দুই রাজ্যে ১২শিশুর মৃত্যুর নেপথ্যে অনামী সংস্থার কাশির সিরাপ

- আপডেট : ৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার
- / 132
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: প্রথমে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারায় সাধারণ সর্দিকাশিতে এক পক্ষকালের মধ্যে ৯ জন শিশুর মৃত্যুর খবর স্থানীয় প্রশাসনকে চমকে দিয়েছিল। ডাক্তারের রিপোর্ট জানিয়েছিল, সকলেরই মৃত্যুর কারণ কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। কিন্তু এত কম বয়সী বাচ্চাদের কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা। তাই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। এখন শোনা যাচ্ছে, রাজস্থানের সিকারে একইভাবে কয়েকজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তারি তদন্তে প্রকাশ, কাশির সিরাপ খেয়েই এই পরিণতি হয়েছে। দুই রাজ্যে মোট ১২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
দেখা গিয়েছে, ডেক্সামেথরপ্যান সিরাপ, যা স্টেরয়েড এবং কাশির ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে, তাতেই লুকিয়ে রয়েছে কিডনি বিকল করার বিষ। ইদানীং ছোটখাটো অসংখ্য ওষুধ কোম্পানি গজিয়ে উঠেছে, যারা অনেক কম দামে জেনেরিক ওষুধ তৈরি করছে। এমন কোনও কোম্পানির তৈরি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে এই মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে। নামকরা সংস্থার কাশির সিরাপে এমন অঘটন ঘটার কথা নয়। সারা দেশে মোট ১২৪০ জন শিশু এই কাশির সিরাপ খেয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। দুই রাজ্য সরকারই ডেক্সামেথারপ্যান জাতীয় সব কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু কোনও বাচ্চার সর্দিকাশি হলে শিশু চিকিৎসক এই কাশির সিরাপ তাকে সাধারণভাবে দেন। চিকিৎসকরা কী করবেন তা স্পষ্ট নয়। এরপর সব রাজ্যেই কোনও শিশু দুদিনের বেশি সর্দিকাশিতে ভুগলে তার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নিতে বলা হয়েছে আশা কর্মীদের। মধ্যপ্রদেশে ৫ জন শিশুর মৃত্যুর কারণ কোল্ড্রেফ নামে এক সিরাপ, অন্য দুজন শিশুর মৃত্যুর কারণ নেক্সট্রো নামে এক সিরাপ। এদিকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল সক্রিয় হয়ে দুই রাজ্য থেকে জলের, ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এসব পরীক্ষা করে দেখা হবে, কী করে এই শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ আটকানো যায়।
অন্যদিকে মেডিক্যাল সার্ভিসেস করপোরেশন এই সন্দেহজনক কাশির সিরাপের ১৯ টি ব্যাচ নিষিদ্ধ করতে বলেছে। মরসুমি অসুখ, যা ঋতু পরিবর্তনের সময় বাচ্চাদের হয়, তা যে এতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, কেউ ভাবতে পারেননি। যে সব মায়ের কোল খালি হল, যে সব বাড়িতে এখন শুধুই প্রিয় শিশুকে হারানোর কান্না, সেই সব পরিবারের প্রশ্ন, সরকারি প্রকল্পের বিনা পয়সার ওষুধ খেয়েই কি এই হাল হল। রাজস্থানে সকলেই মুখ্যমন্ত্রী নিশুল্ক দাওয়াই যোজনার ওষুধ নিয়ে বাচ্চাদের খাইয়েছিলেন। কেসন নামে এক কোম্পানি ওই ওষুধ তৈরি করে। সেই কোম্পানিকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষজনের ভরসা তো সরকারি ওষুধ এবং সরকারি হাসপাতাল।