ভেঙে ফেলা হচ্ছে অস্থায়ী মর্গ বাহানাগা স্কুল
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
- / 8
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বাহানাগা। ওড়িশার এক ছোট্ট জনপদ। এতদিন হয়তো ঠিক মতো কেউ চিনত না এই ছোট্ট গ্রাম কে। তার পর সেই অভিশপ্ত সন্ধ্যা। শুধু দেশ নয় বিশ্বব্যাপী জেনে যায় এই গ্রামের নাম। ২ জুন শুক্রবার হঠাৎ’ই (নেপথ্য কারণ নিয়ে ধন্দ এখনও কাটেনি) লাইনচ্যুত হয় শালিমার চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিকে। দুর্ঘটনার অকুস্থল ছিল বাহানাগা স্টেশন বাজার। ঘটনার পর পরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ। তিনটি ট্রেনের এই সংঘর্ষে শুরু হয়ে মৃত্যু মিছিল। শহর ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকায় নিকটবর্তী বাহানাগা স্কুলকে বানানো হয় অস্থায়ী মর্গ।
সূত্রের খবর, এবার ভেঙে ফেলা হচ্ছে ওই স্কুল। শুক্রবার রাত থেকেই একে একে উদ্ধার হতে থাকে মৃত দেহ। কেউ চাপা পড়ে ট্রেনের সিটের নিচে, কারও দেহ থেকে আলাদা হয়ে আছে মাথা। রক্তে ভিজে যাওয়া শরীর গুলিকে সাদা কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়েছিল ওই স্কুলের ঘরে। পরে একে একে দেহ নিয়ে যায় পরিবার। এসি ব্যবস্থা না থাকায় পচন ধরতে শুরু করে দেহে, শণাক্ত না হওয়া দেহগুলিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়াও হয়। উদ্ধারকার্য শেষে স্কুলঘর পরিষ্কার করা হয়েছিল। কারণ সেখানেই আবার বসবে ক্লাসঘর। সামনে বোর্ড, তাতে চক দিয়ে লিখবেন শিক্ষক। পড়া বুঝবে সামনে বসে থাকা পড়ুয়া।
অভিভাবকদের অনেকেই জানিয়েছিলেন, স্কুলটিকে যখন মর্গ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল, তখন তাঁরা যে সব দৃশ্য দেখেছেন, তার পর ছেলেমেয়েদের সেখানে পড়তে পাঠাতে তাঁদের আর মন চাইছে না। নানা রকম অলৌকিক গল্পও ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। তার পরই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চলা এই স্কুলে বর্তমানে ৫৬৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। বালেশ্বরের জেলাশাসক অভিভাবকদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসেছিলেন বলেও খবর সূত্রের। জানা গিয়েছে তাঁদের দাবি মেনে নিয়েই পুরনো স্কুলভবনের পরিবর্তে তৈরি হবে নতুন স্কুল।