পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চ ইউনানের একটি গ্রামে ১৩ শতকের একটি মসজিদের গম্বুজ ও মিনার ভাঙার প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয় হাজার হাজার মুসলিম। স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাজে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউনানের নাগু শহরে ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত হয়েছিল নাজিয়াইং মসজিদটি । এই মসজিদটি সংখ্যালঘু হু জাতিগোষ্ঠীর । বেইজিংয়ের স্বীকৃত ৫৬টি জাতিগত গোষ্ঠীর একটি হুই। আর এই হুই সম্প্রদায়ের সদস্যরা সুন্নিপন্থী মুসলিম। চিনজুড়ে প্রায় এক কোটি হুই মুসলিম রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ হাজারই দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের ইউনানে বসবাস করেন।
গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, নাজিয়াইং মসজিদের বাইরে বহু মুসলিম জড়ো হয়েছেন। এ সময় পুলিশ প্রতিবাদী স্থানীয় মুসলিমদের ধাওয়া করে । তেড়ে আসেন মুসলিমরাও । পরে সশস্ত্র পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। জাতিগত দিক থেকে বৈচিত্র্যময় চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রদেশ ইউনানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠী রয়েছে। সরকারিভাবে নাস্তিক রাষ্ট্র হলেও চিনে ধর্মীয় স্বাধীনতার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু অনেকেই বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে সংগঠিত ধর্মের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বেড়েছে। একই সঙ্গে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছে বেইজিং।
নাগুর নাজিয়াইং মসজিদটি মুসলিমদের অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গত কয়েক বছরে এই মসজিদের গম্বুজযুক্ত ছাদ ও কয়েকটি মিনার নির্মাণসহ এর আকার বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালে চিনের একটি আদালত মসজিদটির সম্প্রসারণ কাজকে অবৈধ ঘোষণা করে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি মসজিদটির গম্বুজ ও সম্প্রসারিত অংশ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ আদালতের ওই আদেশ কার্যকর করার জন্য নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সেখানকার মুসলিমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ধর্মকে চিনাকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন, বলে অভিযোগ। তা তা বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করচহেন বলেও অভিযোগ।
এই নীতির আওতায় ধর্মীয় বিশ্বাসে বিদেশি প্রভাব মুছে ফেলা হচ্ছে এবং প্রচলিত চিনা সংস্কৃতির আদল দেওয়া হচ্ছে। এমনটাও অভিযোগ। চিনের ক্ষমতায় থাকা কমিউনিস্ট পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে নাস্তিক। হুই অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে কর্তৃপক্ষ ইসলামি অনেক স্থাপনা ভেঙে ফেলেছে, দেশজুড়ে সহস্রাধিক মসজিদের গম্বুজ ও মিনার ধ্বংস করা হয়েছে। নাজিয়াইং গ্রামের মসজিদটিতে শেষ এমন ঐতিহ্যসম্পন্ন গম্বুজ ও মিনার রয়েছে।