০৯ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রত্যাঘাতের জন্য কেন পাকিস্তানের বহওয়ালপুর শহরকেই বাছল ভারতীয় সেনা?

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৭ মে ২০২৫, বুধবার
  • / 213

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মধ্যরাতে পাকিস্তান অধিকৃত একাধিক জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। পাক সরকারের বিবৃতিতে আট জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই সাধারণ নাগরিক বলে দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে নিশানা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভারত। বহু ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারত এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। যার অন্যতম নিশানা ছিল বহওয়ালপুর শহর। এখানে ভারতের হামলার কথা স্বীকার করেছে পাকিস্তানও। সূত্রের খবর, বহওয়ালপুরে ভারতের হামলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ৩১ জন। হামলার জন্য কেন এই শহরকেই বেছে নেওয়া হল?

লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে বহওয়ালপুর শহর পাকিস্তানের দ্বাদশ বৃহত্তম শহর। একে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের শক্ত ঘাঁটি বলে দাবি করা হয়। জইশের সদর দফতর রয়েছে ‘জামিয়া মসজিদ শুভান’ ক্যাম্পাসে। উসমান-ও-আলি ক্যাম্পাস নামেও পরিচিত। ১৮ একর জমি জুড়ে এই ক্যাম্পাস বিস্তৃত। এখানে জইশ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজহার বহওয়ালপুরের বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের উল্লেখ নেই এসসিও-র নথিতে, স্বাক্ষর করলেন না রাজনাথ সিং

২০০২ সালে সরকারি ভাবে জইশ-ই-মহম্মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তার ছিল শুধুই খাতায়কলমে। পাকিস্তানের এই ক্যাম্পাসে বসে বিনা বাধায় কাজ করত জইশ জঙ্গিরা। ক্যাম্পাসের অদূরেই রয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টও। কয়েকটি সূত্রের দাবি, এই বহওয়ালপুরেই একটি গোপন পরমাণু ঘাঁটি রয়েছে। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে বলেও অনেকে দাবি করেন।

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও নিয়ে ফের সওয়াল অভিষেকের, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেশি জানান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান অপহরণ করেছিল পাঁচ হরকাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গি। তাতে ১৯০ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি আফগানিস্তানের কান্দাহার দিয়ে ঘোরানো হচ্ছিল। সেই সময় তা অপহরণ করা হয়। ভারত সে সময় মাসুদ আজহার, ওমর শেখ এবং মুস্তাক জারগার নামের তিন জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এই মাসুদ ১৯৯৪ সাল থেকে ভারতের জেলে বন্দি ছিলেন। আফগান জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। ভারত মুক্তি দেওয়ার পর ২০০০ সালে তিনিই জইশ-ই-মহম্মদ গঠন করেন। ভারতে একাধিক ছোটবড় সন্ত্রাসবাদী হামলার নেপথ্যে ছিল এই সংগঠন। এ ছাড়া বহওয়ালপুরের কিছু কিছু জায়গায় অপর পাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লশকর-এ-তইবার জঙ্গিরাও সক্রিয় বলে অভিযোগ। তাদের সঙ্গেও এই শহরের যোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘অপারেশন সিন্দুর’ সন্ত্রাসবাদের জন্য কড়া জবাব: মোদি

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

প্রত্যাঘাতের জন্য কেন পাকিস্তানের বহওয়ালপুর শহরকেই বাছল ভারতীয় সেনা?

আপডেট : ৭ মে ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মধ্যরাতে পাকিস্তান অধিকৃত একাধিক জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। পাক সরকারের বিবৃতিতে আট জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই সাধারণ নাগরিক বলে দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে নিশানা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভারত। বহু ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারত এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। যার অন্যতম নিশানা ছিল বহওয়ালপুর শহর। এখানে ভারতের হামলার কথা স্বীকার করেছে পাকিস্তানও। সূত্রের খবর, বহওয়ালপুরে ভারতের হামলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ৩১ জন। হামলার জন্য কেন এই শহরকেই বেছে নেওয়া হল?

লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে বহওয়ালপুর শহর পাকিস্তানের দ্বাদশ বৃহত্তম শহর। একে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের শক্ত ঘাঁটি বলে দাবি করা হয়। জইশের সদর দফতর রয়েছে ‘জামিয়া মসজিদ শুভান’ ক্যাম্পাসে। উসমান-ও-আলি ক্যাম্পাস নামেও পরিচিত। ১৮ একর জমি জুড়ে এই ক্যাম্পাস বিস্তৃত। এখানে জইশ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজহার বহওয়ালপুরের বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের উল্লেখ নেই এসসিও-র নথিতে, স্বাক্ষর করলেন না রাজনাথ সিং

২০০২ সালে সরকারি ভাবে জইশ-ই-মহম্মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তার ছিল শুধুই খাতায়কলমে। পাকিস্তানের এই ক্যাম্পাসে বসে বিনা বাধায় কাজ করত জইশ জঙ্গিরা। ক্যাম্পাসের অদূরেই রয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টও। কয়েকটি সূত্রের দাবি, এই বহওয়ালপুরেই একটি গোপন পরমাণু ঘাঁটি রয়েছে। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে বলেও অনেকে দাবি করেন।

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও নিয়ে ফের সওয়াল অভিষেকের, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেশি জানান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান অপহরণ করেছিল পাঁচ হরকাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গি। তাতে ১৯০ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি আফগানিস্তানের কান্দাহার দিয়ে ঘোরানো হচ্ছিল। সেই সময় তা অপহরণ করা হয়। ভারত সে সময় মাসুদ আজহার, ওমর শেখ এবং মুস্তাক জারগার নামের তিন জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এই মাসুদ ১৯৯৪ সাল থেকে ভারতের জেলে বন্দি ছিলেন। আফগান জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। ভারত মুক্তি দেওয়ার পর ২০০০ সালে তিনিই জইশ-ই-মহম্মদ গঠন করেন। ভারতে একাধিক ছোটবড় সন্ত্রাসবাদী হামলার নেপথ্যে ছিল এই সংগঠন। এ ছাড়া বহওয়ালপুরের কিছু কিছু জায়গায় অপর পাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লশকর-এ-তইবার জঙ্গিরাও সক্রিয় বলে অভিযোগ। তাদের সঙ্গেও এই শহরের যোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘অপারেশন সিন্দুর’ সন্ত্রাসবাদের জন্য কড়া জবাব: মোদি