১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি এখনও অধরা, ফের আলোচনার জন্য আমেরিকায় যাচ্ছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
  • / 214

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি (India-US Trade Deal) নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। চুক্তির শর্ত নিয়ে মতানৈক্য অব্যাহত থাকায় আবারও আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন ভারতীয় সরকারি প্রতিনিধিরা। সূত্র অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহেই এই প্রতিনিধি দল পৌঁছোবে ওয়াশিংটনে। গত সপ্তাহেই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষমেশ তা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এখনও চুক্তি সই হয়নি, ফলে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ছিল। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও বলেছিলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত।’’ কিন্তু বাস্তবে শুল্কছাড়ের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চুক্তি সই না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে— সত্যিই কি সমঝোতার পথে এগোচ্ছে দুই দেশ?

বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, চুক্তির একাধিক বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের অবস্থান এখনও অনড়। একাধিক ক্ষেত্রে আপত্তি থাকায় আলোচনা থমকে রয়েছে। তবে ভারত ও আমেরিকা— উভয়েই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করতে আগ্রহী। উইন-উইন পরিস্থিতিতে পৌঁছনোর লক্ষ্যে দ্রুত সমাধান খোঁজা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump-Shehbaz Sharif: শাহবাজ-মুনিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

এ প্রসঙ্গে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, “ভারতের স্বার্থই আমাদের প্রধান বিবেচ্য। কোনও নির্দিষ্ট ডেডলাইনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন কোনও চুক্তি করব না যা তাড়াহুড়োর ফলে দেশের স্বার্থে আঘাত করে।”

আরও পড়ুন: ভারত থেকে আমেরিকার আয় কত? ট্রাম্পের দাবি ভুয়ো, জানাচ্ছে রিপোর্ট

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ২২টি দেশের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। তবুও ভারত সরকার এই পরিস্থিতিকে খুব বেশি জটিল করে দেখতে চাইছে না। সরকার মনে করছে, চুক্তি না হলেও ভারতের বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের প্রশংসা করলেন পুতিন

এদিকে, এর আগেও বিশেষ সচিব রাজেশ আগারওয়ালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আমেরিকায় গিয়েছিল বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে। এবার কোন আধিকারিকরা যাচ্ছেন তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে বাণিজ্য মন্ত্রক চাইছে, এবারকার সফরে প্রতিনিধিরা চূড়ান্ত ও স্থায়ী চুক্তি সম্পন্ন করে ফিরে আসুন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির গুরুত্ব দুই দেশের জন্যই প্রবল। ভারত চায় নিরাপদ ও ন্যায্য বাণিজ্য সুবিধা, অন্যদিকে আমেরিকার লক্ষ্য ভারতের বাজারে প্রবেশের আরও বেশি সুযোগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি টেকসই, ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি সময়ের দাবি।

সার্বিকভাবে বলতে গেলে, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ভারতের কৌশল স্পষ্ট— দ্রুততা নয়, বরং জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষাই প্রথম লক্ষ্য। আগামী সপ্তাহের আলোচনায় এই জট কতটা কাটে, এখন সেই দিকেই নজর দেশবাসীর।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি এখনও অধরা, ফের আলোচনার জন্য আমেরিকায় যাচ্ছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি (India-US Trade Deal) নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। চুক্তির শর্ত নিয়ে মতানৈক্য অব্যাহত থাকায় আবারও আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন ভারতীয় সরকারি প্রতিনিধিরা। সূত্র অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহেই এই প্রতিনিধি দল পৌঁছোবে ওয়াশিংটনে। গত সপ্তাহেই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষমেশ তা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এখনও চুক্তি সই হয়নি, ফলে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ছিল। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও বলেছিলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত।’’ কিন্তু বাস্তবে শুল্কছাড়ের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চুক্তি সই না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে— সত্যিই কি সমঝোতার পথে এগোচ্ছে দুই দেশ?

বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, চুক্তির একাধিক বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের অবস্থান এখনও অনড়। একাধিক ক্ষেত্রে আপত্তি থাকায় আলোচনা থমকে রয়েছে। তবে ভারত ও আমেরিকা— উভয়েই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করতে আগ্রহী। উইন-উইন পরিস্থিতিতে পৌঁছনোর লক্ষ্যে দ্রুত সমাধান খোঁজা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump-Shehbaz Sharif: শাহবাজ-মুনিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প

এ প্রসঙ্গে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, “ভারতের স্বার্থই আমাদের প্রধান বিবেচ্য। কোনও নির্দিষ্ট ডেডলাইনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন কোনও চুক্তি করব না যা তাড়াহুড়োর ফলে দেশের স্বার্থে আঘাত করে।”

আরও পড়ুন: ভারত থেকে আমেরিকার আয় কত? ট্রাম্পের দাবি ভুয়ো, জানাচ্ছে রিপোর্ট

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ২২টি দেশের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। তবুও ভারত সরকার এই পরিস্থিতিকে খুব বেশি জটিল করে দেখতে চাইছে না। সরকার মনে করছে, চুক্তি না হলেও ভারতের বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন: ভারত ও চিনের প্রশংসা করলেন পুতিন

এদিকে, এর আগেও বিশেষ সচিব রাজেশ আগারওয়ালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আমেরিকায় গিয়েছিল বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে। এবার কোন আধিকারিকরা যাচ্ছেন তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে বাণিজ্য মন্ত্রক চাইছে, এবারকার সফরে প্রতিনিধিরা চূড়ান্ত ও স্থায়ী চুক্তি সম্পন্ন করে ফিরে আসুন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির গুরুত্ব দুই দেশের জন্যই প্রবল। ভারত চায় নিরাপদ ও ন্যায্য বাণিজ্য সুবিধা, অন্যদিকে আমেরিকার লক্ষ্য ভারতের বাজারে প্রবেশের আরও বেশি সুযোগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি টেকসই, ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি সময়ের দাবি।

সার্বিকভাবে বলতে গেলে, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে এই চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ভারতের কৌশল স্পষ্ট— দ্রুততা নয়, বরং জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষাই প্রথম লক্ষ্য। আগামী সপ্তাহের আলোচনায় এই জট কতটা কাটে, এখন সেই দিকেই নজর দেশবাসীর।