০২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিহারের ১০ জেলার ভূগর্ভস্থ জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম, নমুনা পাঠানো হল গবেষণাগারে   

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৬ অগাস্ট ২০২২, শনিবার
  • / 38

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বিহারের ভূগর্ভস্থ জলে মিললো উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম। ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিহার সরকার। ইতিমধ্যেই জলের নমুনা সংগ্রহ করে লখনউয়ের গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম মিলেছে রাজ্যের দশটি জেলায়। এই জেলাগুলি হল নালন্দা, নওয়াদা, কাটিহার, মাধেপুরা, বৈশালী, সুপল, ঔরঙ্গাবাদ, গয়া, সারান, জেহানাবাদ।

প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ১০টি জেলায় ১০০টি জলের নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ভূগর্ভস্থ জল বোর্ড(সিজিডাব্লুবি)তে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: চুরির দায়ে চার বালককে মারধর, হাতে দড়ি পরিয়ে ঘোরানো হল গ্রাম

সিজিডাব্লুবি (মধ্য-পূর্বাঞ্চল) আঞ্চলিক পরিচালক ঠাকুর ব্রহ্মানন্দ সিং জানিয়েছেন, পানীয় জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। ইতিমধ্যেই জলের নমুনা সংগ্রহ করে ইউরেনিয়ামের অনুপাত পরিমাপের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে কাপলড প্লাজমা মাস স্পেকট্রোমেট্রি (আইসিপি-এমএস) পদ্ধতির মাধ্যমে পানীয় জলের মধ্যে কতটা ইউরেনিয়াম আছে তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  নালন্দা, নওয়াদা, কাটিহার, মাধেপুরা, বৈশালী, সুপল, ঔরঙ্গাবাদ, গয়া, সারান, জেহানাবাদ থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।  ব্রহ্মানন্দ সিং জানিয়েছন, বিহার সরকারের সিজিডাব্লুবি ও জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া যৌথভাবে এই গবেষণার কাজ করছে।

আরও পড়ুন: বিহারের পূর্ণিয়ায় ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে হত্যা, প্রাণ গেল এক পরিবারের ৫ সদস্যের

রাজ্যের আগের রিপোর্টের সঙ্গে বর্তমান রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এক উদ্যোগ নেওয়ার কথাও পরিকল্পনা করা হয়েছে।   উল্লেখ্য, পানীয় জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি পরিমাপের জন্য ২০১৯-২০ সালে সিজিডাব্লুবি গোটা দেশে অগভীর কুয়ো থেকে ১৪৩৭৭ পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে বিহারের ৬৩৪টি নমুনার মধ্যে ১১টিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। বিহারের সরণ, ভবুয়া, খাগরিয়া, মাধেপুরা, নওয়াদা, শেখপুরা, পূর্ণা, কিষাণগঞ্জ এবং বেগুসরাই থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।পানীয় জলে ভারী ধাতুর ক্ষতিকারক প্রভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিহার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ বলেছেন, ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।

আরও পড়ুন: ‘ভোটবন্দি’! বিহার ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে তীব্র আক্রমণ বিরোধীদের

এই ধরনের জল হাড়ের ক্ষয়, রেনাল ফাংশনের ক্ষতি ও ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অশোক কুমার ঘোষ আরও জানান, গবেষণায় দেখা যায় যে ইউরেনিয়াম একটি কেমো-বিষাক্ত এবং নেফ্রোটক্সিক ভারী ধাতু। এই কেমোটক্সিসিটি বিশেষ করে কিডনি এবং হাড়কে প্রভাবিত করে।  গবেষণায় জানা গেছে, পানীয় জলে ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব বেশিরভাগ উত্তর-পশ্চিম-দক্ষিণ পূর্ব বরাবর এবং গন্ডক নদীর পূর্বে এবং গঙ্গা নদীর দক্ষিণে ঝাড়খণ্ডের দিকে, বিশেষ করে গোপালগঞ্জ সিওয়ান, সরণ, পাটনা, নালন্দা এবং নওয়াদা জেলায় পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এই গবেষণামূলক জার্নালটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউকে) ডেভিড পলিয়া, লরা এ রিচার্ডস, পাটনার মহাবীর ক্যান্সার সংস্থার অশোক কুমার ঘোষ এবং অরুণ কুমার দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিহারের ১০ জেলার ভূগর্ভস্থ জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম, নমুনা পাঠানো হল গবেষণাগারে   

আপডেট : ৬ অগাস্ট ২০২২, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বিহারের ভূগর্ভস্থ জলে মিললো উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম। ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিহার সরকার। ইতিমধ্যেই জলের নমুনা সংগ্রহ করে লখনউয়ের গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম মিলেছে রাজ্যের দশটি জেলায়। এই জেলাগুলি হল নালন্দা, নওয়াদা, কাটিহার, মাধেপুরা, বৈশালী, সুপল, ঔরঙ্গাবাদ, গয়া, সারান, জেহানাবাদ।

প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ১০টি জেলায় ১০০টি জলের নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ভূগর্ভস্থ জল বোর্ড(সিজিডাব্লুবি)তে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: চুরির দায়ে চার বালককে মারধর, হাতে দড়ি পরিয়ে ঘোরানো হল গ্রাম

সিজিডাব্লুবি (মধ্য-পূর্বাঞ্চল) আঞ্চলিক পরিচালক ঠাকুর ব্রহ্মানন্দ সিং জানিয়েছেন, পানীয় জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। ইতিমধ্যেই জলের নমুনা সংগ্রহ করে ইউরেনিয়ামের অনুপাত পরিমাপের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে কাপলড প্লাজমা মাস স্পেকট্রোমেট্রি (আইসিপি-এমএস) পদ্ধতির মাধ্যমে পানীয় জলের মধ্যে কতটা ইউরেনিয়াম আছে তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  নালন্দা, নওয়াদা, কাটিহার, মাধেপুরা, বৈশালী, সুপল, ঔরঙ্গাবাদ, গয়া, সারান, জেহানাবাদ থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।  ব্রহ্মানন্দ সিং জানিয়েছন, বিহার সরকারের সিজিডাব্লুবি ও জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া যৌথভাবে এই গবেষণার কাজ করছে।

আরও পড়ুন: বিহারের পূর্ণিয়ায় ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে হত্যা, প্রাণ গেল এক পরিবারের ৫ সদস্যের

রাজ্যের আগের রিপোর্টের সঙ্গে বর্তমান রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এক উদ্যোগ নেওয়ার কথাও পরিকল্পনা করা হয়েছে।   উল্লেখ্য, পানীয় জলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি পরিমাপের জন্য ২০১৯-২০ সালে সিজিডাব্লুবি গোটা দেশে অগভীর কুয়ো থেকে ১৪৩৭৭ পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে বিহারের ৬৩৪টি নমুনার মধ্যে ১১টিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। বিহারের সরণ, ভবুয়া, খাগরিয়া, মাধেপুরা, নওয়াদা, শেখপুরা, পূর্ণা, কিষাণগঞ্জ এবং বেগুসরাই থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।পানীয় জলে ভারী ধাতুর ক্ষতিকারক প্রভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিহার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ বলেছেন, ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।

আরও পড়ুন: ‘ভোটবন্দি’! বিহার ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে তীব্র আক্রমণ বিরোধীদের

এই ধরনের জল হাড়ের ক্ষয়, রেনাল ফাংশনের ক্ষতি ও ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অশোক কুমার ঘোষ আরও জানান, গবেষণায় দেখা যায় যে ইউরেনিয়াম একটি কেমো-বিষাক্ত এবং নেফ্রোটক্সিক ভারী ধাতু। এই কেমোটক্সিসিটি বিশেষ করে কিডনি এবং হাড়কে প্রভাবিত করে।  গবেষণায় জানা গেছে, পানীয় জলে ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব বেশিরভাগ উত্তর-পশ্চিম-দক্ষিণ পূর্ব বরাবর এবং গন্ডক নদীর পূর্বে এবং গঙ্গা নদীর দক্ষিণে ঝাড়খণ্ডের দিকে, বিশেষ করে গোপালগঞ্জ সিওয়ান, সরণ, পাটনা, নালন্দা এবং নওয়াদা জেলায় পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এই গবেষণামূলক জার্নালটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউকে) ডেভিড পলিয়া, লরা এ রিচার্ডস, পাটনার মহাবীর ক্যান্সার সংস্থার অশোক কুমার ঘোষ এবং অরুণ কুমার দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল।