০৭ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেলেঙ্গানায় ভোটার তালিকার ছবির অপব্যবহারের অভিযোগ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার
  • / 295

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন ভোটদাতার ছবি সহ যাবতীয় তথ্য ২০১৯ সালে তেলেঙ্গানা সরকারকে দিয়েছিল। তেলেঙ্গানা সরকার আবার সেইসব তথ্য একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে দেয় পেনশনভোগীরা জীবিত রয়েছেন কিনা তা যাচাই করার জন্য।

ভোটারতালিকা এক কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার, যা কমিশনের এক্তিয়ারে থাকে এবং তা কমিশনের অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারে না। টি আর এস যখন তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায় ছিল তখনই রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করে এবং কমিশন সেই অনুমতির মান্যতা দেয়।

আরও পড়ুন: দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে চান রাহুল , বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত’র

এস কিউ মাসুদ নামে এক তথ্যাধিকারকর্মী তেলেঙ্গানা সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকে আবেদন করে এই তথ্য পেয়েছেন। যে বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে এইসব তথ্য দেওয়া হয়েছিল সেই সংস্থাটি হায়দরাবাদের। নাম পসিডেক্স টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেড। ওই সংস্থা চারটি ওয়েব পরিষেবা চালু করে। সেগুলিকে নির্বাচন কমিশনের এপিক তথ্য নিয়ে তেলেঙ্গানা সরকারের টি অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করে। টি অ্যাপের মাধ্যমে তেলেঙ্গানা সরকার পেনশনভোগীরা জীবিত কিনা তা যাচাইয়ের কাজ করত।

আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধির অভিযোগকে ‘ভুল ও ভিত্তিহীন’ বললো নির্বাচন কমিশন

ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি টি বেঙ্কটেশ্বর রাও বলেছেন, প্রকল্পটির নকশা এবং মালিকানা ছিল তেলেঙ্গানা সরকারের। কী তথ্য ব্যবহার করা হবে তাও ঠিক করেছেন রাজ্য সরকারই। আমাদের ওই তথ্য জানার কোনও এক্তিয়ার ছিল না। অন্যদিকে ওই সংস্থার সিইও বেঙ্কট রেড্ডি বলেছেন, আমি যতদূর জানি ওই কাজে কমিশনের তথ্য ব্যবহার করা হয় নি। তাছাড়া টি অ্যাপ আমরা বানাই নি।

আরও পড়ুন: Bihar SIR-এ কোনও অসঙ্গতি পেলেই, পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হবে: Supreme Court

অন্য সংস্থা বানিয়েছে। আমরা যাচাইয়ের কাজ সহজ করতে কিছু ভূমিকা পালন করেছি।তবে রিপোর্টার্স কালেকটিভ সংস্থার তদন্ত বলছে, পসিডেক্স অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসের সাহায্য নিয়ে পেনশনভোগীদের ছবির সঙ্গে তাঁদের এপিক কার্ডে দেওয়া ছবি মিলিয়ে দেখার কাজ করেছিল।

২০২০ সালে পুরভোটের সময়ে ১০টি বুথে ভোটারদের মুখাবয়বের যাচাই করার কাজে পেনশনভোগীরা জীবিত কিনা যাচাইয়ের তথ্য কাজে লাগানো হয়। যেটাকে বলা হত রিয়েল টাইম ডেটা অথেনটিকেশন ইনিশিয়েটিভ।

একই তথ্য আবার পরে অনলাইনে ডিগ্রি কোর্সের পড়ুয়াদের মুখাবয়ব যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো হয়। এই বছরের ২৫ আগস্ট সমাজকর্মী শ্রীনিবাস কোদালি তেলেঙ্গানার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ করেন যে, ভোটারতালিকার ছবি এবং নাম রাজ্য বে আইনি ভাবে একাধিক কাজে মুখাবয়ব যাচাইয়ের জন্য ব্যবহার করেছে।

রাজ্য সরকার যে রিয়াল টাইম ডেটা অথেনটিকেশন ইনিশিয়েটিভ নামে সফটওয়্যার করেছে তা সর্বত্রই ব্যবহৃত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনই বা তেলেঙ্গানা সরকারকে এইসব তথ্য দিল কেন?

তাঁর অনুমান, ২০১৫ সালে আধার এবং সচিত্র ভোটার কার্ড এর মধ্যে সংযোগ সাধন করতে গিয়েই কমিশন তথ্য অন্য রাজ্যকে দেওয়া শুরু করে। তা ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার মেনে নেন।

কোদালি দাবি করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৫ সালে আধার এবং ভোটার কার্ড লিঙ্কের ব্যাপারে যে কথা বলেছিল তা না মেনে নির্বাচন কমিশন কাজ করেছে। এই কারণেই ভোটারদের তথ্য তেলেঙ্গানা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। আর তেলেঙ্গানার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের ব্যর্থতায় ভোটারতালিকার ছবির অপব্যবহার হয়েছে।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

তেলেঙ্গানায় ভোটার তালিকার ছবির অপব্যবহারের অভিযোগ

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন ভোটদাতার ছবি সহ যাবতীয় তথ্য ২০১৯ সালে তেলেঙ্গানা সরকারকে দিয়েছিল। তেলেঙ্গানা সরকার আবার সেইসব তথ্য একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে দেয় পেনশনভোগীরা জীবিত রয়েছেন কিনা তা যাচাই করার জন্য।

ভোটারতালিকা এক কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার, যা কমিশনের এক্তিয়ারে থাকে এবং তা কমিশনের অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবহার করতে পারে না। টি আর এস যখন তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায় ছিল তখনই রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করে এবং কমিশন সেই অনুমতির মান্যতা দেয়।

আরও পড়ুন: দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে চান রাহুল , বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত’র

এস কিউ মাসুদ নামে এক তথ্যাধিকারকর্মী তেলেঙ্গানা সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকে আবেদন করে এই তথ্য পেয়েছেন। যে বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে এইসব তথ্য দেওয়া হয়েছিল সেই সংস্থাটি হায়দরাবাদের। নাম পসিডেক্স টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেড। ওই সংস্থা চারটি ওয়েব পরিষেবা চালু করে। সেগুলিকে নির্বাচন কমিশনের এপিক তথ্য নিয়ে তেলেঙ্গানা সরকারের টি অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করে। টি অ্যাপের মাধ্যমে তেলেঙ্গানা সরকার পেনশনভোগীরা জীবিত কিনা তা যাচাইয়ের কাজ করত।

আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধির অভিযোগকে ‘ভুল ও ভিত্তিহীন’ বললো নির্বাচন কমিশন

ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি টি বেঙ্কটেশ্বর রাও বলেছেন, প্রকল্পটির নকশা এবং মালিকানা ছিল তেলেঙ্গানা সরকারের। কী তথ্য ব্যবহার করা হবে তাও ঠিক করেছেন রাজ্য সরকারই। আমাদের ওই তথ্য জানার কোনও এক্তিয়ার ছিল না। অন্যদিকে ওই সংস্থার সিইও বেঙ্কট রেড্ডি বলেছেন, আমি যতদূর জানি ওই কাজে কমিশনের তথ্য ব্যবহার করা হয় নি। তাছাড়া টি অ্যাপ আমরা বানাই নি।

আরও পড়ুন: Bihar SIR-এ কোনও অসঙ্গতি পেলেই, পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হবে: Supreme Court

অন্য সংস্থা বানিয়েছে। আমরা যাচাইয়ের কাজ সহজ করতে কিছু ভূমিকা পালন করেছি।তবে রিপোর্টার্স কালেকটিভ সংস্থার তদন্ত বলছে, পসিডেক্স অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসের সাহায্য নিয়ে পেনশনভোগীদের ছবির সঙ্গে তাঁদের এপিক কার্ডে দেওয়া ছবি মিলিয়ে দেখার কাজ করেছিল।

২০২০ সালে পুরভোটের সময়ে ১০টি বুথে ভোটারদের মুখাবয়বের যাচাই করার কাজে পেনশনভোগীরা জীবিত কিনা যাচাইয়ের তথ্য কাজে লাগানো হয়। যেটাকে বলা হত রিয়েল টাইম ডেটা অথেনটিকেশন ইনিশিয়েটিভ।

একই তথ্য আবার পরে অনলাইনে ডিগ্রি কোর্সের পড়ুয়াদের মুখাবয়ব যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো হয়। এই বছরের ২৫ আগস্ট সমাজকর্মী শ্রীনিবাস কোদালি তেলেঙ্গানার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ করেন যে, ভোটারতালিকার ছবি এবং নাম রাজ্য বে আইনি ভাবে একাধিক কাজে মুখাবয়ব যাচাইয়ের জন্য ব্যবহার করেছে।

রাজ্য সরকার যে রিয়াল টাইম ডেটা অথেনটিকেশন ইনিশিয়েটিভ নামে সফটওয়্যার করেছে তা সর্বত্রই ব্যবহৃত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনই বা তেলেঙ্গানা সরকারকে এইসব তথ্য দিল কেন?

তাঁর অনুমান, ২০১৫ সালে আধার এবং সচিত্র ভোটার কার্ড এর মধ্যে সংযোগ সাধন করতে গিয়েই কমিশন তথ্য অন্য রাজ্যকে দেওয়া শুরু করে। তা ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার মেনে নেন।

কোদালি দাবি করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৫ সালে আধার এবং ভোটার কার্ড লিঙ্কের ব্যাপারে যে কথা বলেছিল তা না মেনে নির্বাচন কমিশন কাজ করেছে। এই কারণেই ভোটারদের তথ্য তেলেঙ্গানা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। আর তেলেঙ্গানার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের ব্যর্থতায় ভোটারতালিকার ছবির অপব্যবহার হয়েছে।