০৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিন্দু, মুসলিম সহ গোটা গ্রাম সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার
  • / 15

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিন্দির সঙ্গে সংস্কৃতকে জাতীয় ভাষার অন্তর্ভুক্ত করতে সোমবার, ১২ ডিসেম্বর লোকসভায় দাবি জানানো হয়। দাবি করেন হামিরপুরের বিজেপি সাংসদ কুনওয়ার পুষ্পেন্দ্র সিং চন্দেল।

পুষ্পেন্দ্র সিং চন্দেল বলেন, সকলের সংস্কৃত ব্যবহার করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিত। তবে কর্ণাটকের একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে সমস্ত লোক সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ গ্রামের মতো মনে হলেও ভেতরে গেলেই মনে হয় এটা কোনো সাধারণ গ্রাম নয়।

আরও পড়ুন: হিজাবঃ ধর্মীয় রীতি ও অনুশাসন সব থেকে বেশি মেনে চলেন হিন্দু-মুসলিমরাইঃ দাবি সমীক্ষায়

এটি দেশের প্রথম সংস্কৃত গ্রাম।এই গ্রামে গেলে অনেকটাই বৈদিক যুগের আঁচ পেতে পারেন আপনিও। দেখবেন, আপনার আশেপাশে সকলেই প্রাচীন যুগের মতো পোষাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি একে অপরের সঙ্গে কথাও বলছেন সংস্কৃতে। গ্রামের প্রত্যেকের জন্য সংস্কৃত শেখা আবশ্যক। চার হাজার জনসংখ্যার এই গ্রামে, শিশু হোক বা বৃদ্ধ, সবাই সংßৃñত ভাষায় কথা বলে। গ্রামে কোনও মদের ও আমিষের দোকান নেই।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত সহ ১৪টি কোর্স চালু, নেই আরবি, ক্ষোভ জেলার ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষা মহলে

এখানে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানরাও বসবাস করে।   মুসলমানরাও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। গ্রামের চারপাশে গড়ে উঠেছে মন্দির।  এখানকার মানুষ জাতিভেদে বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে সকল ধর্ম ও বর্ণ সমান।এটা ভারতের একমাত্র গ্রাম যেখানে এখনও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন সকলে।

কর্নাটকের সিমোগা জেলার মাত্তুর গ্রাম। তুঙ্গ নদীর ধারে এই গ্রামটির আকারও অদ্ভূত একেবারে বর্গাকার। গ্রামবাসীদের দাবি, সংস্কৃত ভাষার ব্যবহার পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং যুক্তিবোধের বিকাশ ঘটায়। এখানকার অধিকাংশ মানুষ সুপারি চাষ করে। গ্রামে ওয়াইফাই ইন্টারনেট, বিলাসবহুল যানবাহন ও বিলাসবহুল বাংলো থাকলেও পরিবেশটা গুরুকুলের মতো।

বিশেষ বিষয় হল গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একজন ইঞ্জিনিয়ার আছে। কিছু পরিবারের ছেলেরা আমেরিকা ও জার্মানিতে ডাক্তারি পড়তে গেছে বলেও জানা যায়। ৩০ জনেরও বেশি অধ্যাপক রয়েছে গ্রামে। গ্রামের মানুষ যে শুধু সংßৃñত জানে তা নয়। এখানকার মানুষ ইংরেজি ও কন্নড়ও বলতে পারে। গ্রামের সব্জি বিক্রেতা থেকে পুরোহিত, সকলেই সংস্কৃত পারদর্শী।

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে রোজকার জীবনে সংস্কৃত ভাষা, আচার-ব্যবহারের প্রয়োগ মোটেই সহজ নয়। এর শিকড় পোঁতা রয়েছে ১৯৮১ সালে প্রায় ৪০ বছর আগে মাথুরে ১০ দিনের একটি সংস্কৃত ওয়ার্কশপ চালু করে সংস্কৃতি ভারতী নামে একটি সংস্থা।

গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বরা অনেকে যোগদান করেছিলেন এই অনুষ্ঠানে। সেখান থেকেই এই ভাষার প্রতি অন্যরকম ভালবাসা তৈরি হয় গ্রামবাসীদের। তাঁরা ঠিক করেন দেশের এই বিলুপ্তপ্রায় ভাষাটিকে সযত্নে লালন করবেন তাঁরা। এরপরই গোটা গ্রামে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিন্দু, মুসলিম সহ গোটা গ্রাম সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিন্দির সঙ্গে সংস্কৃতকে জাতীয় ভাষার অন্তর্ভুক্ত করতে সোমবার, ১২ ডিসেম্বর লোকসভায় দাবি জানানো হয়। দাবি করেন হামিরপুরের বিজেপি সাংসদ কুনওয়ার পুষ্পেন্দ্র সিং চন্দেল।

পুষ্পেন্দ্র সিং চন্দেল বলেন, সকলের সংস্কৃত ব্যবহার করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিত। তবে কর্ণাটকের একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে সমস্ত লোক সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ গ্রামের মতো মনে হলেও ভেতরে গেলেই মনে হয় এটা কোনো সাধারণ গ্রাম নয়।

আরও পড়ুন: হিজাবঃ ধর্মীয় রীতি ও অনুশাসন সব থেকে বেশি মেনে চলেন হিন্দু-মুসলিমরাইঃ দাবি সমীক্ষায়

এটি দেশের প্রথম সংস্কৃত গ্রাম।এই গ্রামে গেলে অনেকটাই বৈদিক যুগের আঁচ পেতে পারেন আপনিও। দেখবেন, আপনার আশেপাশে সকলেই প্রাচীন যুগের মতো পোষাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি একে অপরের সঙ্গে কথাও বলছেন সংস্কৃতে। গ্রামের প্রত্যেকের জন্য সংস্কৃত শেখা আবশ্যক। চার হাজার জনসংখ্যার এই গ্রামে, শিশু হোক বা বৃদ্ধ, সবাই সংßৃñত ভাষায় কথা বলে। গ্রামে কোনও মদের ও আমিষের দোকান নেই।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত সহ ১৪টি কোর্স চালু, নেই আরবি, ক্ষোভ জেলার ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষা মহলে

এখানে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানরাও বসবাস করে।   মুসলমানরাও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। গ্রামের চারপাশে গড়ে উঠেছে মন্দির।  এখানকার মানুষ জাতিভেদে বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে সকল ধর্ম ও বর্ণ সমান।এটা ভারতের একমাত্র গ্রাম যেখানে এখনও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন সকলে।

কর্নাটকের সিমোগা জেলার মাত্তুর গ্রাম। তুঙ্গ নদীর ধারে এই গ্রামটির আকারও অদ্ভূত একেবারে বর্গাকার। গ্রামবাসীদের দাবি, সংস্কৃত ভাষার ব্যবহার পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং যুক্তিবোধের বিকাশ ঘটায়। এখানকার অধিকাংশ মানুষ সুপারি চাষ করে। গ্রামে ওয়াইফাই ইন্টারনেট, বিলাসবহুল যানবাহন ও বিলাসবহুল বাংলো থাকলেও পরিবেশটা গুরুকুলের মতো।

বিশেষ বিষয় হল গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একজন ইঞ্জিনিয়ার আছে। কিছু পরিবারের ছেলেরা আমেরিকা ও জার্মানিতে ডাক্তারি পড়তে গেছে বলেও জানা যায়। ৩০ জনেরও বেশি অধ্যাপক রয়েছে গ্রামে। গ্রামের মানুষ যে শুধু সংßৃñত জানে তা নয়। এখানকার মানুষ ইংরেজি ও কন্নড়ও বলতে পারে। গ্রামের সব্জি বিক্রেতা থেকে পুরোহিত, সকলেই সংস্কৃত পারদর্শী।

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে রোজকার জীবনে সংস্কৃত ভাষা, আচার-ব্যবহারের প্রয়োগ মোটেই সহজ নয়। এর শিকড় পোঁতা রয়েছে ১৯৮১ সালে প্রায় ৪০ বছর আগে মাথুরে ১০ দিনের একটি সংস্কৃত ওয়ার্কশপ চালু করে সংস্কৃতি ভারতী নামে একটি সংস্থা।

গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বরা অনেকে যোগদান করেছিলেন এই অনুষ্ঠানে। সেখান থেকেই এই ভাষার প্রতি অন্যরকম ভালবাসা তৈরি হয় গ্রামবাসীদের। তাঁরা ঠিক করেন দেশের এই বিলুপ্তপ্রায় ভাষাটিকে সযত্নে লালন করবেন তাঁরা। এরপরই গোটা গ্রামে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়।