০৭ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার উপায়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার
  • / 269

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: হাতে এক টুকরো মুঠোফোন এখন হীরের চেয়েও দামি। বর্তমান জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ফোন। একে ছাড়া জগৎ-সংসার সব কিছুই যেন অন্ধকার। চিন্তা, ভাবনা, অভিব্যক্তির প্রকাশ এখন এই মুঠোফোনেই বন্দি। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাব বিনিময় এখন আর মুখোমুখি হয় না, সবই মোবাইলের সোশ্যাল সাইটে। ডিজিটাল যুগে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে মানুষও। যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ছে শরীরে, মনে, সমাজ, সভ্যতায়।

ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত মুঠোফোন যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় এই ফোন। মোবাইলের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের পরিণতি খুব খারাপ হতে পারে। এর প্রভাব যেমন চোখের উপর পড়ে, তেমনি পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যেও। এমনকি হারিয়ে যেতে পারে আপনার দৃষ্টিশক্তিও। তাই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি মানতে  হবে বেশকিছু নিয়ম, যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নিই মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে কার্যকরী উপায়গুলো।

২০-২০-২০ নিয়মটি মেনে চলুন

প্রতি ২০ মিনিট পরপর স্ক্রিন ছেড়ে চোখ সরাতে হবে অন্তত ২০ ফুট দূরে থাকা কোনও জিনিসের দিকে। আর কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সেই জিনিসটির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এই নিয়মকে ২০-২০-২০ নিয়ম বলে।

ডার্ক মোড ব্যবহার করুন

মোবাইল ব্যবহারের সময় ডার্ক মোড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে সকল মোবাইলেই ডার্ক মোড অপশনটি রয়েছে। এটি ব্লু রশ্মির প্রভাব অনেক কমিয়ে দেয়। এর ফলে চোখের উপর চাপ অনেকটা কম পড়ে। চোখ ভালো রাখতে মোবাইলের ডার্ক মোড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন  বিশেষজ্ঞরা।

ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচারটি ব্যবহার করুন

বর্তমানে প্রায় সকল মোবাইলেই ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচার আছে। এই ফিচারটি ব্যবহার করে স্ক্রিন টাইম অনেকটাই কমানো সম্ভব। এই ফিচার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার মাঝখানে বিরতির কাজ করবে।

লেখা আকারে বড় হবে

মোবাইলের স্ক্রিন তুলনামূলক ছোট। ফলে সেই স্ক্রিনে লেখাও যদি ছোট হয়, তাহলে চোখের উপর এটি বেশ চাপ তৈরি করে। তাই লেখার আকার বড় রাখুন। মোবাইলের সেটিংস অপশন থেকে সুবিধা মত লেখার আকার নির্ধারণ করতে পারবেন। এতে মোবাইলের মেসেজ পড়তে এবং অন্য কাজেও সুবিধা হবে।

স্ক্রিন পরিষ্কার রাখুন

মোবাইলের স্ক্রিন পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে চোখের উপর কম চাপ পড়ে। একটি পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে স্ক্রিন পরিষ্কার করতে পারেন। তবে পানি বা সাবান ব্যবহার করবেন না।

ফোনের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার আরও অনেক কারণ রয়েছে সেগুলি হল

১) ফোন ব্যবহারের সময় কিছুক্ষণ ছাড়া ছাড়া  চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দেওয়া। বাইরে থেকে এসে অথবা কম্পিউটারে বসে একটানা কাজ করার ফাঁকে চোখে পানির ঝাপটা দিন। এই কাজটাকে অভ্যাসে বদলে ফেলুন।

২) বিছানায় শুয়ে মোবাইল দেখার অভ্যাস থাকলে এখুনি বদলে ফেলুন। কারণ, শুয়ে মোবাইল দেখলে চোখের সঙ্গে দূরত্ব সমান থাকে না। চোখের পেশিগুলির উপরেও চাপ পড়ে। বেশিদিন এই অভ্যাস বজায় রাখলে প্রভাব পড়ে চোখে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে। হতে পারে মাথা ব্যথাও। তাই মোবাইল দেখুন বসে। শুয়ে শুয়ে একেবারেই নয়।

৩) বাসে ট্রেনে যাতায়াত করার সময় যতটা সম্ভব চোখ মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। কারণ এই সময় বাসের ঝাঁকুনির সময় মোবাইল দেখলে চোখের উপর প্রভাব পড়তে পারে। চেষ্টা করুন খুব প্রয়োজন না হলে এই সময়টুকু মোবাইল না দেখার। এতে চোখের ক্ষতি অনেকটাই কমবে।

এই নিয়মগুলো ঠিকমত মেনে চললে চোখের উপর ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব কমে যাবে অনেকটাই। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার উপায়

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: হাতে এক টুকরো মুঠোফোন এখন হীরের চেয়েও দামি। বর্তমান জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ফোন। একে ছাড়া জগৎ-সংসার সব কিছুই যেন অন্ধকার। চিন্তা, ভাবনা, অভিব্যক্তির প্রকাশ এখন এই মুঠোফোনেই বন্দি। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাব বিনিময় এখন আর মুখোমুখি হয় না, সবই মোবাইলের সোশ্যাল সাইটে। ডিজিটাল যুগে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে মানুষও। যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ছে শরীরে, মনে, সমাজ, সভ্যতায়।

ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত মুঠোফোন যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় এই ফোন। মোবাইলের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের পরিণতি খুব খারাপ হতে পারে। এর প্রভাব যেমন চোখের উপর পড়ে, তেমনি পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যেও। এমনকি হারিয়ে যেতে পারে আপনার দৃষ্টিশক্তিও। তাই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি মানতে  হবে বেশকিছু নিয়ম, যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নিই মোবাইলের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে কার্যকরী উপায়গুলো।

২০-২০-২০ নিয়মটি মেনে চলুন

প্রতি ২০ মিনিট পরপর স্ক্রিন ছেড়ে চোখ সরাতে হবে অন্তত ২০ ফুট দূরে থাকা কোনও জিনিসের দিকে। আর কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সেই জিনিসটির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এই নিয়মকে ২০-২০-২০ নিয়ম বলে।

ডার্ক মোড ব্যবহার করুন

মোবাইল ব্যবহারের সময় ডার্ক মোড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে সকল মোবাইলেই ডার্ক মোড অপশনটি রয়েছে। এটি ব্লু রশ্মির প্রভাব অনেক কমিয়ে দেয়। এর ফলে চোখের উপর চাপ অনেকটা কম পড়ে। চোখ ভালো রাখতে মোবাইলের ডার্ক মোড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন  বিশেষজ্ঞরা।

ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচারটি ব্যবহার করুন

বর্তমানে প্রায় সকল মোবাইলেই ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচার আছে। এই ফিচারটি ব্যবহার করে স্ক্রিন টাইম অনেকটাই কমানো সম্ভব। এই ফিচার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার মাঝখানে বিরতির কাজ করবে।

লেখা আকারে বড় হবে

মোবাইলের স্ক্রিন তুলনামূলক ছোট। ফলে সেই স্ক্রিনে লেখাও যদি ছোট হয়, তাহলে চোখের উপর এটি বেশ চাপ তৈরি করে। তাই লেখার আকার বড় রাখুন। মোবাইলের সেটিংস অপশন থেকে সুবিধা মত লেখার আকার নির্ধারণ করতে পারবেন। এতে মোবাইলের মেসেজ পড়তে এবং অন্য কাজেও সুবিধা হবে।

স্ক্রিন পরিষ্কার রাখুন

মোবাইলের স্ক্রিন পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে চোখের উপর কম চাপ পড়ে। একটি পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে স্ক্রিন পরিষ্কার করতে পারেন। তবে পানি বা সাবান ব্যবহার করবেন না।

ফোনের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচার আরও অনেক কারণ রয়েছে সেগুলি হল

১) ফোন ব্যবহারের সময় কিছুক্ষণ ছাড়া ছাড়া  চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দেওয়া। বাইরে থেকে এসে অথবা কম্পিউটারে বসে একটানা কাজ করার ফাঁকে চোখে পানির ঝাপটা দিন। এই কাজটাকে অভ্যাসে বদলে ফেলুন।

২) বিছানায় শুয়ে মোবাইল দেখার অভ্যাস থাকলে এখুনি বদলে ফেলুন। কারণ, শুয়ে মোবাইল দেখলে চোখের সঙ্গে দূরত্ব সমান থাকে না। চোখের পেশিগুলির উপরেও চাপ পড়ে। বেশিদিন এই অভ্যাস বজায় রাখলে প্রভাব পড়ে চোখে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে। হতে পারে মাথা ব্যথাও। তাই মোবাইল দেখুন বসে। শুয়ে শুয়ে একেবারেই নয়।

৩) বাসে ট্রেনে যাতায়াত করার সময় যতটা সম্ভব চোখ মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। কারণ এই সময় বাসের ঝাঁকুনির সময় মোবাইল দেখলে চোখের উপর প্রভাব পড়তে পারে। চেষ্টা করুন খুব প্রয়োজন না হলে এই সময়টুকু মোবাইল না দেখার। এতে চোখের ক্ষতি অনেকটাই কমবে।

এই নিয়মগুলো ঠিকমত মেনে চললে চোখের উপর ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব কমে যাবে অনেকটাই। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।