ডুয়ার্স: বেহাল অবস্থায় রাষ্ট্রপতির হাতে পুরস্কার পাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীর স্বাস্থ্যকেন্দ্র

- আপডেট : ৩০ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার
- / 73
শুভজিৎ দেবনাথ, গয়েরকাটা: রাষ্ট্রপতির হাতে পুরস্কার পাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল অবস্থা। দায়িত্বভার নিয়ে চোখ কপালে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গল পুরষ্কার পাপক সুনিতা দত্তের। ডুয়ার্সের গয়েরকাটা এলাকায় অবস্থিত সাঁকোয়াঝোরা – নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৬ নং সেন্টারের উপ -স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বভার সদ্য নিয়েছিলেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গল পুরষ্কার পাপক সুনিতা দত্ত। দায়িত্ব নেবার পরেই চক্ষু চরক গাছ। বেহাল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা। ফুটো হয়ে রয়েছে টিনের চাল বৃষ্টিতে চুইয়ে চুইয়ে সেখান দিয়ে জল পড়ে ভেজে ঘর। বারংবার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দরবার করেও মেলিনি সাহায্য।
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো সাহায্য না মেলায় রীতিমত অসহায় অবস্থা এখন সেই রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গল। সহযোগিতা বলতে মিলেছে শুধুমাত্র দুটি ত্রিপল। বৃষ্টির মরশুমে এই মুহূর্তে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাস্থ্যকর্মী থেকে চিকিৎসা করাতে আশা রোগীরা। বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোরা -১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। প্রবেশদ্বারে গজিয়ে উঠেছে বিষাক্ত পর্থেনিয়াম আগাছা। মাঝে মাঝেই স্বাস্থ্য কর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে সেই আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে বলেই জানিয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না কোনো টোটো। যার কারণে অনেক সময় হবু মায়েদের সমস্যায় পড়তে হয়।কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সামনে নর্দমার ওপর রয়েছে ছোট স্ল্যাপ যার অর্ধেকটা অংশ ভেঙে পড়েছে।
কেনো এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের হল ফেরানোর ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সেই প্রশ্ন করতে গেলে বেজায় চটে যান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্রাবণী দে (ঘোষ)। রীতিমত হুমকির সুরে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীকে পাল্টা প্রশ্ন করতে শুরু করেন তিনি। এক কথায় বললে তিনি নিজের নিজের দোষ ঢাকার চেষ্টা করেন বলেই এমনটা মনে হয়।
যদিও পরবর্তীতে এবিষয়ে ধূপগুড়ির এস ডি ও (SDO) পুষ্পা ডেলমা লেচপা কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি । স্বাস্থ্য দফতর ,বিডিও রয়েছে অভিযোগ পেলেই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে”।
উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সুনিতা দত্ত জানান, “ দায়িত্ব নেবার পরেই তিনি দেখতে পায় বেহাল অবস্থা বৃষ্টিতে টিনের চাল চুইয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে জল পড়ে। শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গিয়েছে সমস্ত টিনের চাল। গ্রাম পঞ্চায়েতে লিখিত আকারে অভিযোগ জানানোর দুটো ত্রিপল দিয়েছে মাথার উপরে আপাতত সেই ত্রিপল দুটো কোনো ভাবে নিয়ে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।
সব চাইতে আরো সমস্যা বলতে মুমূর্ষ রোগী ও হবু মায়ের টোটো করে ভেতরে আসতে পারবেনা কারণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে নর্দমার উপর একটি স্ল্যাপ অর্ধেকটার বেশি অংশ ভাঙ্গা রয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার”।
স্বপন রায় নামে টোটো চালক বলেন, “স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা খুব খারাপ। দ্রুত মেরামতের প্রয়োজন। স্ল্যাপ ভাঙ্গা থাকার কারণে আমরা মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পারি না”।
এ বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার অঙ্কুর চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,“বিষয়টি তার জানা নেই। ব্লকে এরকম অনেক উপ – স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে,যেগুলো ঝড়ের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। সেগুলো তালিকা করে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে । দ্রুত সেগুলোকে সারাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে”।