০৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রুশ হামলায় রুখতে আর ইউরোপকে সামরিক সাহায্য দেবে না ট্রাম্প সরকার

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার
  • / 335

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে রাশিয়ার প্রতিবেশী কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা নিরাপত্তা সহায়তা কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। বিশেষ করে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ার মতো বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো এই সহায়তার উপর নির্ভরশীল ছিল। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছিল। এখন বলা হচ্ছে, চলতি অর্থবছরের পর নতুন কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

এই সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় মিত্ররা অস্বস্তিতে পড়েছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়নি বলে অনেক দেশ বিভ্রান্ত অবস্থায় রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, কয়েকশো মিলিয়ন ডলার মূল্যের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে ন্যাটোর পূর্ব সীমান্ত দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, এতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি অনেকটা কমে যাবে এবং মস্কো আরও আগ্রাসী হতে পারে।

আরও পড়ুন: এবার ওষুধের উপর ১০০% শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের, বিপাকে ভারতীয় ওষুধ রফতানিকারকরা 

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ধারাবাহিকতা বলছেন। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইউরোপ নিজের নিরাপত্তার দায়ভার বেশি করে নিক এবং মার্কিন করদাতার অর্থ ব্যয়ে বিদেশি প্রতিরক্ষা নির্ভরতা কমুক। তবে কংগ্রেসের একাধিক আইনপ্রণেতা এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, মার্কিন সহায়তা কমে গেলে শুধু ইউরোপ নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন;স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে ইউক্রেনের মাটিতে পা রাখলে পশ্চিমা সেনাদেরও রুশ হামলার মুখে পড়তে হবে। ফলে ওয়াশিংটনের অবস্থানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা শুরু করেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, ২৬টি দেশ মিলে একটি সহায়তা বাহিনী গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সফর শেষে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে Britain

তবে এই প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুক্ত হবে কি না, তার কোনও আশ্বাস দেননি ট্রাম্প। বরং পুতিনের হুঁশিয়ারির পরই ওয়াশিংটন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে; রাশিয়া-বিরোধী সামরিক তৎপরতায় সামিল হবে না আমেরিকা। ফলে ইউক্রেনকে রক্ষায় ইউরোপকেই এখন বিকল্প কৌশল খুঁজে নিতে হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রুশ হামলায় রুখতে আর ইউরোপকে সামরিক সাহায্য দেবে না ট্রাম্প সরকার

আপডেট : ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে রাশিয়ার প্রতিবেশী কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা নিরাপত্তা সহায়তা কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। বিশেষ করে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ার মতো বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো এই সহায়তার উপর নির্ভরশীল ছিল। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছিল। এখন বলা হচ্ছে, চলতি অর্থবছরের পর নতুন কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

এই সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় মিত্ররা অস্বস্তিতে পড়েছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়নি বলে অনেক দেশ বিভ্রান্ত অবস্থায় রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, কয়েকশো মিলিয়ন ডলার মূল্যের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে ন্যাটোর পূর্ব সীমান্ত দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, এতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি অনেকটা কমে যাবে এবং মস্কো আরও আগ্রাসী হতে পারে।

আরও পড়ুন: এবার ওষুধের উপর ১০০% শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের, বিপাকে ভারতীয় ওষুধ রফতানিকারকরা 

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ধারাবাহিকতা বলছেন। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইউরোপ নিজের নিরাপত্তার দায়ভার বেশি করে নিক এবং মার্কিন করদাতার অর্থ ব্যয়ে বিদেশি প্রতিরক্ষা নির্ভরতা কমুক। তবে কংগ্রেসের একাধিক আইনপ্রণেতা এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, মার্কিন সহায়তা কমে গেলে শুধু ইউরোপ নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন;স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে ইউক্রেনের মাটিতে পা রাখলে পশ্চিমা সেনাদেরও রুশ হামলার মুখে পড়তে হবে। ফলে ওয়াশিংটনের অবস্থানকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা শুরু করেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, ২৬টি দেশ মিলে একটি সহায়তা বাহিনী গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সফর শেষে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে Britain

তবে এই প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুক্ত হবে কি না, তার কোনও আশ্বাস দেননি ট্রাম্প। বরং পুতিনের হুঁশিয়ারির পরই ওয়াশিংটন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে; রাশিয়া-বিরোধী সামরিক তৎপরতায় সামিল হবে না আমেরিকা। ফলে ইউক্রেনকে রক্ষায় ইউরোপকেই এখন বিকল্প কৌশল খুঁজে নিতে হবে।