০২ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্কুলের নামে উর্দুর ব্যবহার, অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করল যোগী প্রশাসন

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 148

লখনউ: স্কুলের নাম হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই অধ্যক্ষের ওপর নেমে আসে আক্রোশ। উত্তরপ্রদেশের বিজনরের সেওহারা ব্লকের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রাফাত খানকে বরখাস্ত করেছে প্রশাসন। তাঁর অপরাধ, তিনি হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে স্কুলের নাম লিখতে চেয়েছিলেন। অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করার পর থেকে এলাকায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে ওই এলাকায় মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সূত্রের খবর, স্কুলের দেয়ালের একদিকে হিন্দি এবং অন্যদিকে উর্দুতে স্কুলের নাম আঁকা ছিল। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। শুধুমাত্র উর্দু লেখার কারণে অনেকেই বিরোধিতা করে। এনিয়ে ব্যাপক বির্তকের সৃষ্টি হলে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় বেসিক এডুকেশন অফিসার (বিএসএ)। প্রশাসনের মতে, উর্দু লেখার জন্য আগাম কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। ফলে নিয়ম ভঙ্গ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অধ্যক্ষ রাফাত খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, যে স্কুলের সম্পত্তিতে যে কোনও লেখা বা কাজ করার আগে অনুমোদন নেওয়া দরকার। এই নিয়ম উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: উর্দু বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ভাষা: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু

এদিকে অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা নিয়ে তীব্র বিরোধীতা দেখা গিয়েছে। খানের সমর্থনে এবং স্কুলে উর্দুর ব্যবহারের পক্ষে অনেকেই আওয়াজ তুলেছে। স্থানীয়রা বলেন, উর্দু উত্তরপ্রদেশের সরকারীভাবে স্বীকৃত ভাষাগুলির মধ্যে একটি। বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এই ভাষার। স্থানীয় শিক্ষক ও সমাজকর্মী ইমরান সিদ্দিকী বলেন, “উর্দুই আমাদের ঐতিহ্যের অংশ এবং ভারতীয় মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকারকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। শুধু এই ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা অন্যায়। আমাদের স্কুলগুলোতে উর্দুর অবস্থান ও ব্যবহার আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।”

আরও পড়ুন: ‘উর্দু পড়িয়ে বাচ্চাদের মৌলবি বানাতে চান’? বিধানসভায় সপা নেতাকে কদর্য আক্রমণ যোগীর

স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফাতিমা বেগম বলেন, ‘উর্দু শুধু একটি ভাষা নয়, এটি আমাদের পরিচয়। অধ্যক্ষ খানকে শাস্তি দিয়ে কর্তৃপক্ষ পরোক্ষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে।’

আরও পড়ুন: মুসলিম মন পেতে মোদির  ‘মন কী বাত’ এবার উর্দুতে

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

স্কুলের নামে উর্দুর ব্যবহার, অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করল যোগী প্রশাসন

আপডেট : ৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার

লখনউ: স্কুলের নাম হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই অধ্যক্ষের ওপর নেমে আসে আক্রোশ। উত্তরপ্রদেশের বিজনরের সেওহারা ব্লকের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রাফাত খানকে বরখাস্ত করেছে প্রশাসন। তাঁর অপরাধ, তিনি হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে স্কুলের নাম লিখতে চেয়েছিলেন। অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করার পর থেকে এলাকায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে ওই এলাকায় মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সূত্রের খবর, স্কুলের দেয়ালের একদিকে হিন্দি এবং অন্যদিকে উর্দুতে স্কুলের নাম আঁকা ছিল। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। শুধুমাত্র উর্দু লেখার কারণে অনেকেই বিরোধিতা করে। এনিয়ে ব্যাপক বির্তকের সৃষ্টি হলে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় বেসিক এডুকেশন অফিসার (বিএসএ)। প্রশাসনের মতে, উর্দু লেখার জন্য আগাম কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। ফলে নিয়ম ভঙ্গ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অধ্যক্ষ রাফাত খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, যে স্কুলের সম্পত্তিতে যে কোনও লেখা বা কাজ করার আগে অনুমোদন নেওয়া দরকার। এই নিয়ম উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: উর্দু বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ভাষা: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু

এদিকে অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা নিয়ে তীব্র বিরোধীতা দেখা গিয়েছে। খানের সমর্থনে এবং স্কুলে উর্দুর ব্যবহারের পক্ষে অনেকেই আওয়াজ তুলেছে। স্থানীয়রা বলেন, উর্দু উত্তরপ্রদেশের সরকারীভাবে স্বীকৃত ভাষাগুলির মধ্যে একটি। বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এই ভাষার। স্থানীয় শিক্ষক ও সমাজকর্মী ইমরান সিদ্দিকী বলেন, “উর্দুই আমাদের ঐতিহ্যের অংশ এবং ভারতীয় মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকারকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। শুধু এই ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা অন্যায়। আমাদের স্কুলগুলোতে উর্দুর অবস্থান ও ব্যবহার আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।”

আরও পড়ুন: ‘উর্দু পড়িয়ে বাচ্চাদের মৌলবি বানাতে চান’? বিধানসভায় সপা নেতাকে কদর্য আক্রমণ যোগীর

স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফাতিমা বেগম বলেন, ‘উর্দু শুধু একটি ভাষা নয়, এটি আমাদের পরিচয়। অধ্যক্ষ খানকে শাস্তি দিয়ে কর্তৃপক্ষ পরোক্ষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে।’

আরও পড়ুন: মুসলিম মন পেতে মোদির  ‘মন কী বাত’ এবার উর্দুতে