০৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিয়রে নির্বাচন! ভিল আদিবাসী ভোট টানতে রাজস্থানের একই মঞ্চে মোদি-গেহলট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 36

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক :  ভোট বড় বালাই! সেটাই প্রমাণ হল আরও একবার। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জনমানসে ভিল আদিবাসীদের সমর্থন কুড়োতে এক মঞ্চে উপস্থিত হতে দ্বিধা করলেন না, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। একই মঞ্চে দেখা গেল রাজনীতির দুই মেরুর দুই যুযুধান নেতাকে। তবে দুজনের উদ্দেশ্যে একই। আর সেই উদ্দেশ্য হল ভিল আদিবাসী ভোট টানা।

একদিকে যখন গুজরাতে ব্রিজ বিপর্যয়ের কারণে মৃত্যু মিছিলের অভিযোগ মোদির শিয়রে ঝুলছে, ঠিক তখনই ভোটের কথা মাথা রেখে মঙ্গলবার তাঁকে রাজস্থানের বাঁশওয়ারার মানগড় পাহাড়ে ‘মানগড় ধাম কি গৌরব গাঁথা’ অনুষ্ঠানে দেখা গেল গেহলটের পাশে। শুধু পাশেই দেখা গেল না, মোদি ও গেহলট দুজনেই দুজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকলেন।
বহু ইস্যুতে এর আগেও মুখোমুখি বসেছেন মোদি সহ গেহলট। তবে একই মঞ্চে এই প্রথমবার দুই নেতা।

আরও পড়ুন: পাক হামলা: বন্ধ স্কুল-কলেজ

এদিনের মানগড়ে আদিবাসীদের এই অনুষ্ঠানে মোদি ও গেহলট ছাড়াও উপস্থিত থাকলেন প্রতিবেশী গুজরাত সহ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও।

আরও পড়ুন: রাজস্থানের মন্দিরে হানা এনসিবি-র, বাজেয়াপ্ত ৫৮ কেজির বেশি আফিম

১৯১৩ সালের ১৭ নভেম্বর এই মানগড়েই ভিল আদিবাসী প্রজাতির প্রায় দেড় হাজার মানুষকে গুলি করে মারে ব্রিটিশ সেনা। এই ঘটনা পরে ‘আদিবাসী জালিয়ানওয়ালাবাগ’ বলেও অভিহিত করা হয়। ঘটনার পর একশো বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও রাজস্থান ও গুজরাত সীমান্তে অবস্থিত আদিবাসী অধ্যুষিত ধাম মানগড়ই এখন রাজনীতির মূল আকর্ষণ। কারণ বিজেপি আর কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক। মানগড় ধামে দুই শিবিরের হেভিওয়েটদের এই সম্মেলন মূলত ভিলদের সমর্থন কুড়নোর লড়াই। বিজেপির আরও দুই হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং ভূপেন্দ্র প্যাটেলও যোগ দেন ভিলদের এই সমাবেশে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের, রাজস্থানে বরখাস্ত তিন শিক্ষক

এই সমাবেশের মঞ্চ থেকেই মোদি রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাত সরকারকে রামগড় এলাকায় আদিবাসী তীর্থক্ষেত্র গড়ে তোলার রোডম্যাপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই মঞ্চ থেকে সরাসরি না হলেও একে অপরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি, মোদি-গেহলট।
গেহলট বলেন,  ‘মোদি বিদেশে গিয়ে এত সম্মান পান, কারণ তিনি গান্ধির দেশের প্রতিনিধি। এ দেশে গণতন্ত্র গভীরে গ্রোথিত। সেটা যখন তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁরা গর্ব অনুভব করেন। সেই কারণেই মোদিকে এত সম্মান পান’। অপরদিকে মোদি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ এতগুলি বছর পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারতে আদিবাসীদের সম্মান দেওয়া হত না। ভারতের ইতিহাস আপনাদের ছাড়া অসম্পূর্ণ। এই মানগড় ধাম আদিবাসীদের সাহস এবং আত্মত্যাগের প্রতীক।”

তবে ব্যক্তিগতভাবে দুজনেই সৌজন্যতা দেখিয়েছেন।

মোদি বলেন, ‘আমি আর গেহলটজি দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছ। উনি তখন আমার চেয়ে বর্ষীয়ান মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এখনও তিনি সকলের মধ্যে সিনিয়র মুখ্যমন্ত্রী’।

উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই অশোক গেহলট গুজরাত সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে গেহলট দাবি করেছিলেন, ২৭ বছর পর গুজরাতে বিজেপি শাসনের অবসান হবে, এবং কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে।

জোর গলায় গুজরাত দখলের দাবির পর আজ সেই গেহলটের গলাতেই শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা!

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শিয়রে নির্বাচন! ভিল আদিবাসী ভোট টানতে রাজস্থানের একই মঞ্চে মোদি-গেহলট

আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক :  ভোট বড় বালাই! সেটাই প্রমাণ হল আরও একবার। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জনমানসে ভিল আদিবাসীদের সমর্থন কুড়োতে এক মঞ্চে উপস্থিত হতে দ্বিধা করলেন না, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। একই মঞ্চে দেখা গেল রাজনীতির দুই মেরুর দুই যুযুধান নেতাকে। তবে দুজনের উদ্দেশ্যে একই। আর সেই উদ্দেশ্য হল ভিল আদিবাসী ভোট টানা।

একদিকে যখন গুজরাতে ব্রিজ বিপর্যয়ের কারণে মৃত্যু মিছিলের অভিযোগ মোদির শিয়রে ঝুলছে, ঠিক তখনই ভোটের কথা মাথা রেখে মঙ্গলবার তাঁকে রাজস্থানের বাঁশওয়ারার মানগড় পাহাড়ে ‘মানগড় ধাম কি গৌরব গাঁথা’ অনুষ্ঠানে দেখা গেল গেহলটের পাশে। শুধু পাশেই দেখা গেল না, মোদি ও গেহলট দুজনেই দুজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকলেন।
বহু ইস্যুতে এর আগেও মুখোমুখি বসেছেন মোদি সহ গেহলট। তবে একই মঞ্চে এই প্রথমবার দুই নেতা।

আরও পড়ুন: পাক হামলা: বন্ধ স্কুল-কলেজ

এদিনের মানগড়ে আদিবাসীদের এই অনুষ্ঠানে মোদি ও গেহলট ছাড়াও উপস্থিত থাকলেন প্রতিবেশী গুজরাত সহ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও।

আরও পড়ুন: রাজস্থানের মন্দিরে হানা এনসিবি-র, বাজেয়াপ্ত ৫৮ কেজির বেশি আফিম

১৯১৩ সালের ১৭ নভেম্বর এই মানগড়েই ভিল আদিবাসী প্রজাতির প্রায় দেড় হাজার মানুষকে গুলি করে মারে ব্রিটিশ সেনা। এই ঘটনা পরে ‘আদিবাসী জালিয়ানওয়ালাবাগ’ বলেও অভিহিত করা হয়। ঘটনার পর একশো বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও রাজস্থান ও গুজরাত সীমান্তে অবস্থিত আদিবাসী অধ্যুষিত ধাম মানগড়ই এখন রাজনীতির মূল আকর্ষণ। কারণ বিজেপি আর কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক। মানগড় ধামে দুই শিবিরের হেভিওয়েটদের এই সম্মেলন মূলত ভিলদের সমর্থন কুড়নোর লড়াই। বিজেপির আরও দুই হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং ভূপেন্দ্র প্যাটেলও যোগ দেন ভিলদের এই সমাবেশে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের, রাজস্থানে বরখাস্ত তিন শিক্ষক

এই সমাবেশের মঞ্চ থেকেই মোদি রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাত সরকারকে রামগড় এলাকায় আদিবাসী তীর্থক্ষেত্র গড়ে তোলার রোডম্যাপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই মঞ্চ থেকে সরাসরি না হলেও একে অপরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি, মোদি-গেহলট।
গেহলট বলেন,  ‘মোদি বিদেশে গিয়ে এত সম্মান পান, কারণ তিনি গান্ধির দেশের প্রতিনিধি। এ দেশে গণতন্ত্র গভীরে গ্রোথিত। সেটা যখন তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁরা গর্ব অনুভব করেন। সেই কারণেই মোদিকে এত সম্মান পান’। অপরদিকে মোদি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ এতগুলি বছর পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারতে আদিবাসীদের সম্মান দেওয়া হত না। ভারতের ইতিহাস আপনাদের ছাড়া অসম্পূর্ণ। এই মানগড় ধাম আদিবাসীদের সাহস এবং আত্মত্যাগের প্রতীক।”

তবে ব্যক্তিগতভাবে দুজনেই সৌজন্যতা দেখিয়েছেন।

মোদি বলেন, ‘আমি আর গেহলটজি দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছ। উনি তখন আমার চেয়ে বর্ষীয়ান মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এখনও তিনি সকলের মধ্যে সিনিয়র মুখ্যমন্ত্রী’।

উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই অশোক গেহলট গুজরাত সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে গেহলট দাবি করেছিলেন, ২৭ বছর পর গুজরাতে বিজেপি শাসনের অবসান হবে, এবং কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে।

জোর গলায় গুজরাত দখলের দাবির পর আজ সেই গেহলটের গলাতেই শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা!