রাজ্যের আলু চাষিদের জন্য সুখবর, বিমার প্রিমিয়াম কমাল রাজ্য

- আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
- / 15
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: শীতকাল আসতে না আসতেই শুরু হয়ে যায় আলু চাষের তোরজোড়। আর এবার শীতের শুরুতেই রাজ্যের আলু চাষিদের জন্য সুখবর। রবি মরশুমে আলু চাষে বিমার প্রিমিয়াম কমিয়ে দিল রাজ্য সরকার। আগে আলুর বিমা করাতে গেলে একর প্রতি ৪.৮৫ শতাংশ হারে প্রিমিয়াম জমা দিতে হতো চাষিকে। এবছর তা কমিয়ে করা হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। এর ফলে উপকৃত হবেন রাজ্যের কয়েক লক্ষ চাষি।
কৃষিদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, ধান বা অন্যান্য ফসলের বিমা করার ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমা দিতে না হলেও আলুর ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমা দিতে হয় কৃষককে। এতদিন এক একর আলু জমিতে বিমা করাতে গেলে ৪.৮৫ শতাংশ হারে মোট ৩ হাজার ৮৮০ টাকা প্রিমিয়াম দিতে হতো একজন কৃষককে। অর্থাৎ, এক শতক জমিতে প্রিমিয়ামের পরিমাণ ছিল ৩৮ টাকা ৮০ পয়সা।
এক বিঘাতে পড়ত ১ হাজার ২৮০ টাকা। কিন্তু এবছর এক একর জমিতে মাত্র ৩ শতাংশ হারে ২ হাজার ৪০০ টাকা প্রিমিয়াম দিতে হবে কৃষকদের। অর্থাৎ, শতক প্রতি মাত্র ২৪ টাকা প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে চাষিকে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা দুলাল দাস অধিকারী বলেন, ‘চাষিদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আরও বেশি কৃষককে বিমার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
কৃষি অধিকারিকরা জানাচ্ছেন, আলুর ক্ষতিপূরণের বিষয়টিকে মোট তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক, ফসল লাগানোর পরেই বা লাগাতে না পারার জন্য ক্ষতিপূরণ দুই, ফসল লাগানোর পর রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, খরা বা পোকা লেগে ফসল নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ। তিন, ফসল তোলার পর আশানুরূপ ফলন না হলে ক্ষতিপূরণ।
এই তিনটি ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অন্যদিকে, বোরো ধানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে, গত বছর আলুর ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল কৃষকদের তরফে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করেছে বিমা সংস্থা।
এবছর কৃষকদের মুখ থেকে এমন অভিযোগ যাতে শুনতে না হয়, তার জন্য সরকারের তরফে আরও বেশি করে মনিটরিং করা হবে বলে জানা গিয়েছে। গত বছর শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই ৭৩ হাজার ১৫৬ জন আলুচাষিকে ৯০ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে বিমা সংস্থা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই রবি ফসলের শস্যবিমার আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হবে। শীঘ্রই প্রতিটি জেলার ব্লকে ব্লকে বিমার ফর্ম পৌঁছে যাবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলুর বিমার জন্য আবেদন করতে পারবেন কৃষকরা। বোরো ধানের বিমার জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে রাজ্যের আলু চাষিদের মধ্যে খুশির হাওয়া।