হিজাব বির্তকে উত্তাল দেশ, ধর্মীয় স্বাধীনতার সপক্ষে কলকাতায় একাধিক মিছিল

- আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার
- / 7
আবদুল ওদুদঃ হিজাব ইস্যুতে গোটা দেশ উত্তাল। তার আঁচ এসে পড়ল তিলোত্তমা কলকাতায়। শুক্রবার শহরে বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জুম্মা নামাযের পর ঐতিহ্যবাহী আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলা ক্যাম্পাস থেকে মাদ্রাসায় ছাত্র ইউনিয়ন, থিওলজি বিভাগে ছাত্র এবং প্রাক্তনীদের উদ্যোগে বিরাট মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

তালতলা ক্যাম্পাস থেকে মিছিলটি ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছয় বিকেল তিনটে নাগাদ। মিছিলে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ পড়ুয়ার বক্তব্য ছিল, গণতান্ত্রিক দেশে আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। কেউ এই স্বাধীনতা হরণ করতে পারে না। হিজাব পরিধান করা নারীদের অধিকার, কিন্তু কোন একটি বিশেষ সম্প্রদায় এই অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। নেতারা বলেন, হিজাব পরার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে কর্নাটক সরকারকে।
এ দিন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা আব্বাসউদ্দিন সরদার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কর্নাটকের আদালত তিন দিনের স্থগিতাদেশ গিয়েছে। তিন দিন পরে যদি হিজাবের পক্ষে রায় না দেয়, তাহলে তারা রাজ্যজুড়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। কলকাতার রাজপথ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। যদি তারাও জানান, এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করা হবে। ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেলে বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিনয়নের প্রাক্তন নেতা আবদুল মোমেন সিয়ামত আলি, আবু সিদ্দিক খান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামরুদ্দিন মল্লিক মাসুদুর রহমান সহ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য।
অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ আরও কয়েকটি কলেজের ছাত্রীরা স্বতঃফূর্তভাবে কর্নাটকের হিজাব ইস্যুতে কলকাতার রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে। শুক্রবার মিছিলে হাঁটেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তোর্সা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদ্বিতীয়া ঘোষ এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা-সহ অন্যান্য কলেজের ছাত্রীরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট পর্যন্ত মিছিলটি আসে সন্ধ্যায়। প্রায় ১০০ পড়ুয়া মিছিলে সামিল হন। মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রীরা কর্নাটকের হিজাব ইস্যুতে প্রথম প্রতিবাদকারী মুসকানের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়াদের একটাই দাবি হিজাব শালীনতার প্রতীক। হিজাব নারীদের অধিকার তাদের এই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ মিছিলে মুহাম্মদ তানবীর বলেন, হিজাব নিয়ে যেভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদ জানাই। পোশাক গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকারে ‘বর করলে পড়ুয়ারাও থেমে থাকবে না।
হিজাব ইস্যুতে ধর্মতলার স্টেটস্ম্যান হাউস থেকে গান্ধিমূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি ছিল নাগরিক সমাজের। কর্নাটকের ঘটনা নিয়ে তারা প্রতিবাদে সরব হন এবং শিক্ষাঙ্গনে ধর্মীয় বিভাজন নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। বেশ কিছু এনজিও সামাজিক সংগঠন ও সমাজকর্মী এ দিন সমবেত হন।