পুতিনকে যুদ্ধ থামানোর বার্তা দিয়ে ফের মধ্যস্থাকারীর ভূমিকায় মোদি

- আপডেট : ১ জুলাই ২০২২, শুক্রবার
- / 23
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধে ফের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধ করার বার্তা দিলেন মোদি। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত ও রাশিয়ার দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে ফোনালাপে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও খাদ্যের দামের বিষয়টি বৈঠকে স্থান পেয়েছে। সেই সঙ্গে ‘কৃষি পণ্য, সার এবং ওষুধজাত পণ্যের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে কীভাবে আরও উৎসাহিত করা যায় সে বিষয়ে তারা মতবিনিময় করেছেন। বৈশ্বিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
যেহেতু ভারত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের আমদানিকারক হিসাবে অব্যাহত রয়েছে, পুতিন মোদিকে বলেছিলেন যে রাশিয়া শস্য, সার এবং শক্তির একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী হিসাবে পাশে রয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাতের প্রথম থেকেই ভারত যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পক্ষে তার অবস্থান ধরে রেখেছে।
এপ্রিলে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশেপাশের শহরগুলি থেকে ফিরে আসার সময় রাশিয়ান সৈন্যদের হাতে স্থানীয়দের হত্যার অভিযোগে ১৯৩-সদস্যের সাধারণ পরিষদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া একটি প্রস্তাব গ্রহণে ভোটদানে বিরত থাকে ভারত।
রাষ্ট্রসংঘের মানবধিকার পরিষদ থেকে রাশিয়াকে বরখাস্ত করা হয়। ভারত সেই সময় ভোটদানে বিরত থাকার পক্ষে যুক্তি দেয়। রাশিয়াকে সাসপেন্ড করার পক্ষে ভোট দেয় ৯৩টি দেশ। আর বিপক্ষে ভোট দেয় চিন সহ ২৪টি দেশ। অন্যদিকে ভোটদানে বিরত থাকে ৫৮টি দেশ।
রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরমূর্তি বলেন, ‘ইউক্রেন সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারত শান্তি, আলোচনা, কূটনীতির পক্ষে কথা বলেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যে রক্তক্ষয় করে ও নিরাপরাধ মানুষদের প্রাণহানি করে কোনও সমাধান সূত্রে পৌঁছনো যায় না। যদি ভারত কোনও পক্ষ নেয়, তবে হল শান্তির পক্ষ। দ্রুত যাতে এই হিংসা শেষ হয়, তারই পক্ষে আমরা’।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণার পরেই বেশ কয়েক দফায় ফোনে আলোচনা হয়েছিল পুতিন ও মোদির।
সে সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনকে সরাসরি কথা বলার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিপুল সংখ্যক ভারতীয় মেডিকেল ছাত্র কিয়েভ, খারকিভ, মারিউপোল এবং অন্যান্য শহরে আটকা পড়ে। ‘অপারেশন গঙ্গা’-র মাধ্যমে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার করে ভারত সরকার।
তবে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনা পরেও ইউক্রেন সংকট কাটেনি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। প্রধানত বিশ্ববাজারে সরবরাহ করা গমের ৩০ শতাংশ জোগান দেয় ইউক্রেন ও রাশিয়া। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দাম বেড়েছে গমসহ বিভিন্ন শস্য ও খাবারের। পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধে খাবার ও পণ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মস্কো। এমনকি ইউক্রেনে উৎপাদিত গম চুরি করে রুশনিয়ন্ত্রিত এলাকায় সরিয়ে আনার অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।