০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক পরিবার ফোরাম : পরিবার কাঠামোকে রক্ষা করার আহ্বান আহ্বান এরদোগানের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 180

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পরিবার ফোরাম শেষ হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, যেখানে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের মুখে প্রথাগত পরিবার কাঠামোকে রক্ষা ও শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন তুরস্কের  প্রেসিডেন্ট এরদোগান। ‘বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের মুখে পরিবারকে সুরক্ষা ও শক্তিশালীকরণ’ শিরোনামে আয়োজিত এই ফোরাম ছিল পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে তুরস্কের অবস্থান তুলে ধরার এক শক্তিশালী মঞ্চ।

সমাপ্তি ভাষণে এরদোগান বলেন, পরিবার মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি এতটাই মূল্যবান ও পবিত্র যে অন্য কোনো সম্পর্ক বা প্রতিষ্ঠান একে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, তযে সমাজে পরিবার ভেঙে পড়ে, সেই সমাজ অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়। তাই পরিবারকে রক্ষা করা মানে মানবতাকে রক্ষা করা।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কোনও সাইকস-পাইকট চুক্তি নয়: এরদোগান

এরদোগান সতর্ক করেন, বিশ্বায়ন, আধুনিকতা এবং ডিজিটাল জীবনযাপন আমাদের প্রথাগত পরিবার কাঠামোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। যতই জীবন ডিজিটাল হচ্ছে, ততই পরিবারসহ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলো হারিয়ে ফেলছে তাদের গুরুত্ব, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ! ফোনে উদ্বেগ প্রকাশ এরদোগান

তিনি তুরস্কের বর্তমান জন্মহারের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির প্রজনন হার নেমে এসেছে ১.৪৮-এ, যেখানে প্রজন্ম টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় হার ২.১। এরদোগান একে বিপর্যয়দ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আমরা যদি এখনই ব্যবস্থা না নিই, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমাজিক ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ফের একে পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন এরদোগান

এই সংকট মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, ২০২৬ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সময়কে ‘পরিবার ও জনসংখ্যা দশক’ হিসেবে পালন করা হবে। এই দশকে পরিবারকে কেন্দ্র করে শিক্ষা, নগর পরিকল্পনা, ও সামাজিক নীতিতে ব্যাপক সংস্কার আনা হবে।

ফোরামের আলোচনাগুলোতে উঠে আসে আধুনিক সমাজে পরিবার প্রতিষ্ঠান যেভাবে হুমকির মুখে পড়ছে, তার বিস্তারিত চিত্র।

চারটি মূল প্যানেল আলোচনায় ছিল-

প্রথমত, উচ্চ মুনাফার পেছনের মূল্য: ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রভাব।

দ্বিতীয়ত, কল্পনার বিপরীতে বাস্তব: সংস্কৃতি, শিল্প ও গণমাধ্যমে পরিবারের প্রতিচ্ছবি,

তৃতীয়ত, স্ক্রিন যুগে পরিবার

চতুর্থত, জনসংখ্যা বৃদ্ধির মিথ: কিভাবে একটি বৈশ্বিক এজেন্ডা জন্মহার হ্রাসে ভূমিকা রাখছে ।

এই ফোরামের মাধ্যমে তুরস্ক একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিল; পরিবার শুধু সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের প্রধান চালিকাশক্তি। তাই পরিবার রক্ষা শুধু সাংস্কৃতিক দায়িত্ব নয়, এটি এখন এক জরুরি রাজনৈতিক অগ্রাধিকারও।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আন্তর্জাতিক পরিবার ফোরাম : পরিবার কাঠামোকে রক্ষা করার আহ্বান আহ্বান এরদোগানের

আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পরিবার ফোরাম শেষ হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, যেখানে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের মুখে প্রথাগত পরিবার কাঠামোকে রক্ষা ও শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন তুরস্কের  প্রেসিডেন্ট এরদোগান। ‘বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের মুখে পরিবারকে সুরক্ষা ও শক্তিশালীকরণ’ শিরোনামে আয়োজিত এই ফোরাম ছিল পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে তুরস্কের অবস্থান তুলে ধরার এক শক্তিশালী মঞ্চ।

সমাপ্তি ভাষণে এরদোগান বলেন, পরিবার মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি এতটাই মূল্যবান ও পবিত্র যে অন্য কোনো সম্পর্ক বা প্রতিষ্ঠান একে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, তযে সমাজে পরিবার ভেঙে পড়ে, সেই সমাজ অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়। তাই পরিবারকে রক্ষা করা মানে মানবতাকে রক্ষা করা।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কোনও সাইকস-পাইকট চুক্তি নয়: এরদোগান

এরদোগান সতর্ক করেন, বিশ্বায়ন, আধুনিকতা এবং ডিজিটাল জীবনযাপন আমাদের প্রথাগত পরিবার কাঠামোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। যতই জীবন ডিজিটাল হচ্ছে, ততই পরিবারসহ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলো হারিয়ে ফেলছে তাদের গুরুত্ব, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ! ফোনে উদ্বেগ প্রকাশ এরদোগান

তিনি তুরস্কের বর্তমান জন্মহারের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির প্রজনন হার নেমে এসেছে ১.৪৮-এ, যেখানে প্রজন্ম টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় হার ২.১। এরদোগান একে বিপর্যয়দ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আমরা যদি এখনই ব্যবস্থা না নিই, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমাজিক ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ফের একে পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন এরদোগান

এই সংকট মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, ২০২৬ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সময়কে ‘পরিবার ও জনসংখ্যা দশক’ হিসেবে পালন করা হবে। এই দশকে পরিবারকে কেন্দ্র করে শিক্ষা, নগর পরিকল্পনা, ও সামাজিক নীতিতে ব্যাপক সংস্কার আনা হবে।

ফোরামের আলোচনাগুলোতে উঠে আসে আধুনিক সমাজে পরিবার প্রতিষ্ঠান যেভাবে হুমকির মুখে পড়ছে, তার বিস্তারিত চিত্র।

চারটি মূল প্যানেল আলোচনায় ছিল-

প্রথমত, উচ্চ মুনাফার পেছনের মূল্য: ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রভাব।

দ্বিতীয়ত, কল্পনার বিপরীতে বাস্তব: সংস্কৃতি, শিল্প ও গণমাধ্যমে পরিবারের প্রতিচ্ছবি,

তৃতীয়ত, স্ক্রিন যুগে পরিবার

চতুর্থত, জনসংখ্যা বৃদ্ধির মিথ: কিভাবে একটি বৈশ্বিক এজেন্ডা জন্মহার হ্রাসে ভূমিকা রাখছে ।

এই ফোরামের মাধ্যমে তুরস্ক একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিল; পরিবার শুধু সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের প্রধান চালিকাশক্তি। তাই পরিবার রক্ষা শুধু সাংস্কৃতিক দায়িত্ব নয়, এটি এখন এক জরুরি রাজনৈতিক অগ্রাধিকারও।