুর্নীতি– রাজনীতির দুবৃত্তায়ন এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য আপ তৈরি হয়েছে। আর এই লক্ষ্যগুলিকে সামনে রেখেই আমরা পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যজুড়ে কাজ শুরু করেছি। 

আপ-এর পশ্চিমবঙ্গ প্রভারী সঞ্জয় বসু বলেন– তাঁরা এখন আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছেন। এখান থেকেই তাঁদের বাংলায় নির্বাচনী লড়াই শুরু হবে। এখন থেকেই দল পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

তাঁকে ও নাজির হোসেন সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল– তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আপ-এর ভাল ধরনের সমঝোতা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে তারা অনেক ইস্যুতেই যৌথভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে কি এই সম্পর্ক ম্লান হবে না? দুই নেতার বক্তব্য– পশ্চিমবাংলায় আমাদের প্রধান চিন্তা ছিল বিজেপিকে বাংলায় পর্যুদুস্ত করা নিয়ে। এই কাজে আমরা পরস্পরকে সাথ দিয়েছি। কিন্তু একটি স্বাধীন দল হিসেবে আপ বাংলাতেও নির্বাচন লড়তেই পারে। আর তা শুরু হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন দিয়ে। উত্তরপ্রদেশ– গুজরাত– গোয়া প্রভৃতি রাজ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে আপ বড় ধরণের সাফল্য পেয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আপ এল বাংলায়

আপডেট : ২৯ জুন ২০২১, মঙ্গলবার

এ হাসান : আপ এল বাংলায়। আপ নেতৃত্ব সম্প্রতি পশ্চিমবাংলার প্রতিটি জেলায় কমিটি গঠন করে সাংগঠনিকভাবে রীতিমতো কাজ শুরু করে দিয়েছে।

তবে আপ অর্থাৎ আম আদমি পার্টির কেন্দ্র থেকে নিয়োগকৃত পশ্চিমবঙ্গ প্রভারী সঞ্জয় বসু বললেন– আপ কিন্তু বাংলায় আগেই এসেছে। আমরা এক বা দুই মাস কাজ শুরু করেছি একথা বললে ভুল হবে। তাঁর দাবি– ২০১২ সালের নভেম্বরে আপ প্রতিষ্ঠার দুই-তিন বছরের মধ্যেই কলকাতা ও পশ্চিমবাংলায় পার্টির উপস্থিতি দেখতে পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গ ‘বাংলাদেশ’ হয়ে গেলে আমরা কোথায় যাব? এসআইআর আবহে বিস্ফোরক মন্তব্য মিঠুনের

ইতিমধ্যে চলতি জুন মাসেরই তৃতীয় সপ্তাহে আপ পশ্চিমবাংলার ১৮টি জেলায় কমিটি গঠন করতে সমর্থ হয়েছে। পশ্চিমবাংলায় আপ-এর অন্য দুই কর্মকর্তা নাজির হোসেন সরকার এবং সুশীল কুমার জয়সওয়াল পুবের কলম-কে জানালেন– খুব শীঘ্রই বাকি জেলাগুলিতেও কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হবে। তাঁরা কলকাতায় আপ-এর রাজ্য কমিটির দফতর প্রতিষ্ঠার জন্য ঘর খুঁজছেন।

আরও পড়ুন: নির্যাতিতার পরিবারকে ন্যায়বিচার দিতে সবকিছু করব: গণধর্ষণ-কাণ্ডে মুখ খুললেন বোস

আপ-এর পশ্চিমবাংলা প্রভারী সঞ্জয় বসু আরও জানালেন– বলতে পারেন আমরা কাজ শুরু করেছি ২০২০ সালের জুন মাস থেকে। এই সময়ই আমরা দিল্লির নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয়লাভ করি। আমাদের পার্টির নেতা শ্রী কেজরিওয়ালের নির্দেশে তখন থেকেই শুরু হয় ‘রাষ্টÉীয় নির্মাণ অভিযান’। বিভিন্ন রাজ্যে আপ-এর সঙ্গে সংযুক্ত হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের বলা হয়– নির্দিষ্ট নম্বরে মিসড কল দেওয়ার জন্য। পশ্চিমবাংলায় আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার মিসড কল আসে এই রাজ্য থেকে। এখন আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ঝাড়াই-বাছাই সেরে একের পর এক জেলা কমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছি।

আরও পড়ুন: রাজ্য থেকে বিদায় নিচ্ছে বর্ষা

আপ যে বেশ গুছিয়ে পশ্চিমবাংলায় কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বোঝা যায় প্রতিটি জেলা কমিটির গঠন থেকে। যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটিতে রয়েছেন– জেলা অধ্যক্ষ– সম্পাদক– কোষাধ্যক্ষ– প্রশাসনিক নির্দেশক– পার্টি কর্মসূচি তত্ত্বাবধায়ক– আইনি বিশেষজ্ঞ– যুব শাখা সংগঠক– সোশ্যাল মিডিয়া তত্ত্বাবধায়ক– মহিলা শাখা সংগঠক– সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তত্ত্বাবধায়ক– ব্যবসায়িক সমিতি সমন্বয়কারী। রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আপ বিভিন্ন জেলা কমিটিগুলি গঠনের কথা ঘোষণা করেছে। আর জেলা পর্যায়ে যেসব বিভাগে তারা কাজ করবে– তার তত্ত্বাবধায়ক বা প্রধানদের নামও ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে তাদের শ্রমিক ইউনিয়ন ও যুব শাখার রাজ্য কার্যকর্তার নামও ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়ন দেখছেন সুশীল কুমার জয়সওয়াল। আর ছাত্র ও যুব শাখা দেখছেন সাদ্দাম হুসেন সরকার। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

পশ্চিমবঙ্গে কাজ শুরু করা সম্পর্কে নাজির হোসেন সরকার বলেন–দুর্নীতি– রাজনীতির দুবৃত্তায়ন এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য আপ তৈরি হয়েছে। আর এই লক্ষ্যগুলিকে সামনে রেখেই আমরা পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যজুড়ে কাজ শুরু করেছি। 

আপ-এর পশ্চিমবঙ্গ প্রভারী সঞ্জয় বসু বলেন– তাঁরা এখন আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছেন। এখান থেকেই তাঁদের বাংলায় নির্বাচনী লড়াই শুরু হবে। এখন থেকেই দল পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

তাঁকে ও নাজির হোসেন সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল– তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আপ-এর ভাল ধরনের সমঝোতা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে তারা অনেক ইস্যুতেই যৌথভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে কি এই সম্পর্ক ম্লান হবে না? দুই নেতার বক্তব্য– পশ্চিমবাংলায় আমাদের প্রধান চিন্তা ছিল বিজেপিকে বাংলায় পর্যুদুস্ত করা নিয়ে। এই কাজে আমরা পরস্পরকে সাথ দিয়েছি। কিন্তু একটি স্বাধীন দল হিসেবে আপ বাংলাতেও নির্বাচন লড়তেই পারে। আর তা শুরু হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন দিয়ে। উত্তরপ্রদেশ– গুজরাত– গোয়া প্রভৃতি রাজ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে আপ বড় ধরণের সাফল্য পেয়েছে।