২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শীর্ষে যোগীর উত্তরপ্রদেশ 

পণের করাল থাবায় ভারত, এক বছরে সাড়ে ৬ হাজার মৃত্যু! 

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার
  • / 215

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: যৌতুক সমাজের জন্য অভিশাপ। এর ভয়াল থাবায় প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছেন অসংখ্য নারী, প্রাণও যাচ্ছে অনেকের। আধুনিক উন্নত সমাজ ব্যবস্থার পথে অন্যতম অন্তরায় বলে ভাবা হয় এই প্রথাকে। এটি ঠেকাতে আইনও হয়েছে বিভিন্ন দেশে। এর পরও বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে সর্বনাশা যৌতুক প্রথা। সম্প্রতি যৌতুক প্রথা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। যাতে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে দেশে এই পণের বলি হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬,৪৫০ জন মহিলা। আর এই তালিকায় দেশের মধ্যে শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ।

 

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

 

আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের যুবক সনুকে ছয় মাস পর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে মহিলা কমিশনের তরফে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে গোটা দেশে পণপ্রথার বলি হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬,৪৫০ জন মহিলার। ২০১৪ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৮,৫০০ । তবে

আরও পড়ুন: ঝড়খালিতে বাঘিনীর মৃত্যু

২০২২ সালে পরিসংখ্যানটি তুলনামূলক

কিছুটা কমেছে বলে দাবি কমিশনের। অন্যদিকে ২০২৩ সালে পণের জেরে হেনস্থার শিকার হয়েছেন ৪,৭৯৭ জন।

 

২০২২ সালের এনসিআরবির রিপোর্টের ভিত্তিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, পণের বলি হয়ে দেশে মৃতের তালিকায় শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে একবছরে মৃত্যু হয়েছে ২,২১৮ জনের। আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিহারে মৃতের সংখ্যা ১,০৫৭ জন। মধ্যপ্রদেশে মৃত্যু ৫১৮ জনের, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে (কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ) ৪৪২ জন। তারপর যথাক্রমে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড। পাশাপাশি ২০২৪ সালে মহিলা কমিশনের কাছে পণ সংক্রান্ত নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৪৩৮৩টি।

 

ওই বছরেই ২৯২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হয়। এছাড়া ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত বছরে গড়ে প্রায় ৭,‌০০০ মহিলার মৃত্যু হয়েছে পণের জেরে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এক বছরে ৭,০০০ মহিলার মৃত্যু ও এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হলেও ৪,৫০০টি মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে। অর্থাৎ ৬৪ শতাংশ। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার আরও কম। তা ১০ শতাংশের নিচে। কিছু কিছু রাজ্যে তা মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ।

 

উল্লেখ্য, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে হিন্দু, মুসলিম সব সমাজেই পণ-প্রথা গার্হস্থ্য হিংসার অন্যতম এক কারণ৷ যদিও মুসলিম ধর্মে পণপ্রথা নিষিদ্ধ৷

 

তবে আইনত নিষিদ্ধ হলেও এই কুপ্রথা এক সামাজিক সংক্রমণের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এখানে ধনী-দরিদ্র , শিক্ষিত-অশিক্ষিত বা শহর-গ্রামের প্রশ্ন নেই৷ মানুষের অর্থলোলুপতাই একমাত্র কারণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শীর্ষে যোগীর উত্তরপ্রদেশ 

পণের করাল থাবায় ভারত, এক বছরে সাড়ে ৬ হাজার মৃত্যু! 

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: যৌতুক সমাজের জন্য অভিশাপ। এর ভয়াল থাবায় প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছেন অসংখ্য নারী, প্রাণও যাচ্ছে অনেকের। আধুনিক উন্নত সমাজ ব্যবস্থার পথে অন্যতম অন্তরায় বলে ভাবা হয় এই প্রথাকে। এটি ঠেকাতে আইনও হয়েছে বিভিন্ন দেশে। এর পরও বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে সর্বনাশা যৌতুক প্রথা। সম্প্রতি যৌতুক প্রথা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। যাতে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে দেশে এই পণের বলি হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬,৪৫০ জন মহিলা। আর এই তালিকায় দেশের মধ্যে শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ।

 

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

 

আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের যুবক সনুকে ছয় মাস পর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে মহিলা কমিশনের তরফে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে গোটা দেশে পণপ্রথার বলি হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬,৪৫০ জন মহিলার। ২০১৪ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৮,৫০০ । তবে

আরও পড়ুন: ঝড়খালিতে বাঘিনীর মৃত্যু

২০২২ সালে পরিসংখ্যানটি তুলনামূলক

কিছুটা কমেছে বলে দাবি কমিশনের। অন্যদিকে ২০২৩ সালে পণের জেরে হেনস্থার শিকার হয়েছেন ৪,৭৯৭ জন।

 

২০২২ সালের এনসিআরবির রিপোর্টের ভিত্তিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, পণের বলি হয়ে দেশে মৃতের তালিকায় শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে একবছরে মৃত্যু হয়েছে ২,২১৮ জনের। আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিহারে মৃতের সংখ্যা ১,০৫৭ জন। মধ্যপ্রদেশে মৃত্যু ৫১৮ জনের, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে (কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ) ৪৪২ জন। তারপর যথাক্রমে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড। পাশাপাশি ২০২৪ সালে মহিলা কমিশনের কাছে পণ সংক্রান্ত নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৪৩৮৩টি।

 

ওই বছরেই ২৯২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হয়। এছাড়া ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত বছরে গড়ে প্রায় ৭,‌০০০ মহিলার মৃত্যু হয়েছে পণের জেরে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এক বছরে ৭,০০০ মহিলার মৃত্যু ও এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হলেও ৪,৫০০টি মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে। অর্থাৎ ৬৪ শতাংশ। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার আরও কম। তা ১০ শতাংশের নিচে। কিছু কিছু রাজ্যে তা মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ।

 

উল্লেখ্য, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে হিন্দু, মুসলিম সব সমাজেই পণ-প্রথা গার্হস্থ্য হিংসার অন্যতম এক কারণ৷ যদিও মুসলিম ধর্মে পণপ্রথা নিষিদ্ধ৷

 

তবে আইনত নিষিদ্ধ হলেও এই কুপ্রথা এক সামাজিক সংক্রমণের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এখানে ধনী-দরিদ্র , শিক্ষিত-অশিক্ষিত বা শহর-গ্রামের প্রশ্ন নেই৷ মানুষের অর্থলোলুপতাই একমাত্র কারণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।