পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কাশ্মীরের আপেল চাষিদের জন্য রেলের ‘Apple Express’ । জম্মু-কাশ্মীরের আপেল উৎপাদনকারী কৃষকদের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সাম্প্রতিক বন্যা এবং হাইওয়ে অবরোধের কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতির শিকার হওয়া আপেল চাষিদের মুখে অবশেষে হাসি ফোটাচ্ছে ভারতীয় রেলের একটি বিশেষ পার্সেল ট্রেন পরিষেবা।

Empowering Kashmir’s apple growers 🍎🚇
With the Jammu-Srinagar line operational, the Kashmir valley has better connectivity. Railways is introducing a daily time-tabled parcel train from Badgam in Kashmir Valley to Adarsh Nagar station in Delhi starting 13th September 2025.…
— Ashwini Vaishnaw (@AshwiniVaishnaw) September 11, 2025
কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগটিকে উপত্যকার উদ্যানপালন শিল্পের জন্য ‘গেম-চেঞ্জার’ বা আমূল পরিবর্তনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে প্রায়শই ভূমিধস এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে ট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতবার টানা পনেরো দিন ধরে শত শত আপেল বোঝাই ট্রাক আটকে ছিল, যার ফলে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার আপেল পচে নষ্ট হয়ে যায়।
এই অপ্রত্যাশিত ক্ষতির কারণে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন হাজার হাজার আপেল চাষি। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে রেল। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব তার ‘এক্স’ পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন বৃহস্পতিবার। শনিবার থেকে এর যাত্রা শুরু হবে। রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মু’্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
‘জয়েন্ট পার্সেল প্রোডাক্ট র্যাপিড কার্গো ট্রেন সার্ভিস’ নামের এই পরিষেবাটি প্রতিদিন চালু থাকবে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ট্রেনটি কাশ্মীরের বুদগাম স্টেশন থেকে সরাসরি দিল্লির আদর্শ নগর স্টেশনে আপেল পরিবহণ করবে। ট্রেনটি চালু হওয়ার আগেই ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বুদগাম স্টেশনে আপেল বোঝাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কাশ্মীরের চিফ এরিয়া ম্যানেজার সাকিম ইউসুফ জানান, আজ দুটি খালি পার্সেল ট্রেন বুদগাম স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। আজ থেকেই আপেল লোডিং শুরু হয়েছে।
এই ট্রেন পরিষেবা আপেল চাষিদের জন্য একাধিক সুবিধা নিয়ে আসছে। রেলের এই বিশেষ ট্রেন যাত্রাপথের সময়সীমা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে। সিনিয়র কমার্শিয়াল ডিভিশনাল ম্যানেজার উচিট সিংঘল জানান, ট্রেনটি বুদগাম থেকে দিল্লি পৌঁছাতে প্রায় ২৩ ঘণ্টা সময় নেবে, যা সড়কপথের তুলনায় ১২ ঘণ্টারও বেশি কম। এর ফলে আপেল দ্রুত এবং সতেজ অবস্থায় দেশের বৃহত্তম বাজারে পৌঁছাতে পারবে। প্রতিটি ট্রেনে ১৮ টন পর্যন্ত আপেল পরিবহণ করা যাবে।
এই পরিষেবাটি শুধু আপেল চাষিদের জন্যই নয়, বরং সমগ্র উপত্যকার অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগে জুন মাসে কাট্রা থেকে মুম্বই পর্যন্ত চেরি বোঝাই একটি অনুরূপ ট্রেন সফলভাবে চালু হয়েছিল। এই নতুন পরিষেবাটি কাশ্মীরের পণ্য পরিবহণে এক নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা উপত্যকার উদ্যানজাত পণ্যকে আরও দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য উপায়ে দেশের মূল বাজারের সঙ্গে যুক্ত করবে।
































