বারুইপুর জেলে চার মুসলিম যুবকের রহস্যমৃত্যু

- আপডেট : ৭ ডিসেম্বর ২০২২, বুধবার
- / 11
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ ও আগস্ট মাসের প্রথম দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর সংশোধনাগরের চার বন্দিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তাদের কিছু না বলেই পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে মিথ্যা কেস দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, জেলের মধ্যে অকথ্য অত্যাচার করার পর মেরে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সেই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয় সেই সংগঠন। এবার তারই শুনানি শুরু হল কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার ছিল প্রথম শুনানি। তাতে আদালতের কাছে ঘটনার বিষয়ে জবাব দিতে সময় চেয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এপিডিআর-এর দায়ের করা মামলার শুনানি হয়। মামলাকারী সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, পুলিশ চার বন্দিকে খুন করেছে। চিকিৎসা পরিষেবাও দেওয়া হয়নি। এপিডিআর-এর করা সেই মামলার প্রেক্ষিতে সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করে আদালত। এজন্য সরকারপক্ষ সময় চেয়েছে। রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা, গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। তাই সময় লাগবে।
দুই পক্ষের কথা শুনে আদালত সরকারের আর্জি মঞ্জুর করেছে। কলকাতা হাইকোর্ট এ দিন রাজ্য প্রশাসনকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা করতে বলেছে বলে জানান মামলাকারী সংগঠনের আইনজীবী। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি।
যে চারজন জেল হেফাজতে মারা যান তাঁরা হলেন, আব্দুর রাজ্জাক দেওয়ান (৩৪), জিয়াউল লস্কর (৩৬), আকবর খান (৪০) এবং সাইদুল মুন্সি (৩৪)। এ নিয়ে এপিডিআর একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টও প্রকাশ করেছিল।
তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, মৃতদের প্রত্যেকের সারা গায়ে বীভৎস মার ও কালশিটের দাগ ছিল। ধৃতরা পুলিশি অত্যাচারেই মারা গিয়েছিল বলেই দাবি পরিবার ও মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর।
প্রসঙ্গত, মৃত আবদুর রাজ্জাক দেওয়ানের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর থানার অন্তর্গত দক্ষিণ সাহাপুর গ্রামে। তিনি পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে বিহারে থাকতেন।
এবারের ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন। তারপর পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে, আর এক মৃত জিয়াউল লস্করের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার ঘুঁটিয়ারি শরীফের সুভাষপল্লী গ্রামে। জেলে মৃত তৃতীয় ব্যক্তির নাম সাইদুল মুন্সি। তার বাড়ি একই জেলার মহেশতলার সন্তোষপুর।
একইভাবে চতুর্থজন আকবর খানের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার আমতলায়। সবার পরিবারই দাবি করেছে, পুলিশ সবাইকে পৃথক পৃথকভাবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। মিথ্যা মামলায় সবার জেল হেফাজত হয়। তারপর জেলেই মারা যান সবাই।