২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ প্রশংসিত, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সন্ত্রাসবাদ!

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৮ মে ২০২২, রবিবার
  • / 156

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ এটাই পশ্চিমা বিশ্বের দ্বৈত মাণদণ্ড। একই চোখে দুই দেশের সমান ঘটনাকে আলাদা ভাবে দেখতে তারা পারদর্শী। অথচ দুই দেশেই কিন্তু ভুগছে সাধারণ মানুষ। তবুও পশ্চিমারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধকে সন্ত্রাস হিসাবে উল্লেখ করছে। এদিকে, রাশিয়ার বিরুদ্ধ ইউক্রেনীদের প্রতিরোধকে বৈধতা দিচ্ছে বহু দেশ ও সংস্থা। রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ৭৫ দিন ধরে চলছে ইউক্রেনীয়দের যুদ্ধ। এতে সেনাদের পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ বিশ্বের মানুষের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ তাহলে কেন নিন্দার চোখে দেখা হয়?  আড়াই মাসের এ যুদ্ধে ইউক্রেন বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন পাচ্ছে। রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে পশ্চিমারা অস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে। সেনার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেথে সাধারণ মানুষ। ইউক্রেনীয়রা নিজেদের বানানো মোলোটভ ককটেল দিয়ে রুশ বাহিনীর ওপর হামলা করছে। কোথাও কোথাও নারীরা হাতে তুলে নিয়েছেন নানা ধরনের হালকা অস্ত্র। তাদের সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার কথা শত মুখে তুলে ধরা হচ্ছে বিশ্ব মিডিয়াতে। একই সাথে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে হামলাকারী রাষ্ট্র রাশিয়ার। কিন্তু একই চিত্র যখন দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনি ভূমিতে, তখনই পরিস্থিতি ও বয়ান বদলে যাচ্ছে। গণমাধ্যম কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় দখলদার ইসরাইলের বিপক্ষে বলতে রাজি নয় কেউই। উল্টো পঙ্গু যুবক, হিজাবি নারী বা শিশু- যারা ভিটেমাটি রক্ষার্থে সামান্য পাথর নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে, তারা হয়ে যাচ্ছে খলনায়ক! ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের মোলোটভ ককটেল তৈরি যেভাবে প্রশংসিত হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের একই কার্যক্রম নানা ধরনের বিধি নিষেধের শিকার হয়ে সবার অগোচরেই হারিয়ে যাচ্ছে। কোথাও কেউ ফিলিস্তিনিদের প্রশংসা করলে অনলাইন-অফলাইনে কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে। রাশিয়াকে ঠেকাতে নানা দেশ থেকে ইউক্রেনে আসছে ভাড়াটে যোদ্ধা। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে কেউ দাঁড়ালেই সেটা সন্ত্রাস! প্রতিদিন রাশিয়ার হামলার নিন্দা করছেন রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইউক্রেনের জন্য সংহতি, তহবিল সংগ্রহ ও সমর্থন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের ওপর নিপীড়নের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আশ্চর্যজনকভাবে বিপরীত। ইউক্রেনীয়রা তাদের মাতৃভূমি রক্ষার্থে অস্ত্র তুলেছে হাতে। পশ্চিমা মিডিয়া তাদের প্রশংসায় ভাসছে। অথচ ফিলিস্তিনি, সোমালি, ইয়েমেনি ও আফগানরা যখন একইভাবে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল তখন তাদর সন্ত্রাসী হিসাবে তুলে ধরেছিল ডলার-পাউন্ড চালিত ধনী মিডিয়া। এটাই পশ্চিমাদের ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’।

আরও পড়ুন: ‘গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ভারত সরকারকেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে’, দাবি বামপন্থীদের

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ প্রশংসিত, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সন্ত্রাসবাদ!

আপডেট : ৮ মে ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ এটাই পশ্চিমা বিশ্বের দ্বৈত মাণদণ্ড। একই চোখে দুই দেশের সমান ঘটনাকে আলাদা ভাবে দেখতে তারা পারদর্শী। অথচ দুই দেশেই কিন্তু ভুগছে সাধারণ মানুষ। তবুও পশ্চিমারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধকে সন্ত্রাস হিসাবে উল্লেখ করছে। এদিকে, রাশিয়ার বিরুদ্ধ ইউক্রেনীদের প্রতিরোধকে বৈধতা দিচ্ছে বহু দেশ ও সংস্থা। রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ৭৫ দিন ধরে চলছে ইউক্রেনীয়দের যুদ্ধ। এতে সেনাদের পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ বিশ্বের মানুষের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ তাহলে কেন নিন্দার চোখে দেখা হয়?  আড়াই মাসের এ যুদ্ধে ইউক্রেন বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন পাচ্ছে। রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে পশ্চিমারা অস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে। সেনার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেথে সাধারণ মানুষ। ইউক্রেনীয়রা নিজেদের বানানো মোলোটভ ককটেল দিয়ে রুশ বাহিনীর ওপর হামলা করছে। কোথাও কোথাও নারীরা হাতে তুলে নিয়েছেন নানা ধরনের হালকা অস্ত্র। তাদের সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার কথা শত মুখে তুলে ধরা হচ্ছে বিশ্ব মিডিয়াতে। একই সাথে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে হামলাকারী রাষ্ট্র রাশিয়ার। কিন্তু একই চিত্র যখন দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনি ভূমিতে, তখনই পরিস্থিতি ও বয়ান বদলে যাচ্ছে। গণমাধ্যম কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় দখলদার ইসরাইলের বিপক্ষে বলতে রাজি নয় কেউই। উল্টো পঙ্গু যুবক, হিজাবি নারী বা শিশু- যারা ভিটেমাটি রক্ষার্থে সামান্য পাথর নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে, তারা হয়ে যাচ্ছে খলনায়ক! ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের মোলোটভ ককটেল তৈরি যেভাবে প্রশংসিত হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের একই কার্যক্রম নানা ধরনের বিধি নিষেধের শিকার হয়ে সবার অগোচরেই হারিয়ে যাচ্ছে। কোথাও কেউ ফিলিস্তিনিদের প্রশংসা করলে অনলাইন-অফলাইনে কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে। রাশিয়াকে ঠেকাতে নানা দেশ থেকে ইউক্রেনে আসছে ভাড়াটে যোদ্ধা। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে কেউ দাঁড়ালেই সেটা সন্ত্রাস! প্রতিদিন রাশিয়ার হামলার নিন্দা করছেন রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইউক্রেনের জন্য সংহতি, তহবিল সংগ্রহ ও সমর্থন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের ওপর নিপীড়নের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আশ্চর্যজনকভাবে বিপরীত। ইউক্রেনীয়রা তাদের মাতৃভূমি রক্ষার্থে অস্ত্র তুলেছে হাতে। পশ্চিমা মিডিয়া তাদের প্রশংসায় ভাসছে। অথচ ফিলিস্তিনি, সোমালি, ইয়েমেনি ও আফগানরা যখন একইভাবে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল তখন তাদর সন্ত্রাসী হিসাবে তুলে ধরেছিল ডলার-পাউন্ড চালিত ধনী মিডিয়া। এটাই পশ্চিমাদের ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’।

আরও পড়ুন: ‘গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ভারত সরকারকেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে’, দাবি বামপন্থীদের