পথে নেমে বিক্ষোভ জনগণের
Block Everything, সরকার বদলের দাবিতে এবার উত্তাল ফ্রান্স
- আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 259
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক : ‘ব্লক এভরিথিং’ (Block Everything) মুভমেন্টে অগ্নিগর্ভ ফ্রান্স। মূলত সরকার বদলের দাবিতেই এই বিক্ষোভ। বুধবার দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভে আগুন-ধোঁয়া ও টিয়ার গ্যাসে ভরে ওঠে রাজধানী প্যারিসসহ বড় বড় শহর। সরকারের বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিবাদে শুরু হওয়া ‘ব্লক এভরিথিং’ আন্দোলন প্রথম দিনেই ফ্রান্সের জনজীবনে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
সোমবার সংসদীয় অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু পদচ্যুত হওয়ার পর সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানীতে ডাস্টবিন জড়ো করে তৈরি হয় ব্যারিকেড, স্কুল ও সড়ক অবরোধ হয়, আর পুলিশের দিকে ছোড়া হয় আবর্জনা। পশ্চিমাঞ্চলীয় রেনে শহরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইনের ছেঁড়া তারে থমকে যায় ট্রেন চলাচল, সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট।
সরকারি হিসাবে, সেদিন প্রায় ২ লাখ মানুষ আন্দোলনে অংশ নেয়। শক্তিশালী শ্রমিক সংগঠন সিজিটির দাবি, সংখ্যা আড়াই লাখের কাছাকাছি। প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়, যারা শত শত ব্যারিকেড ভেঙে দেয় ও ৪৫০-র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করে। কয়েক ডজন পুলিশ আহত হন, এবং ৮০০-র বেশি স্থানে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ। বুধবারও ২০০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
‘Block Everything‘ আন্দোলনের সূত্রপাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, ডানপন্থীদের হাত ধরে। কিন্তু দ্রুতই এতে যুক্ত হয় বাম ও চরম-বামপন্থী সংগঠনগুলো। একদিকে বাজেট কাটছাঁট, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক ঘাটতির অভিযোগ;সব মিলিয়ে আন্দোলনটি এখন বহুধারার মানুষের সাধারণ ক্ষোভের প্রতিফলন। ডান ও বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরল একজোট হওয়া ফরাসি সমাজের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের গভীরতা প্রমাণ করে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী বড় ধর্মঘট ডেকেছে আটটি শ্রমিক সংগঠন।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনি মেয়রসহ একাধিক নেতা-ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে আটক ইসরাইলের
পরিবহন, শিক্ষা, বিমান চলাচলসহ নানা খাতে এর বড় প্রভাব পড়বে। বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারীরাও আলাদা করে ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর ধর্মঘট ঘোষণা করেছে। এর মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী লেকর্নুকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে সংসদে ২০২৬ সালের বাজেট পেশ করতে হবে। সময়সীমা ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়তে পারে, তবে বছরের শেষে বাজেট অনুমোদন না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
২০২২ সালে পুনর্র্নিবাচিত হওয়ার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে প্রবল জনরোষের মুখে পড়তে হয়। বিতর্কিত পেনশন সংস্কার নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ, আর ২০২৩ সালে প্যারিসের শহরতলিতে এক কিশোরকে পুলিশ গুলি করে হত্যার পর সারা দেশে দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বুধবার প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও দাঙ্গা পুলিশদের সঙ্গে সংঘর্ষ সেই পুরনো সংকটকেই আবার উসকে দিয়েছে।


















































