০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনন্য কীর্তি: বাস চালকের মেয়ে সানা আলি ইসরোর ইঞ্জিনিয়ার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৬ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার
  • / 11

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘স্বপ্ন সেটা নয় যা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যা প্রত্যাশা পূরণের জন্য ঘুমতে দেয় না।’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এপিজে আবদুল কালামের এই উক্তিকে বাস্তব করে দেখালেন সানা আলী। প্রবল আর্থিক অনটন, তাঁর স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ûনি। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন। বাস চালকের মেয়ে সানা। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলায়। বরাবরই মেধাবী। বর্তমানে তাঁর কর্মস্থল অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার।

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সানার এই সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যে গুণগুলি থাকলে একজন নিজের স্বপ্নকে ছুঁতে পারেন, তার সবকটিই সানার রয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, তীব্র আত্মবিশ্বাস এবং দায়িত্বশীলতা দিয়ে তিনি স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন। নিজের সৌভাগ্য নিয়ে এসেছেন হাতে মুঠোয়। আর্থিক সংকটকে হার মানিয়েছেন আপন দক্ষতা দিয়ে।

বাবার টাকা ছিল না। কিন্তু সন্তানকে পড়ানোর জেদ ছিল। সানা তাঁর মেধা এবং দায়বদ্ধতা দিয়ে আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। ফলে মেয়েকে নিয়া বাবার মনের ভিতরের আসার আলো ধিক ধিক করে জ্বলছিল। তিনি জানতেন মেয়ে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে একদিন সে বড় মানুষ হবে। কিন্তু মেয়ে যে এমন সম্মানের আসন অধিকার করবে তা তিনি কল্পনা করেননি।

সম্রাট অশোক টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তার বি টেক এবং এমটেক করেন সানা। মেয়ের স্বপ্নকে বাস্তব করতে বাবা সৈয়দ সাজিদ আলী ঋণ করেছিলেন। মা বন্ধক দিয়েছিলেন গহনা। তখন পড়শিরা অনেকেই বলেছিল, এইভাবে মেয়ের পিছনে সব টাকা উড়িয়ে দিও না। কিন্তু কান দেননি সানার বাবা-মা। মেয়ের মেধার ওপর আস্থা রেখেছিলেন তাঁরা। দিন কেটেছিল দুশ্চিন্তায়। কিন্তু মেয়ের কাছে তা বুঝতে দেননি। পড়শিরা অনেকেই বলত, অনেক লেখা পড়া তো হল। এবার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দাও।’ তাঁরা চুপ করে থাকতেন মেয়ের সাফল্যের অপেক্ষায়।

এমন সাফল্যের অনুভূতি প্রসঙ্গে সানা বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে । সব মেয়েদের বলব, যে কোন মূল্যে শিক্ষিত হতে হবে। জীবনে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তা অর্জনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। দেখবেন জীবনের পথে আসা সব ব্যার্থতা কেটে যাবে। তাঁর জন্য আপনাদের কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে।

২০২২ এ সানা আলি গোয়ালিয়রের ইঞ্জিনিয়ার আকরামাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কাছ থেকে তিনি পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন বলে জানান সানা। বাবা-মার মতোই আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও আমাকে পড়াশোনা ও চাকরিতে অত্যন্ত সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন সানা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অনন্য কীর্তি: বাস চালকের মেয়ে সানা আলি ইসরোর ইঞ্জিনিয়ার

আপডেট : ১৬ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘স্বপ্ন সেটা নয় যা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যা প্রত্যাশা পূরণের জন্য ঘুমতে দেয় না।’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এপিজে আবদুল কালামের এই উক্তিকে বাস্তব করে দেখালেন সানা আলী। প্রবল আর্থিক অনটন, তাঁর স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ûনি। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন। বাস চালকের মেয়ে সানা। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলায়। বরাবরই মেধাবী। বর্তমানে তাঁর কর্মস্থল অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার।

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সানার এই সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যে গুণগুলি থাকলে একজন নিজের স্বপ্নকে ছুঁতে পারেন, তার সবকটিই সানার রয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, তীব্র আত্মবিশ্বাস এবং দায়িত্বশীলতা দিয়ে তিনি স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন। নিজের সৌভাগ্য নিয়ে এসেছেন হাতে মুঠোয়। আর্থিক সংকটকে হার মানিয়েছেন আপন দক্ষতা দিয়ে।

বাবার টাকা ছিল না। কিন্তু সন্তানকে পড়ানোর জেদ ছিল। সানা তাঁর মেধা এবং দায়বদ্ধতা দিয়ে আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। ফলে মেয়েকে নিয়া বাবার মনের ভিতরের আসার আলো ধিক ধিক করে জ্বলছিল। তিনি জানতেন মেয়ে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে একদিন সে বড় মানুষ হবে। কিন্তু মেয়ে যে এমন সম্মানের আসন অধিকার করবে তা তিনি কল্পনা করেননি।

সম্রাট অশোক টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তার বি টেক এবং এমটেক করেন সানা। মেয়ের স্বপ্নকে বাস্তব করতে বাবা সৈয়দ সাজিদ আলী ঋণ করেছিলেন। মা বন্ধক দিয়েছিলেন গহনা। তখন পড়শিরা অনেকেই বলেছিল, এইভাবে মেয়ের পিছনে সব টাকা উড়িয়ে দিও না। কিন্তু কান দেননি সানার বাবা-মা। মেয়ের মেধার ওপর আস্থা রেখেছিলেন তাঁরা। দিন কেটেছিল দুশ্চিন্তায়। কিন্তু মেয়ের কাছে তা বুঝতে দেননি। পড়শিরা অনেকেই বলত, অনেক লেখা পড়া তো হল। এবার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দাও।’ তাঁরা চুপ করে থাকতেন মেয়ের সাফল্যের অপেক্ষায়।

এমন সাফল্যের অনুভূতি প্রসঙ্গে সানা বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে । সব মেয়েদের বলব, যে কোন মূল্যে শিক্ষিত হতে হবে। জীবনে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তা অর্জনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। দেখবেন জীবনের পথে আসা সব ব্যার্থতা কেটে যাবে। তাঁর জন্য আপনাদের কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে।

২০২২ এ সানা আলি গোয়ালিয়রের ইঞ্জিনিয়ার আকরামাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কাছ থেকে তিনি পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন বলে জানান সানা। বাবা-মার মতোই আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও আমাকে পড়াশোনা ও চাকরিতে অত্যন্ত সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন সানা।