ওজন কমানো থেকে হার্টের সমস্যা, ঢ্যাঁড়সের গুণ জানলে কাল থেকেই খাবেন
- আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 317
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : সুস্থ থাকতে আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি গ্রহণ করা উচিত। সবজি থেকে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলস পাওয়া যায়। সব ধরনের সবজিতেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এরকমই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এক সবজির নাম ঢ্যাঁড়স। বর্ষাকালে সব থেকে বেশি উৎপাদিত হলেও, বছরের প্রায় প্রতিটি সময়েই এই সবজি স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায়।
খুব সহজেই রান্না করা যায় বলে এটি অনেকের কাছেই পছন্দের সবজি। শুধু তাই নয়, এর স্বাদও বেশ ভালো। স্বল্প সময়ে এই সবজি দিয়ে অনেক পদ তৈরি করা যায়। ভাত, রুটি, পরোটার সঙ্গে এই সবজি খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। সহজলভ্য এই সবজির উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এটি অনেক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে।
আজকে জানব ঢ্যাঁড়সের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। জানিয়েছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অলোক চোপড়া। সম্প্রতি ডাঃ চোপড়া তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ঢ্যাঁড়সের পুষ্টিগুণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঢ্যাঁড়স একটি পুষ্টিকর সবজি যা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। এটি শরীরের জন্য বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
ঢ্যাঁড়স খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে এটি শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসতে পারে। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই সবজিটি শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢ্যাঁড়স থেকে ৩৩ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে প্রোটিনের পরিমাণ ২ গ্রাম এবং ফাইবারের পরিমাণ ৩.২ গ্রাম। তবে ঢ্যাঁড়সের উৎপত্তি আমাদের দেশে নয়, আফ্রিকা মহাদেশের ইথিওপিয়ায়। ধীরে ধীরে এটি আরব হয়ে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোসহ ইউরোপ এবং অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ভাষায় অনেকে এটিকে ভেন্ডি বা ভিন্ডিও বলেন।
তবে যে নামে ডাকা হোক না কেন এই সবজিটির কিন্তু অনেক অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ঢ্যাঁড়শে রয়েছে ভিটামিন- বি, সি এবং কে। এছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ফলিক অ্যাসিড। ঢ্যাঁড়সের উপকারিতা-ঢ্যাঁড়স একটি পুষ্টিকর সবজি এবং এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। নিচে এর কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
হজমে সহায়ক: ঢ্যাঁড়সে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: ঢ্যাঁড়স রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এর ফাইবার শর্করা শোষণের গতি কমিয়ে দেয়।
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: ঢ্যাঁড়সের ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হৃৎপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি কমায়।
ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ: ঢ্যাঁড়সে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ফোলেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ভিটামিন সি থাকার কারণে ঢ্যাঁড়স শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: ঢ্যাঁড়সে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়ক।হাড় মজবুত করে: ভিটামিন কে হাড়কে মজবুত করতে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
ত্বকের জন্য উপকারী: ঢ্যাঁড়সে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে ঢ্যাঁড়স ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।তবে মুচমুচে ঢ্যাঁড়স ভাজা তো সকলের পছন্দের।
কিন্তু শরীরের হাজারো রোগ গায়েব করে দিতে পারে ঢ্যাঁড়স জল, এটা কি জানতেন? রোগ নিয়ন্ত্রণে ঢ্যাঁড়সের জল খুবই উপকারী। এই স্বাস্থ্যসচেতনতার দুনিয়ায় প্রতি দিনই আবির্ভাব ঘটছে নতুন নতুন পানীয়ের। দারচিনি ভেজানো জল থেকে শুরু করে মৌরি ভেজানো জল, হলুদ, আমলকি, শসা, চিয়াবীজ, পাতিলেবু, ঘি— তালিকার শেষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু এখন সেই সব জলের ভিড়েই হঠাৎ মাথা তুলে উঠেছে ঢেঁড়স ভেজানো জল বা ‘ওকরা ওয়াটার’।
এই মুহূর্তে ব্রিটেন, আফ্রিকা, আমেরিকার স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছে এই পানীয়। যাঁরা ব্যবহার করেছেন, তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন ঢ্যাঁড়সের জল নিয়মিত খেয়ে তাঁদের পেট ভাল আছে। কিন্তু কিভাবে বানাবেন ঢ্যাঁড়স ভেজানো জল? এই বিষয়ে ডাঃ চোপড়া জানিয়েছেন – প্রথমে ২-৩টি তাজা ঢ্যাঁড়সের শুঁটি নিয়ে, ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে, তারপর দুই প্রান্ত কেটে নিন এবং ছোট ছোট টুকরো করে নিন।
তারপর, এগুলি সারারাত এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন, জল ছেঁকে নিন এবং সকালে খালি পেটে পান করুন। খারাপ খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাবের মতো কারণগুলি নিরাময় করতেও এই জল খুবই উপকারী।তবে এটি সেবন করার আগে, অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।























