১০ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ: ভারতীয় চা রফতানি নিয়ে উদ্বিগ্ন চা ব্যবসায়ীরা

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার
  • / 196

ইন্তেখাব আলম: গত কয়েকদিন ধরেই ইসরাইল এবং ইরান যুদ্ধপরিস্থিতির কারনে ক্রমশ অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্য প্রাচ্য। আর ইরান-ইসরাইল দ্বন্দ্বের রেশ পড়েছে ভারতের রফতানি বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত বাসমতি চাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং চা রফতানি করে থাকে। বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলির পাশাপাশি ইরাণে চা রফতানিতে ভারতের এক বড় বাজার রয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে চলা ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতির ফলে ভারত থেকে ইরানে চা রফতানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে ভারতের চা রফতানি প্রতিষ্ঠানগুলি।

মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি দীর্ঘস্থায়ী হলে দক্ষিণ ভারতের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলার চা শিল্প।চলতি বছরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এমনিতেই উত্তরবঙ্গে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রথম ফ্লাশে চা পাতা সংগ্রহের পরিমান অনেকটাই কমেছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছরেও তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বৃষ্টিপাতে খামতির জেরে ১০৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন কম হয়েছিল দার্জিলিং, ডুয়ার্স সহ উত্তরবঙ্গের চা বাগানে।

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের আবহে ইরান সহ মধ্য প্রাচ্যে চা রফতানিতে ভাটার আশঙ্কা প্রকাশ করে দক্ষিণ ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় চা রপ্তানিকারক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতের চা রফতানিতে তার প্রভাব পড়বে। সাধারণত ইরানের ক্রেতারা বার্ষিক ৩০-৩৫ মিলিয়ন কেজি চা উত্তর ভারত থেকে ক্রয় করেন। কুন্নুরের চা এক্সপোর্টার লক্ষ্মণন চেত্তিয়ার জানান, ‘মধ্যপ্রাচ্য, ইরান, ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ভারতীয় চা রফতানির পরিমান প্রায় ৪০ শতাংশ। ইসরাইল এবং ইরানের সাম্প্রতিক ঘটনা কেবল শুধু চা রফতানিতেই প্রভাব ফেলবে না, বরং লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল ব্যবহার করে এমন দেশগুলিতেও প্রভাব ফেলবে।’

আরও পড়ুন: হরমুজ প্রণালীতে ইরানের মাইন পাতার প্রস্তুতি, চরম উদ্বেগে আমেরিকা!

ইসরাইল-ইরান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জেরে ভারত থেকে ইরান সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে চা রফতানি ব্যবসা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসসিয়েশনের চেয়ারম্যান হেমন্ত বাঙ্গুর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘ভারত থেকে ইরানে চা রফতানির ক্ষেত্রে কোপ পরতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই নিলামের মাধ্যমে চা কেনার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন টি এক্সপোর্টাররা। এর ফলে গত কয়েকদিনে অর্থডক্স চা বিক্রির পরিমান এবং দাম দুটোয় কমেছে শতাংশের নিরিখে।’

আরও পড়ুন: গাজায় ক্যাফে, স্কুল ও ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯৫, আহত বহু: বাড়ছে মানবিক বিপর্যয়

অন্যদিকে ইন্ডিয়ান টি এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া জানান, ‘ভারত থেকে ইরানে চা রফতানি হয় ৩৫ মিলিয়ন কেজি। কিন্তু গত কয়েকদিনে ইরান-ইসরাইলের ভু-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের দেশে অর্থোডক্স চা বিক্রির বাজার কমেছে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ শতাংশ। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে উত্তর ভারত, দক্ষিণের রাজ্যগুলির পাশাপাশি বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্প।’

আরও পড়ুন: “জাতি হিসাবে গর্ববোধই অধিক মূল্যবান”, শহিদদের জানাজায় ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির মন্তব্য

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ: ভারতীয় চা রফতানি নিয়ে উদ্বিগ্ন চা ব্যবসায়ীরা

আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার

ইন্তেখাব আলম: গত কয়েকদিন ধরেই ইসরাইল এবং ইরান যুদ্ধপরিস্থিতির কারনে ক্রমশ অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্য প্রাচ্য। আর ইরান-ইসরাইল দ্বন্দ্বের রেশ পড়েছে ভারতের রফতানি বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত বাসমতি চাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং চা রফতানি করে থাকে। বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলির পাশাপাশি ইরাণে চা রফতানিতে ভারতের এক বড় বাজার রয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে চলা ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতির ফলে ভারত থেকে ইরানে চা রফতানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে ভারতের চা রফতানি প্রতিষ্ঠানগুলি।

মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি দীর্ঘস্থায়ী হলে দক্ষিণ ভারতের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলার চা শিল্প।চলতি বছরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এমনিতেই উত্তরবঙ্গে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রথম ফ্লাশে চা পাতা সংগ্রহের পরিমান অনেকটাই কমেছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছরেও তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বৃষ্টিপাতে খামতির জেরে ১০৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন কম হয়েছিল দার্জিলিং, ডুয়ার্স সহ উত্তরবঙ্গের চা বাগানে।

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের আবহে ইরান সহ মধ্য প্রাচ্যে চা রফতানিতে ভাটার আশঙ্কা প্রকাশ করে দক্ষিণ ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় চা রপ্তানিকারক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতের চা রফতানিতে তার প্রভাব পড়বে। সাধারণত ইরানের ক্রেতারা বার্ষিক ৩০-৩৫ মিলিয়ন কেজি চা উত্তর ভারত থেকে ক্রয় করেন। কুন্নুরের চা এক্সপোর্টার লক্ষ্মণন চেত্তিয়ার জানান, ‘মধ্যপ্রাচ্য, ইরান, ইরাক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ভারতীয় চা রফতানির পরিমান প্রায় ৪০ শতাংশ। ইসরাইল এবং ইরানের সাম্প্রতিক ঘটনা কেবল শুধু চা রফতানিতেই প্রভাব ফেলবে না, বরং লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল ব্যবহার করে এমন দেশগুলিতেও প্রভাব ফেলবে।’

আরও পড়ুন: হরমুজ প্রণালীতে ইরানের মাইন পাতার প্রস্তুতি, চরম উদ্বেগে আমেরিকা!

ইসরাইল-ইরান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জেরে ভারত থেকে ইরান সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে চা রফতানি ব্যবসা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসসিয়েশনের চেয়ারম্যান হেমন্ত বাঙ্গুর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘ভারত থেকে ইরানে চা রফতানির ক্ষেত্রে কোপ পরতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই নিলামের মাধ্যমে চা কেনার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন টি এক্সপোর্টাররা। এর ফলে গত কয়েকদিনে অর্থডক্স চা বিক্রির পরিমান এবং দাম দুটোয় কমেছে শতাংশের নিরিখে।’

আরও পড়ুন: গাজায় ক্যাফে, স্কুল ও ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯৫, আহত বহু: বাড়ছে মানবিক বিপর্যয়

অন্যদিকে ইন্ডিয়ান টি এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া জানান, ‘ভারত থেকে ইরানে চা রফতানি হয় ৩৫ মিলিয়ন কেজি। কিন্তু গত কয়েকদিনে ইরান-ইসরাইলের ভু-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের দেশে অর্থোডক্স চা বিক্রির বাজার কমেছে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ শতাংশ। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে উত্তর ভারত, দক্ষিণের রাজ্যগুলির পাশাপাশি বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্প।’

আরও পড়ুন: “জাতি হিসাবে গর্ববোধই অধিক মূল্যবান”, শহিদদের জানাজায় ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির মন্তব্য