০৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিএফআই-কে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্র সরকার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার
  • / 30

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্র সরকার।  মঙ্গলবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই সংগঠনকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় শুধু পিএফআই-ই নয়, তার অন্যান্য শাখা সংগঠনকেও যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ট্যুইট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত মালব্য।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি,  পিএফআই সন্ত্রাসবাদীদের নানাভাবে মদদ যোগাত। তারা মৌলবাদে বিশ্বাসী ও দেশের যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করার কাজ চালাত। যদিও পিএফআই- বরাবর বলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ সত্য নয়। আসলে তারা সংকীর্ণ গেরুয়া রাজনীতির শিকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে পিএফআই গঠিত হয়। প্রান্তিক মুসলমান সমাজের ক্ষমতায়নে সংগঠনটি কাজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।

গত এক সপ্তাহে দুবার দেশজুড়ে এই সংগঠনের বিভিন্ন অফিস ও নেতা-কর্মীদের বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের নথি পত্র সংগ্রহ করা হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, পিএফআইয়ের সঙ্গে বেআইনি ঘোষিত হয়েছে তারই শাখা সংগঠন রিহ্যাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া, অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল, ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, ন্যাশনাল উইমেনস ফ্রন্ট, এমপাওয়ার ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন। ইউএপিএ আইনের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশের মোট ৪২টি সংগঠন এখনও নিষিদ্ধ। পিএফআই সেই তালিকার নবতম সংযোজন।

বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি শাসিত কর্ণাটক, গুজরাত ও উত্তর প্রদেশ সরকার পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল। দিল্লি (১৯ টি জায়গা), কেরল (১১ টি জায়গা), কর্ণাটক (আটটি জায়গা) অন্ধ্রপ্রদেশ (চারটি জায়গা), হায়দরাবাদ (পাঁচটি জায়গা), উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, বিহার, মণিপুর-সহ দেশের মোট ১৫ টি রাজ্যের ৯৩ টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পিএফআই-এর বহু কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গত সপ্তাহের বুধবার  কলকাতার পার্ক সার্কাসের তিলজলা রোডে পিএফআইয়ের দফতরেও তল্লাশি চালিয়েছিল এনআইএ।

অভিযোগ নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও এনআরসির বিরুদ্ধে দেশে যে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল তাতে পিএফআই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। যদিও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন এমন বহু মানুষ যাদের সঙ্গে ধর্ম বা রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এই আন্দোলনকে মুসলিমদের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেখানোর চেষ্টা হলেও সব ধর্মের মানুষই তাতে সংযুক্ত হয়েছিলেন।

কর্ণাটক হিজাব আন্দোলনের পিছনেও পিএফআই-এর ভূমিকা রয়েছে গেরুয়া দল ও সংগঠনগুলি অভিযোগ করছে। যদিও সে অভিযোগও পাকাপোক্তভাবে প্রমাণ হয়নি।

বর্তমানে হিজাব মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

উত্তরপ্রদেশে হাথরসকাণ্ডে ধৃত সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানকে গ্রেফতারের কারণ  হিসেবেও তাঁর সঙ্গে পিএফআইয়ের যোগকে সামনে এনে লাগাতার প্রচার চালানো হয়েছে। তবে তার সত্যতা নিয়ে যথেষ্ঠ আছে বলে মনে করা হয়।

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পিএফআই-কে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্র সরকার

আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্র সরকার।  মঙ্গলবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই সংগঠনকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় শুধু পিএফআই-ই নয়, তার অন্যান্য শাখা সংগঠনকেও যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ট্যুইট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত মালব্য।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি,  পিএফআই সন্ত্রাসবাদীদের নানাভাবে মদদ যোগাত। তারা মৌলবাদে বিশ্বাসী ও দেশের যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করার কাজ চালাত। যদিও পিএফআই- বরাবর বলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ সত্য নয়। আসলে তারা সংকীর্ণ গেরুয়া রাজনীতির শিকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে পিএফআই গঠিত হয়। প্রান্তিক মুসলমান সমাজের ক্ষমতায়নে সংগঠনটি কাজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।

গত এক সপ্তাহে দুবার দেশজুড়ে এই সংগঠনের বিভিন্ন অফিস ও নেতা-কর্মীদের বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের নথি পত্র সংগ্রহ করা হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, পিএফআইয়ের সঙ্গে বেআইনি ঘোষিত হয়েছে তারই শাখা সংগঠন রিহ্যাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া, অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল, ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, ন্যাশনাল উইমেনস ফ্রন্ট, এমপাওয়ার ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন। ইউএপিএ আইনের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশের মোট ৪২টি সংগঠন এখনও নিষিদ্ধ। পিএফআই সেই তালিকার নবতম সংযোজন।

বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি শাসিত কর্ণাটক, গুজরাত ও উত্তর প্রদেশ সরকার পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল। দিল্লি (১৯ টি জায়গা), কেরল (১১ টি জায়গা), কর্ণাটক (আটটি জায়গা) অন্ধ্রপ্রদেশ (চারটি জায়গা), হায়দরাবাদ (পাঁচটি জায়গা), উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, বিহার, মণিপুর-সহ দেশের মোট ১৫ টি রাজ্যের ৯৩ টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পিএফআই-এর বহু কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গত সপ্তাহের বুধবার  কলকাতার পার্ক সার্কাসের তিলজলা রোডে পিএফআইয়ের দফতরেও তল্লাশি চালিয়েছিল এনআইএ।

অভিযোগ নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও এনআরসির বিরুদ্ধে দেশে যে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল তাতে পিএফআই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। যদিও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন এমন বহু মানুষ যাদের সঙ্গে ধর্ম বা রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এই আন্দোলনকে মুসলিমদের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেখানোর চেষ্টা হলেও সব ধর্মের মানুষই তাতে সংযুক্ত হয়েছিলেন।

কর্ণাটক হিজাব আন্দোলনের পিছনেও পিএফআই-এর ভূমিকা রয়েছে গেরুয়া দল ও সংগঠনগুলি অভিযোগ করছে। যদিও সে অভিযোগও পাকাপোক্তভাবে প্রমাণ হয়নি।

বর্তমানে হিজাব মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

উত্তরপ্রদেশে হাথরসকাণ্ডে ধৃত সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানকে গ্রেফতারের কারণ  হিসেবেও তাঁর সঙ্গে পিএফআইয়ের যোগকে সামনে এনে লাগাতার প্রচার চালানো হয়েছে। তবে তার সত্যতা নিয়ে যথেষ্ঠ আছে বলে মনে করা হয়।