০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সংশোধনের দাবি হামাসের

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার
  • / 84

রবিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সমঝোতার চূড়ান্ত আলটিমেটাম ট্রাম্পের

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধ দুই বছরে গড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে একসময়ের জনবহুল ভূখণ্ড, নিহত হয়েছে লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশু। এমন সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ করেছেন ২০ দফার এক তথাকথিত শান্তি পরিকল্পনা, যা মূলত ইসরাইলের শর্ত পূরণেই বেশি মনোযোগী। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনাটিকে সমর্থন জানিয়েছেন, অথচ যাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে; গাজার ফিলিস্তিনিদের;তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শই করা হয়নি।

হামাসের জন্য এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘খারাপ আর সবচেয়ে খারাপের’ মধ্যে বেছে নেওয়ার মতো অবস্থা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাস সরাসরি ‘না’ বললে ইসরাইল আরও বিধ্বংসী হামলা চালাবে। তাই দলটি হয়তো বলবে, ‘হ্যাঁ, তবে কিছু পরিবর্তন চাই।’ বিশেষত, পরিকল্পনার মধ্যে যে শর্তটি সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য তা হল সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ;যা ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রামের মৌলিক অস্তিত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এদিকে শুক্রবার ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, রবিবার মার্কিন সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চুক্তি না হলে ‘নরকের আগুন নেমে আসবে হামাসের ওপর।’ এই ভাষা কেবল যুদ্ধের হুমকি বাড়িয়ে দিচ্ছে, অথচ ফিলিস্তিনি মানুষের নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কিংবা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রশ্নে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।

আরও পড়ুন: অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হামাস হয়তো আলোচনার টেবিলে বসবে, কিন্তু তাদের ভেতরে দ্বন্দ্ব আছে। দোহা ও ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত নেতারা তুলনামূলক বাস্তববাদী হলেও গাজায় সামরিক শাখা লড়াই চালিয়ে যেতে চায়। ইসরাইলের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ, নির্বিচারে বিমান হামলা, অবকাঠামো ধ্বংস এবং আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর অবাধ সমর্থন;সবই প্রমাণ করে এই চুক্তি ন্যায়বিচার নয়, বরং একতরফা চাপ।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় শহিদ হামাসের মুখপাত্র

গাজার ২৩ লাখ মানুষের অধিকাংশই বারবার বাস্তুচ্যুত, হাসপাতাল ভেঙে পড়েছে, স্কুল ধ্বংসস্তূপে পরিণত। এমন প্রেক্ষাপটে শান্তির নামে যদি কেবল দমন-পীড়নের নতুন কৌশল চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটি প্রকৃত শান্তি নয়। ফিলিস্তিনের মানুষের ন্যায্য অধিকার, স্বাধীন রাষ্ট্র আর মর্যাদাপূর্ণ জীবনের দাবিই হতে হবে যে-কোনো সমাধানের ভিত্তি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সংশোধনের দাবি হামাসের

আপডেট : ৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার

রবিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সমঝোতার চূড়ান্ত আলটিমেটাম ট্রাম্পের

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধ দুই বছরে গড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে একসময়ের জনবহুল ভূখণ্ড, নিহত হয়েছে লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশু। এমন সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ করেছেন ২০ দফার এক তথাকথিত শান্তি পরিকল্পনা, যা মূলত ইসরাইলের শর্ত পূরণেই বেশি মনোযোগী। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনাটিকে সমর্থন জানিয়েছেন, অথচ যাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে; গাজার ফিলিস্তিনিদের;তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শই করা হয়নি।

হামাসের জন্য এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘খারাপ আর সবচেয়ে খারাপের’ মধ্যে বেছে নেওয়ার মতো অবস্থা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাস সরাসরি ‘না’ বললে ইসরাইল আরও বিধ্বংসী হামলা চালাবে। তাই দলটি হয়তো বলবে, ‘হ্যাঁ, তবে কিছু পরিবর্তন চাই।’ বিশেষত, পরিকল্পনার মধ্যে যে শর্তটি সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য তা হল সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ;যা ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রামের মৌলিক অস্তিত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: ৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত দিল হামাস

এদিকে শুক্রবার ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, রবিবার মার্কিন সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চুক্তি না হলে ‘নরকের আগুন নেমে আসবে হামাসের ওপর।’ এই ভাষা কেবল যুদ্ধের হুমকি বাড়িয়ে দিচ্ছে, অথচ ফিলিস্তিনি মানুষের নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কিংবা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রশ্নে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।

আরও পড়ুন: অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের গাজা প্ল্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়াও : Hamas

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হামাস হয়তো আলোচনার টেবিলে বসবে, কিন্তু তাদের ভেতরে দ্বন্দ্ব আছে। দোহা ও ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত নেতারা তুলনামূলক বাস্তববাদী হলেও গাজায় সামরিক শাখা লড়াই চালিয়ে যেতে চায়। ইসরাইলের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ, নির্বিচারে বিমান হামলা, অবকাঠামো ধ্বংস এবং আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর অবাধ সমর্থন;সবই প্রমাণ করে এই চুক্তি ন্যায়বিচার নয়, বরং একতরফা চাপ।

আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় শহিদ হামাসের মুখপাত্র

গাজার ২৩ লাখ মানুষের অধিকাংশই বারবার বাস্তুচ্যুত, হাসপাতাল ভেঙে পড়েছে, স্কুল ধ্বংসস্তূপে পরিণত। এমন প্রেক্ষাপটে শান্তির নামে যদি কেবল দমন-পীড়নের নতুন কৌশল চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটি প্রকৃত শান্তি নয়। ফিলিস্তিনের মানুষের ন্যায্য অধিকার, স্বাধীন রাষ্ট্র আর মর্যাদাপূর্ণ জীবনের দাবিই হতে হবে যে-কোনো সমাধানের ভিত্তি।