গাজিয়াবাদে কাঁওড় যাত্রার দোহাই দিয়ে কেএফসি ও নাজির ফুডস বন্ধ করল হিন্দু রক্ষা দল

- আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
- / 24
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শ্রাবণ মাসে কেন মাংস বিক্রি করা হচ্ছে? এই মাসে কেএফসির কোনও দোকান খোলা রাখা যাবে না।—এই স্লোগান দিতে দিতে গাজিয়াবাদের ইন্দি রাপুরমের বসুন্ধরা এলাকায় কেএফসি-র নতুন আউটলেটে ঢুকে পড়ল হিন্দু রক্ষা দলের নেতা-কর্মীরা। জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হল কেএফসি-র আউটলেট। শুধু কেএফসি নয়, নাজির ফুডস নামে একটি রেস্তোরাঁও বন্ধ করে দেয় হিন্দু রক্ষা দলের নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তাদের ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারী হিন্দু রক্ষা দলের নেতা-কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ভারত মাতার জয়’ ও ‘হর হর মহাদেব’ স্লোগান দিতে দিতে দোকানে ঢুকে কর্মীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ছে এবং কিছুক্ষণ পর তার জোর করে দোকানের শাটার নামিয়ে দিচ্ছে। কেএফসি কর্মীদের ফোনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেখা যায় ওই ভিডিয়োতে। তখন হিন্দু রক্ষা দলের কর্মীরা কেএফসির কর্মীদের হুমকি দিয়ে বলে, ‘এটা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এখানে কাঁওড় যাত্রা হয়। অথচ এই সময়েও মাংস বিক্রি করছেন! হিন্দুদের আবেগকে সম্মান না জানালে প্রতিবাদ হবেই। এটা আমাদের উৎসব। কেউ হস্তক্ষেপ করলে আমরা ফের বিক্ষোভ দেখাব।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁওড় যাত্রা চলাকালীন এই অঞ্চলে সরকারিভাবে মাংস বিক্রির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তা সত্ত্বে হিন্দু রক্ষা দলের সদস্যরা কেএফসি ও নাজির ফুডস-এর দোকানে ঢুকে কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং জোরপূর্বক দোকান দু’টি শাটার নামিয়ে দেয়। কয়েকদিন মাত্র হয়েছে কেএফসি এই নতুন আউটলেটটি খুলেছে। হিন্দু রক্ষা দলের কর্মীরা বলছেন, শ্রাবণ মাস শিবের মাস। তাই এই মাসে মাংস বা কোনও ধরনের আমিষ খাবার বিক্রি করা যাবে না। যদি কেএফসি বা নাজির ফুডস আবার খোলা হয়, আমরা একইভাবে ফের বন্ধ করে দেবো।
গাজিয়াবাদের ঘটনায় নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার কাঁওড় যাত্রাপথে থাকা দোকানগুলোর মালিকদের লাইসেন্স ও আসল নাম প্রকাশ্যে ঝোলানোর নির্দেশ দেয়। রাস্তার ধারে থাকা সব দোকানে কিউআর কোড ঝোলানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। যা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। হিন্দু রক্ষা দলের মতো বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের গাজোয়ারিতে অসন্তুষ্ট ব্যবসাদার থেকে শুরু স্থানীয় মানুষজন। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, ধর্মীয় আবেগের দোহাই দিয়ে একতরফাভাবে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া এবং এই সব ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা যথেষ্ট উদ্বেগের।