০৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবান্ন অভিযানের ডাক ঘিরে উত্তেজনা, পুলিশের অনুমতি ছাড়াই কর্মসূচি

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
  • / 15

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নার্স নিগ্রহের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হওয়ায় শনিবার (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁদের পাশে থাকবেন ‘অভয়া মঞ্চ’-র সদস্যরা ও একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তবে এই কর্মসূচির জন্য এখনও পর্যন্ত হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট বা লালবাজারের কাছ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ।

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নবান্ন চত্বরে কোনও রকম জমায়েত বা মিছিল করতে দেওয়া হবে না। বিকল্পস্থান হিসেবে পুলিশের তরফে সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড অথবা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ-এর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম জানান, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই নবান্ন অভিযানের খবর মিলেছে। তবে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে— কেউ অনুমতির আবেদন করেননি। তিনি বলেন, নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় BNSS-এর ধারা ১৬৩ অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সেখানে কোনও রকম জমায়েত আইনত বেআইনি বলে বিবেচিত হবে।

আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্তদের “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পে বাড়ি বানিয়ে দেবে নবান্ন

পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্ট-এর স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যে, কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং পুলিশ, সরকারি সম্পত্তি বা কর্মীদের কোনও ক্ষতি করা যাবে না। অতীতে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামক একটি সংগঠন এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। যদিও সেই সংগঠনের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, এবারের নবান্ন অভিযানের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন: ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’-নয়া উদ্যোগ রাজ্য সরকারের

শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্য কোনও সংগঠন এই কর্মসূচির জন্য অনুমতি নেয়নি বলে পুলিশের দাবি। তবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে কয়েকটি সংগঠনকে চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে’, কলকাতা হাইকোর্ট

অন্যদিকে, শনিবারের কর্মসূচি ঘিরে হাওড়া শরৎ সদনে হাই-লেভেল বৈঠক করেছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাইরের জেলা থেকে প্রায় ১৫০০ পুলিশ কর্মী নিয়ে আসা হবে বলে জানা গিয়েছে। উক্ত বৈঠকে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা মাঠে থাকা অফিসারদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।

যদিও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এখনও পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেয়নি, তবে প্রশাসনের তৎপরতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে স্পষ্ট, নবান্ন অভিযানের দিন কঠোর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এই বিষয়ে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহল, মানবাধিকার কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদেরও। প্রশাসনের কড়া অবস্থানের পাশাপাশি স্বজনহারাদের ন্যায়ের লড়াই কতদূর এগোয়, সেটাই এখন দেখার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নবান্ন অভিযানের ডাক ঘিরে উত্তেজনা, পুলিশের অনুমতি ছাড়াই কর্মসূচি

আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নার্স নিগ্রহের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হওয়ায় শনিবার (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁদের পাশে থাকবেন ‘অভয়া মঞ্চ’-র সদস্যরা ও একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তবে এই কর্মসূচির জন্য এখনও পর্যন্ত হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট বা লালবাজারের কাছ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ।

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নবান্ন চত্বরে কোনও রকম জমায়েত বা মিছিল করতে দেওয়া হবে না। বিকল্পস্থান হিসেবে পুলিশের তরফে সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড অথবা রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ-এর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম জানান, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই নবান্ন অভিযানের খবর মিলেছে। তবে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে— কেউ অনুমতির আবেদন করেননি। তিনি বলেন, নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় BNSS-এর ধারা ১৬৩ অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সেখানে কোনও রকম জমায়েত আইনত বেআইনি বলে বিবেচিত হবে।

আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্তদের “বাংলার বাড়ি” প্রকল্পে বাড়ি বানিয়ে দেবে নবান্ন

পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্ট-এর স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যে, কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং পুলিশ, সরকারি সম্পত্তি বা কর্মীদের কোনও ক্ষতি করা যাবে না। অতীতে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামক একটি সংগঠন এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। যদিও সেই সংগঠনের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, এবারের নবান্ন অভিযানের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন: ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’-নয়া উদ্যোগ রাজ্য সরকারের

শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্য কোনও সংগঠন এই কর্মসূচির জন্য অনুমতি নেয়নি বলে পুলিশের দাবি। তবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে কয়েকটি সংগঠনকে চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে’, কলকাতা হাইকোর্ট

অন্যদিকে, শনিবারের কর্মসূচি ঘিরে হাওড়া শরৎ সদনে হাই-লেভেল বৈঠক করেছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাইরের জেলা থেকে প্রায় ১৫০০ পুলিশ কর্মী নিয়ে আসা হবে বলে জানা গিয়েছে। উক্ত বৈঠকে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা মাঠে থাকা অফিসারদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।

যদিও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এখনও পর্যন্ত কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেয়নি, তবে প্রশাসনের তৎপরতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে স্পষ্ট, নবান্ন অভিযানের দিন কঠোর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এই বিষয়ে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহল, মানবাধিকার কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদেরও। প্রশাসনের কড়া অবস্থানের পাশাপাশি স্বজনহারাদের ন্যায়ের লড়াই কতদূর এগোয়, সেটাই এখন দেখার।