২৩ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাইকোর্ট – সুপ্রিম কোর্ট একযোগে এসএসসি পরীক্ষায় দাগিদের আবেদন খারিজ করলো

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 352

মোল্লা জসিমউদ্দিন : এসএসসি তে ঘোষিত দাগিদের আবেদনে বিরক্ত সুপ্রিম কোর্ট, কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না দাগি অযোগ্যরা। স্কুল সার্ভিস কমিশন-এর পরীক্ষায় বসতে চেয়ে তাঁদের করা আবেদন খারিজ করে আরও এক বার তা স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -’একই ধরনের কোনও মামলা আর গ্রহণ করা হবে না’।

এদিন সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ‘-দাগিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা সিবিআইয়ের। তার কী হল?’ অন্য দিকে, পরীক্ষায় বসতে চেয়ে ‘দাগি’দের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টও। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ দাগিদের পরীক্ষায় বসতে চাওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয়।

আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের আগাম জামিন বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

রাজ্যকেও ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। দাগিদের করা মামলার শুনানিতে কেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) হাইকোর্টে উপস্থিত হচ্ছেন? সেই প্রশ্ন তোলে আদালত। দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্ন, রায় ঘোষণার পরেও আইনজীবীরা দাগিদের হয়ে কী ভাবে আদালতে আবেদন করছেন? সুপ্রিম কোর্ট জানায় -’বার বার বলেছি দাগিরা কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। তার পরেও একই আবেদন নিয়ে এত মামলা কেন? যা বলার রায়ে আমরা তা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি।এই অযোগ্যদের জন্য অনেকের জীবন নষ্ট হয়েছে।’

আরও পড়ুন: এসআইআর শেষ পর্যন্ত দেখবে আদালত: এসআইআর নিয়ে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। শনিবার ১,৮০৬ জন ‘দাগি’ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। তাঁদের মধ্যে যাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অ্যাডমিট কার্ডও পরে বাতিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছিল, এক জন দাগিও যাতে নতুন নিয়োগে অংশ নিতে না পারেন। তা মেনেই এই পদক্ষেপ করেছিল কমিশন। গত সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এসএসসি-র কাছে জানতে চান, -’সব দাগি অযোগ্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে তো? এর প্রতুত্তরে এসএসসি-র আইনজীবী বলেন, ‘’হ্যাঁ, বাদ দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে আজ ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

তবে নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ‘দাগি’ অযোগ্যরা। তাঁদের মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি রাজ্যের উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এসএসসির তালিকায় হস্তক্ষেপ করার জন্য এটি উপযুক্ত মামলা নয়। পরীক্ষায় বসতে পারবেন না মামলাকারী ‘দাগি’রা। এই সংক্রান্ত ২৪টি মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ‘দাগী’ অযোগ্যদের আগে পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তা বাতিল করে এসএসসি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা কেন এর দায় নেবেন না? সেই প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট এদিন এই ধরনের মামলার শুনানি পর্বে জানায় -’অযোগ্যদের জন্য অনেক জীবন নষ্ট হয়েছে।’ সিবিআইকে কে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন -’ ‘দাগিদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়নি কেন?’ ‘বার বার বলছি দাগিরা কোনওভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।’রায়ের পরও ফের কেন আবেদন, সেই প্রশ্ন তুলে দু’টি মামলাই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।গত শনিবার অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে কমিশন।

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, আগামী ৭ ও ১৪ তারিখ যে নতুন নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে তাতে প্রকাশিত তালিকা, এমনকি প্রকাশিত তালিকার বাইরেও যদি অযোগ্য কেউ থাকেন, তাঁরা কোনওভাবেই বসতে পারবেন না। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।কিন্তু তারপরও অন্তত পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবেদন করেন অযোগ্যদের একাংশ। সেই পদক্ষেপ নিয়েই ভর্ৎসনা করা হয় বৃহস্পতিবার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হাইকোর্ট – সুপ্রিম কোর্ট একযোগে এসএসসি পরীক্ষায় দাগিদের আবেদন খারিজ করলো

আপডেট : ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন : এসএসসি তে ঘোষিত দাগিদের আবেদনে বিরক্ত সুপ্রিম কোর্ট, কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না দাগি অযোগ্যরা। স্কুল সার্ভিস কমিশন-এর পরীক্ষায় বসতে চেয়ে তাঁদের করা আবেদন খারিজ করে আরও এক বার তা স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -’একই ধরনের কোনও মামলা আর গ্রহণ করা হবে না’।

এদিন সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ‘-দাগিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা সিবিআইয়ের। তার কী হল?’ অন্য দিকে, পরীক্ষায় বসতে চেয়ে ‘দাগি’দের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টও। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ দাগিদের পরীক্ষায় বসতে চাওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয়।

আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের আগাম জামিন বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

রাজ্যকেও ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। দাগিদের করা মামলার শুনানিতে কেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) হাইকোর্টে উপস্থিত হচ্ছেন? সেই প্রশ্ন তোলে আদালত। দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্ন, রায় ঘোষণার পরেও আইনজীবীরা দাগিদের হয়ে কী ভাবে আদালতে আবেদন করছেন? সুপ্রিম কোর্ট জানায় -’বার বার বলেছি দাগিরা কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। তার পরেও একই আবেদন নিয়ে এত মামলা কেন? যা বলার রায়ে আমরা তা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি।এই অযোগ্যদের জন্য অনেকের জীবন নষ্ট হয়েছে।’

আরও পড়ুন: এসআইআর শেষ পর্যন্ত দেখবে আদালত: এসআইআর নিয়ে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। শনিবার ১,৮০৬ জন ‘দাগি’ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। তাঁদের মধ্যে যাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অ্যাডমিট কার্ডও পরে বাতিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছিল, এক জন দাগিও যাতে নতুন নিয়োগে অংশ নিতে না পারেন। তা মেনেই এই পদক্ষেপ করেছিল কমিশন। গত সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এসএসসি-র কাছে জানতে চান, -’সব দাগি অযোগ্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে তো? এর প্রতুত্তরে এসএসসি-র আইনজীবী বলেন, ‘’হ্যাঁ, বাদ দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে আজ ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

তবে নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ‘দাগি’ অযোগ্যরা। তাঁদের মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি রাজ্যের উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এসএসসির তালিকায় হস্তক্ষেপ করার জন্য এটি উপযুক্ত মামলা নয়। পরীক্ষায় বসতে পারবেন না মামলাকারী ‘দাগি’রা। এই সংক্রান্ত ২৪টি মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ‘দাগী’ অযোগ্যদের আগে পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তা বাতিল করে এসএসসি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা কেন এর দায় নেবেন না? সেই প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট এদিন এই ধরনের মামলার শুনানি পর্বে জানায় -’অযোগ্যদের জন্য অনেক জীবন নষ্ট হয়েছে।’ সিবিআইকে কে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন -’ ‘দাগিদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়নি কেন?’ ‘বার বার বলছি দাগিরা কোনওভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।’রায়ের পরও ফের কেন আবেদন, সেই প্রশ্ন তুলে দু’টি মামলাই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।গত শনিবার অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে কমিশন।

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, আগামী ৭ ও ১৪ তারিখ যে নতুন নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে তাতে প্রকাশিত তালিকা, এমনকি প্রকাশিত তালিকার বাইরেও যদি অযোগ্য কেউ থাকেন, তাঁরা কোনওভাবেই বসতে পারবেন না। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।কিন্তু তারপরও অন্তত পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবেদন করেন অযোগ্যদের একাংশ। সেই পদক্ষেপ নিয়েই ভর্ৎসনা করা হয় বৃহস্পতিবার।