পুবের কলম ওয়েবডেস্ক, মালদা: নিজের বিয়ে রুখে জেলায় দৃষ্টান্ত রতুয়া-২ ব্লকের হাবিবা খাতুন। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সাহসী পদক্ষেপের জন্য বুধবার স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে তার সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়। বড় হয়ে হাবিবা পুলিশ আধিকারিক হতে চায় বলে সে জানিয়েছে। এখন মন দিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। রতুয়া-২ ব্লকের মহারাজপুর কেফাতুল্লাহ হাই স্কুলের ছাত্রী সে।
নিজের বিয়ে নিজেই আটকে জেলায় এখন সে দৃষ্টান্ত। স্কুলে বহু বছর ধরে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ওপর সচেতনতা মূলক শিবির হয়ে থাকে। হাবিবা সক্রিয়ভাবে শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি কন্যাশ্রী ক্লাবের সঙ্গেও যুক্ত। গত ৩ সেপ্টেম্বর তার অমতে বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাবা-মা। আপত্তি করলেও কেউ শোনেন নি তার কথা।
এদিকে ছোট বলে বাড়ির বিরুদ্ধেও সরাসরি যেতে পারে নি সে। এদিকে কোনও উপায় না দেখে শেষে বিয়ের দিনই ছুটে পালিয়ে এসেছিল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নবিদা আঞ্জুমের কাছে। সঙ্গে কন্যাশ্রী ক্লাবের কিছু ছাত্রীও ছিল। ওই সময় দিদিমণি বাড়িতে ছিলেন না। ততক্ষণ ঠাঁই তাঁরা দিদিমণির বাড়িতে অপেক্ষা করেছে।

পরে দিদিমণি বাড়ি ফিরে আসতেই সব খুলে বলে হাবিবা। বাড়িতে লোক পাঠিয়ে বুঝিয়েও কোনও কাজ হয় নি। তারপরেও গোপনে বিয়ের আয়োজন করে যেতে থাকে পরিবারের সদস্যরা। শেষে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা।
দ্রুত বাড়িতে ছুটে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বোঝান রতুয়া-২ ব্লকের বিডিও শেখর শেরপা এবং পুকুরিয়া থানার ওসি মৃণাল চক্রবর্তী। তাতে কিছুটা কাজ হয়। তারপর থেকে বিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
হাবিবার সাহসিকতার জন্য বুধবার স্কুলে সংবর্ধানর ব্যবস্থা করা হয়। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস জানান, হাবিবা গোটা জেলার দৃষ্টান্ত। বাল্য বিবাহ নিয়ে স্কুলে স্কুলে বিভিন্ন সচেতনতামূলক শিবির থেকে অনুষ্ঠান করানো হয়ে থাকে। প্রত্যন্ত এলাকায় বাল্য বিবাহ নিয়ে পড়ুয়ারা যে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে, তার উদাহরণ হাবিবা। সে এখন মন দিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। হাবিবা বড় হয়ে একজন পুলিশ আধিকারিক হয়ে সমাজের কাজ করতে চায়।






























